হিমতনগরের এক শ্রমজীবী পরিবারের এই তরুণী বৃহস্পতিবার সকালে প্রথমবারের মতো বিদেশে যাচ্ছিলেন—গন্তব্য লন্ডন। উদ্দেশ্য, এমটেক পড়া।
পায়েল খটিক
শেষ আপডেট: 14 June 2025 08:40
দ্য ওয়াল ব্যুরো: এক বুক স্বপ্ন নিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন পায়েল খটিক (Payel Khatik)। গুজরাতের (Gujarat) হিমতনগরের এক শ্রমজীবী পরিবারের এই তরুণী বৃহস্পতিবার সকালে প্রথমবারের মতো বিদেশে যাচ্ছিলেন—গন্তব্য লন্ডন। উদ্দেশ্য, এমটেক পড়া। কিন্তু আকাশ ছোঁয়ার আগেই আকাশ ভেঙে পড়ল, আচমকা... সব শেষ।
আমদাবাদ বিমানবন্দর (Ahmedabad Plane Crash) থেকে ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার এআই-১৭১ বিমান। ২৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায়। পায়েলও তাঁদেরই একজন।
পায়েলের প্রথম বিদেশযাত্রা
পায়েলের বাবা সুরেশ খটিক একজন রিকশা চালক। মেয়ে পড়াশোনায় ভাল, তাই অনেক কষ্টে ধার-দেনা করে লন্ডনে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলেন। তাঁর আশা ছিল, মেয়ে ভাল চাকরি পাবে, পরিবারের অভাব-অনটন থেকে মুক্তি মিলবে।
বৃহস্পতিবার সকালে পরিবারের সকলের আশীর্বাদ নিয়ে বিমানে উঠেছিলেন পায়েল। লন্ডনের গ্যাটউইক বিমানবন্দরে পৌঁছনোর কথা ছিল, কিন্তু নিয়তির পরিহাস... ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ডাক্তারদের একটি হস্টেলে আছড়ে পড়ে বোইং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার।
পরিবারের একমাত্র আশার আলো
পায়েল ছিলেন পরিবারের একমাত্র সদস্য, যিনি বিদেশে যাচ্ছিলেন। তাঁর আত্মীয় ভরত চৌহান বলেন, “ও খুব পরিশ্রমী ছিল। উদয়পুর থেকে বি.টেক করে এখন এম.টেক করতে লন্ডন যাচ্ছিল। অথচ এরকম একটা মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গেল। পরিবারটা শেষ হয়ে গেল।”
পড়াশোনার পাশাপাশি রোজগার
নিজেরই এক বন্ধবীর ছেলেকে পড়াতেন পায়েল। সুশীলা পাঠক নামে ওই বান্ধবী জানান, “আমার ছেলেকে ৬ বছর ধরে পড়িয়েছে পায়েল। খুব ভাল মেয়ে ছিল। গোটা পরিবারটা ওর রোজগারের ওপর নির্ভর করত।” পায়েলের এই টিউশন থেকেই পরিবারের কিছুটা উপার্জন হত। এখন সেই রাস্তাও বন্ধ হয়ে গেল।
ডিএনএ পরীক্ষায় চেনা যায় পায়েলকে
বিমান দুর্ঘটনার পরে সব যাত্রীর মৃতদেহ এতটাই ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছিল যে, কাউকে চেনার অবকাশ ছিল না। যে কারণে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমেই পায়েলের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।
দুর্ঘটনার কারণ এখনও অজানা
ফ্লাইটের ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার হয়েছে, তবে কী কারণে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটল, তা এখনও পরিষ্কার নয়। তদন্ত চলছে।