মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে প্রথমে নিখোঁজ, পরে খাদ থেকে উদ্ধার হয় রাজার দেহ (Raja Raghubangshi Murder Case)। প্রাথমিক তদন্তেই পুলিশ জানিয়েছিল তাঁকে খুন করা হয়েছিল। প্রথম সন্দেহ গিয়েছিল স্ত্রী সোনমের উপর।
ট্রোলিংয়ের জবাব সৃষ্টি রঘুবংশীর
শেষ আপডেট: 12 June 2025 07:04
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ইন্দোরের রাজা রঘুবংশীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের (Raja Raghubangshi Murder Case) বিচার চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন বোন সৃষ্টি রঘুবংশী। একের পর এক ভিডিও পোস্ট করছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। 'ভিউসের জন্য দাদার মৃত্যু নিয়ে কন্টেন্ট বানাচ্ছে', এই ধরনের সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে তাঁকে। অবশেষে এনিয়ে মুখ খুললেন সৃষ্টি।
মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে প্রথমে নিখোঁজ, পরে খাদ থেকে উদ্ধার হয় রাজার দেহ (Raja Raghubangshi Murder Case)। প্রাথমিক তদন্তেই পুলিশ জানিয়েছিল তাঁকে খুন করা হয়েছিল। প্রথম সন্দেহ গিয়েছিল স্ত্রী সোনমের উপর। দাদার দেহ উদ্ধারের পর থেকেই ইনস্টাগ্রামে একের পর এক রিল পোস্ট করে সোনম ও তার প্রেমিক রাজের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন তিনি। এরজন্যই তাকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ট্রোলিং সহ্য করতে হয়েছে। অনেকেরই অভিযোগ, ভাইয়ের মৃত্যুকে 'ভিউস' বাড়ানোর হাতিয়ার বানিয়েছেন সৃষ্টি।
এবার এইসব অভিযোগ নিয়ে মুখ খুললেন নিহত রাজার বোন (Srishti Raghubangshi)। ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্টে তিনি লেখেন, 'যারা বলছেন আমি ফলোয়ার বাড়ানোর জন্য আমার দাদার মৃত্যুকে ব্যবহার করছি, তাঁদের বলছি এটা সত্যি নয়। আমি যদি চুপ করে থাকতাম, হয়তো এই কেস দু’তিন দিনের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যেত। খুনিদের কোনও খোঁজই পাওয়া যেত না।"
তিনি আরও বলেন, "আমার দাদার জন্য যা কিছু করতে পারি, করবই। যাদের সঙ্গে লড়তে হবে, যেখানে যেতে হবে, যাব। সবাইকে জানাব যে আমি থামিনি। আপনারা যারা আমাকে দোষ দিচ্ছেন, ট্রোল করছেন, আপনারা আমার দাদার জন্য কী করেছেন? আমি অন্তত নিজের দিক থেকে লড়াই করছি, প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আপনাদের উচিত আমাকে দোষ না দিয়ে পাশে দাঁড়ানো।" সৃষ্টি জানান, ট্রোলিং চললেও তিনি থামবেন না। ভাইয়ের ন্যায়বিচারের জন্য সর্বত্র আওয়াজ তুলবেন।
ইনস্টাগ্রামে সৃষ্টির প্রায় সাড়ে চার লক্ষ ফলোয়ারস। দাদা রাজা রঘুবংশীর বিয়ের অনুষ্ঠানের একাধিক ভিডিও পোস্ট করেছেন তিনি। নতুন বৌদি সোনমের সঙ্গেও রিল বানিয়েছিলেন সৃষ্টি।
রাজা-হত্যাকাণ্ডের পর একটি ভিডিও পোস্ট করেন তিনি। সেখানে সোনম রঘুবংশীর সঙ্গে তার ভাই রাজার বিয়ের ছবি ও ভিডিও শেয়ার করে তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, "আমার ভাই সাত জন্ম একসঙ্গে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সোনমকে, কিন্তু সে সাত দিনও থাকতে পারল না। যদি কাউকে ভালবাসতে, পালিয়ে যেতে পারতে। খুন করলে কেন? কারও ভাই, কারও ছেলেকে কেন কেড়ে নিলে?”
এই ভিডিও ভাইরাল হতেই একদিকে কিছু মানুষ যেমন রাজার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। নেটিজেনদের একাংশ আবার কটাক্ষ ছুড়ে বলেছেন, দাদার মৃত্যুর ঘটনায় লাইমলাইট নেওয়ার চেষ্টা।'
রাজা ও সোনমের বিয়ে হয়েছিল গত ১১ মে। ২০ মে, তাঁরা মধুচন্দ্রিমায় মেঘালয়ে যান। উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন জায়গায় তিন দিন ঘোরার পর, দুজনেই 'নিখোঁজ' হয়ে যান। বারবার যোগাযোগ করতে না পেরে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে পরিবার। ২ জুন মেঘালয়ের একটি খাদ থেকে রাজা রঘুবংশীর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি ধারাল অস্ত্র উদ্ধার হয় (সম্ভাব্য খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র)। ময়নাতদন্তে জানা যায়, রাজার মাথার পেছনে ও সামনের দিকে দুটি আঘাতের চিহ্ন ছিল।
রাজার মৃতদেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। তারপর শুরু হয় সোনমের খোঁজ। অবশেষে গত সপ্তাহে উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরের একটি ধাবায় সোনমকে অচৈতন্য অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁকে চিকিৎসার জন্য গাজিপুর মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানেই আত্মসমর্পণ করেন সোনম।
এরপর মেঘালয় পুলিশ 'অপারেশন হানিমুন' নামে একটি বিশেষ অভিযান চালায়। ২০ সদস্যের একটি দল গঠন করে, রাতারাতি অভিযান চালিয়ে বাকি চার অভিযুক্ত রাজ কুশওয়াহা, আকাশ রাজপুত, আনন্দ কুর্মি ও বিশাল সিং চৌহানকে গ্রেফতার করা হয়।
রাজের সঙ্গে পুরনো সম্পর্কের জেরেই পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে রাজাকে, বিয়ের আগে মা-বাবাকে হুমকিও দিয়েছিলেন সোনম, এমনকি সামনে দাঁড়িয়ে স্বামীকে খুন হতে দেখেন তিনি, পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে এমন অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য।