শেষ আপডেট: 17th April 2024 12:48
দ্য ওয়াল ব্যুরো: রামনবমীতে আজ প্রথম সূর্যাভিষেক হবে রামলালার। অযোধ্যার রামমন্দিরে আজ সাজো সাজো রব। ভোর থেকে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। সম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে রামলালার কপালে সূর্যতিলক এঁকে দেবেন বিজ্ঞানীরা। সূর্যকিরণ গর্ভগৃহে ঢুকে রামলালার কপাল আলো করবে।
গর্ভগৃহে সূর্যের প্রথম কিরণ ঢুকে রামলালার মুখে পড়বে। বৈজ্ঞানিক উপায়ে রামমন্দিরে রামলালার কপালে ‘সূর্য তিলক’ বসাবেন বিজ্ঞানীরা। প্রতি বছর রামনবমীর দুপুরে সূর্যের আলোর একটি রশ্মি সরাসরি রামলালার মূর্তির কপালে এসে পড়বে। সেখান থেকে প্রতিফলিত হয়ে গোটা মন্দির আলোয় আলোয় ভরিয়ে দেবে।
রুরকির সেন্ট্রাল বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা বিশেষ এক ধরনের লেন্স ও আয়না তৈরি করেছেন যা মন্দিরের কাঠামোর সঙ্গে জোড়া হয়েছে। সূর্যরশ্মির মন্দিরর গায়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই আয়না ও লেন্সে বারবার প্রতিফলিত হয়ে গর্ভগৃহে ঢুকে রামলালার মূর্তির কপালে পড়বে। সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়ণের কথা মাথায় রেখেই সেই লেন্স ও আয়নাকে বিশেষ উপায়ে স্থাপন করা হচ্ছে মন্দিরে যাতে সূর্যের অবস্থান ঋতুবদলের সঙ্গে সঙ্গে যেভাবে বদলাক না কেন, সূর্যরশ্মি ঠিক গর্ভগৃহে ঢুকে রামলালার মূর্তিতে পড়বেই।
মন্দিরের দক্ষিণ দিক থেকে সূর্যের আলোতে গর্ভগৃহে ঢোকানো হবে আইআর ফিল্টার দিয়ে। সূর্যের কিরণ ফিল্টার দিয়ে সরাসরি গর্ভগৃহে ঢুকবে।
এই সৌরকিরণ যাতে প্রতিফলিত হয়ে রামলালার ঠিক কপালের মাঝখানে পড়ে সেজন্য চারটি লেন্স ও চারটি আয়নাকে বিশেষ কৌণিক অবস্থানে বসানো হয়েছে।
এই লেন্সের মধ্যে দিয়ে সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয়ে সরাসরি রামলালার কপালে পড়বে ও ঠিকরে বেরিয়ে গোটা মন্দির আলোকিত করবে।
লেন্স ও আয়নার সঙ্গে গিয়ারবক্স বসানো হয়েছে মন্দিরে। ১৯টি গিয়ার স্থাপন করা হয়েছে। এই গিয়ারগুলির সাহায্যে, প্রতি বছর রাম নবমীর দিন সূর্যের অবস্থানের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যাবে লেন্স এবং আয়নাগুলির অবস্থানও। এই গিয়ারবক্স হয়েই সূর্যের রশ্মি গর্ভগৃহে ঢুকে লেন্সে প্রতিফলিত হবে।
আজ বুধবার বেলা ১১টা ৫৮ মিনিট নাগাদ সূর্যাভিষেকের প্রক্রিয়া শুরু হবে। চলবে বেলা ১২টা ৩ মিনিট অবধি।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, সূর্য তিলক যন্ত্রটি চালনা করার জন্য ইলেকট্রিসিটি ব্যবহার করা হয়নি। বরং সৌরশক্তিকে কাজে লাগানো হয়েছে। মন্দির নির্মাণ কমিটির চেয়ারপার্সন, নৃপেন্দ্র মিশ্র জানিয়েছেন, পিতল দিয়ে তৈরি হয়েছে গিয়ারবক্স। পেরিস্কোপের মতো দেখতে যন্ত্রটির নকশা ও প্রযুক্তি বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের। প্রযুক্তিগত সহায়তা করেছে বেঙ্গালুরুর একটি সংস্থা অপটিকা। তারাই লেন্স, গিয়ার, আয়না তৈরি করেছে। আর পুরো প্রক্রিয়ার তত্ত্বাবধান করেছে রুরকির সেন্ট্রাল বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা। মন্দিরের কাঠামোর সঙ্গে সূর্য তিলক যন্ত্র কীভাবে স্থাপন করা হবে তার পুরো নকশাটাই করেছেন রুরকির বিজ্ঞানীরা।