শেষ আপডেট: 2nd September 2024 14:15
দ্য ওয়াল ব্যুরো: 'বুলডোজার বিচার'কে সোমবার তুলোধনা করল সুপ্রিম কোর্ট। সর্বোচ্চ আদালতের প্রশ্ন, যদি কেউ ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্তও হয় কিংবা অভিযুক্ত হয়, তাহলে তার বাড়ি ভাঙা হবে কেন? কোন যুক্তিতে? আবেদনকারীর পক্ষে প্রবীণ আইনজীবী দুষ্মন্ত দাভে শীর্ষ আদালতের কাছে দেশজুড়ে চলা বুলডোজার বিচারের বিষয়ে নির্দেশিকার আর্জি জানান।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চের সামনে কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা হলফনামায় বলেন, কোনও ব্যক্তি ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হলেও তাঁর স্থাবর সম্পত্তি কোনওভাবেই ধ্বংস করা যায় না। এ ধরনের সম্পত্তি যদি অবৈধভাবে নির্মাণ করা থাকে, কেবল সেক্ষেত্রেই তা ভাঙা যেতে পারে। তাঁর যুক্তি, আদালতের সামনে বিষয়টি ভুলভাবে ব্যাখ্যা করে উপস্থাপিত করা হয়েছে।
তার জবাবে বিচারপতি গাভাই বলেন, আপনি যদি এটা মেনে নিয়ে থাকেন তাহলে আমরা এর ভিত্তিতে দেশজুড়ে একটি নির্দেশিকা দিচ্ছি। শুধুমাত্র অভিযুক্ত বলে এমনকী দোষী সাব্যস্ত হলেও কারও বাড়ি-সম্পত্তি ভেঙে দেওয়ার পিছনে কী যুক্তি আছে? কেন তা ভাঙা হচ্ছে?
বেঞ্চ আরও বলেছে, যদি সেই নির্মাণ অবৈধভাবে তৈরি করা থাকে তো তাহলে ঠিক আছে। বিচারপতি বিশ্বনাথন বলেন, প্রথমে নোটিস জারি করুক সংশ্লিষ্ট পুর কর্তৃপক্ষ। সেই নোটিসের জবাব দেওয়ার জন্য সময় দেওয়া হোক ওই ব্যক্তিকে। আইনি ফয়সালার জন্য সময় দেওয়া হোক এবং তারপরেও কাজ না হলে ভাঙা যেতে পারে বাড়ি, দোকান বা অন্য স্থাবর সম্পত্তি।
বেঞ্চ স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়, তারা অবৈধ নির্মাণকে রক্ষা করার পক্ষপাতী নয়। অবৈধ নির্মাণ কিংবা জনসাধারণের যাতায়াতকারী রাস্তা আটকে যদি কোনও স্থায়ী নির্মাণ গড়ে ওঠে, তা মন্দিরও হতে পারে, তবে সবক্ষেত্রেই ভেঙে ফেলার জন্য একটি নিয়মাবলি মেনে চলা উচিত।
দিল্লির জাহাঙ্গিরপুরীতে এরকম ৫০-৬০ বছরের পুরনো বাড়ি ভাঙা হয়েছে এই যুক্তিতে যে বাড়ির মালিক অথবা ভাড়াটের ছেলে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হয়েছে। রাজস্থানের উদয়পুরের একটি দৃষ্টান্ত দিয়ে আবেদনকারীর আইনজীবীরা বলেন, সেখানে এক ছাত্র তাঁর সহপাঠীকে ছুরি মেরেছিল বলে বাবার বাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়। এসব শুনে আদালত এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ১৭ সেপ্টেম্বর ধার্য করেছে। এ বিষয়ে পরামর্শও আহ্বান করেছে শীর্ষ আদালত।