তাঁর নাম কেন ব্যবহার করা হল এই হত্যাকাণ্ডের অর্থ লেনদেনে? উঠছে একের পর এক প্রশ্ন।
সোনম-রাজা (ফাইল ছবি)
শেষ আপডেট: 12 June 2025 06:39
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রাজা রঘুবংশী খুনের তদন্ত গোটাতে শুরু করেছে পুলিশ। রিমান্ডে নিয়ে সোনম-সহ বাকি অভিযুক্তদের জেরা চলছে। আর তাতেই প্রতিদিন উঠে আসছে একাধিক বিস্ফোরক তথ্য। গতকাল অর্থাৎ বুধবার সোনমের ভাই গোবিন্দ রঘুবংশী বোনকে এই খুনের ঘটনায় সরাসরি অভিযুক্ত করেন। এবার এই ঘটনায় উঠে এল আরেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। সামনে আসছে জিতেন্দ্র রঘুবংশী বলে একজনের নাম। তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে নাকি খুনিদের প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া হয়।
কে এই জিতেন্দ্র? কেনই বা তাঁর নাম ব্যবহার করা হল এই হত্যাকাণ্ডের অর্থ লেনদেনে? উঠছে একের পর এক প্রশ্ন।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২৩ মে, যেদিন মেঘালয়ের পাহাড়ি পথে খুন হন রাজা রঘুবংশী, সেদিনই ওই অ্যাকাউন্ট থেকে ভাড়াটে খুনিদের টাকা পাঠানো হয়। খোদ সোনমের ভাই গোবিন্দ রঘুবংশী স্বীকার করেছেন, তিনি জিতেন্দ্রকে চেনেন। এই ব্যক্তি যাকে নিয়ে এত প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তিনি সোনমেরই আত্মীয়।
গোবিন্দ রঘুবংশী অর্থাৎ সোনমের দাদা জানিয়েছেন, এই জিতেন্দ্র তাঁদের মামাতো ভাই। তবে তিনি এই ঘটনায় যুক্ত নন। সোনম নিজের নামে না খুলে জিতেন্দ্র নামে অ্যাকাউন্ট খুলে সেখান থেকে টাকা লেনদেন করেছেন।
কিন্তু কেন?
গোবিন্দর ব্যাখ্যা, 'জিতেন্দ্র আমাদের পারিবারিক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। গুদামে মাল ওঠানো-নামানোর কাজ দেখে। ওই অ্যাকাউন্টে আমাদের ব্যবসারই টাকা থাকত, যা দিয়ে ছোটখাটো খরচ চালানো হত। ওর অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু হাওলার মতো কোনও অবৈধ লেনদেনের সঙ্গে আমাদের কোনও যোগ নেই।'
গোবিন্দ যা বলছেন, তাই যে পুরোপুরি বিশ্বাস করে নিচ্ছেন তদন্তকারীরা এমন নয়। কারণ জিতেন্দ্র যোগ ভাবাচ্ছে তাঁদের। আধিকারিকদের সন্দেহ, জিতেন্দ্রকে হয় ব্যবহার করা হয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবে, নয়তো তিনি পুরো বিষয়টি জানতেন। কিন্তু প্রতিবাদ করেননি। এই সবই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।
এদিকে এই ঘটনা সামনে আসার পর সোনমের পরিবারও প্রকাশ্যে জানিয়েছে তাঁরা মেয়ের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখতে চান না। ভাই গোবিন্দ বলেন, 'আমি গাজিপুরে গিয়ে সোনমের সঙ্গে দু’মিনিট কথা বলেছিলাম। ওর চোখেমুখের ভাবেই বুঝে গিয়েছিলাম, খুনটা ও-ই করেছে। আমরা ওর সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন করেছি।' তাঁর আরও দাবি, 'রাজা আমার জামাইবাবু ছিল। আমরা ওর পরিবারের পাশে আছি। ওদের ন্যায়ের লড়াইয়ে আমরা পাশে থাকব।'
মেঘালয় পুলিশ জানাচ্ছে, খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র, একটি মাচেটি পাওয়া গেছে রাজার দেহের কাছেই। সন্দেহ করা হচ্ছে, গুয়াহাটি থেকে সেটি কিনেছিলেন সোনম ও রাজা। যদিও কেনা হয়েছিল আদৌ ফটোশ্যুটের জন্য, নাকি আগেই ছিল খুনের ছক, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
এই প্রশ্নের উত্তর পেতে আপাতত মরিয়া মেঘালয় পুলিশ। সূত্রের খবর, জিতেন্দ্রকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হতে পারে। যদি জানা যায়, তিনি জানতেন টাকা খুনে ব্যবহৃত হবে, তাহলে এই মামলায় ষষ্ঠ অভিযুক্ত হিসেবে তাঁর নাম জুড়তে খুব বেশি দেরি নেই।