ফাইল ছবি
শেষ আপডেট: 26 March 2025 09:58
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সংবেদনশীলতার (Sensitivity) অভাব। অমানবিক। সে কারণেই এলাহবাদ হাইকোর্টের (Allahabad High Court) বিতর্কিত পর্যবেক্ষণকে স্থগিত করে দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। গত বৃহস্পতিবারই একটি মামলায় এলাহবাদ হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ ছিল নাবালিকার স্তন চেপে ধরা এবং তার পায়জামার ফিতে ছিঁড়ে দেওয়াকে কোনওভাবেই ধর্ষণ বা ধর্ষণের প্রচেষ্টা বলা যায় না, এটি আইনের চোখে 'গুরুতর যৌন নিপীড়ন' হিসেবেই গণ্য হবে। বুধবার সেই বিতর্কিত আদেশ (Controversial Order) স্থগিত করে দিল দেশের শীর্ষ আদালত।
বিচারপতি বিআর গাভাই এবং অগাস্টিন জর্জ মাসিহের বেঞ্চের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এই রায় অমানবিক, এতে সংবেদনশীলতার অভাব স্পষ্ট। পাশাপাশি শীর্ষ আদালত মনে করিয়ে দিয়েছে, এই রায় রাতারাতি দেওয়া হয়নি। চার মাস রায় মুলতুবি রাখার পর চূড়ান্ত নির্দেশ দেওয়া হয়। তাই সেখানে 'মনের প্রয়োগের' বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে।
বিচারপতিদের বেঞ্চ আরও জানিয়েছে, এই পর্যায়ে স্থগিতাদেশ দেওয়া কিছুটা হলেও চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু ভারতীয় দণ্ডবিধির অনুচ্ছেদ ২১, ২৪ এবং ২৬-এর কথা মাথায় রেখে এমন পর্যবেক্ষণ স্থগিত রাখা হয়। দ্রুত এই বিষয়ে কেন্দ্র ও উত্তরপ্রদেশ সরকারের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। ইতিমধ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে নোটিশ।
২০২১ সালে উত্তরপ্রদেশের কাসগঞ্জে ঘটে যাওয়া এক ঘটনার মামলা চলছিল এলাহবাদ হাইকোর্টে। অভিযুক্ত দুই যুবক পবন ও আকাশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, তারা ১১ বছর বয়সি এক শিশুর স্তন চেপে ধরে, তার পায়জামার ফিতে ছিঁড়ে ফেলে এবং সেটি টেনে নীচে নামানোর চেষ্টা করে খোলা রাস্তায়। পথচারীরা এগিয়ে এসে বাধা দিলে, তারা পালিয়ে যায়। অভিযোগে বলা হয়, অভিযুক্তরা শিশুটিকে গাড়িতে লিফট দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল, তারপরেই এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটে।
তবে এই মামলায় আদালত পর্যবেক্ষণ করে যে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ও মামলার তথ্য অনুযায়ী এটি ধর্ষণের চেষ্টার পর্যায়ে পড়ে না। হাইকোর্টের মতে, ধর্ষণের চেষ্টা প্রমাণ করতে হলে 'প্রস্তুতির স্তর' অতিক্রম করে 'আসল প্রয়াসের স্তরে' পৌঁছতে হবে। অভিযোগের বিবরণে তা বলা নেই।
এলাহবাদ হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, ধর্ষণের চেষ্টা ও প্রস্তুতির মধ্যে মূল পার্থক্য হল, সংকল্পের মাত্রা। এই মামলায়, উপস্থাপিত তথ্য থেকে বোঝা যায় না, যে অভিযুক্তরা ধর্ষণের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছনোর সংকল্প করেছিল বলে। রায় সামনে আসতেই শুরু হয় তরজা। এরপরই সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের সেই বিতর্কিত রায়ে স্থগিতাদেশ দিল।
জানা গিয়েছে, আশ্চর্যজনকভাবে সুপ্রিম কোর্টের আরেকটি বেঞ্চ ২৪শে মার্চ বিতর্কিত আদালতের নির্দেশের বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি জনস্বার্থ মামলা গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছে।