শেষ আপডেট: 4th February 2025 23:53
দ্য ওয়াল ব্যুরো: লোকসভায় স্পিকার ওম বিড়লার সঙ্গে বাকযুদ্ধে জড়ালেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব। মঙ্গলবার কেন্দ্রের মোদী সরকারকে নিশানা করে অখিলেশের অভিযোগ, ১৯৯১ সালের অর্থনৈতিক সংস্কারের পরেও ভারত নিজস্ব উৎপাদন বাড়াতে ব্যর্থ। সে প্রসঙ্গেই স্পিকার ওম বিড়লা বলেন, 'জ্ঞান দিচ্ছেন'? পাল্টা অখিলেশ তাঁর চলার পথকে 'সাইকেল ট্র্যাক'-এর সঙ্গে তুলনা করেছেন।
দিল্লি বিধানসভা ভোটে আম আদমি পার্টিকে সমর্থন জানিয়েছেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব। অথচ, লোকসভা ভোটের সময়ও উত্তরপ্রদেশে একের পর এক কেন্দ্রে যৌথ সভা করেছিলেন অখিলেশ যাদব ও রাহুল গান্ধী। উপচে পড়া ভিড় দেখা গিয়েছিল সেই সভাগুলিতে। ইন্ডিয়া জোটে ছিল কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি, আপ তিন দলই। তবে দিল্লি বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস আর আপ আলাদাভাবে লড়ছে। ফলে নিজেদের মধ্যে দূরত্ব যে স্পষ্ট তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু সোমবার লোকসভায় রাহুল গান্ধীর ভাষণের প্রসঙ্গ টেনে মোদী সরকারকে খোঁচা দিতেই অখিলেশকে এমন প্রশ্ন করেন স্পিকার।
এদিন চিন সীমান্তে উত্তেজনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে অখিলেশ বলেন, বিজেপি এবং কংগ্রেস দু'জনেরই এই বিষয়ে নিজস্ব মতামত আছে। কংগ্রেস আমলের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "এক সময় আমরা লক্ষ লক্ষ একর জমি চিনের কাছে হারিয়েছিলাম। বিজেপি এখন একই পথে হাঁটছে। কিন্তু বিজেপি চিনের দখলদারি মেনে নিতেও পারছে না।"
রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর আলোচনায় সোমবার লোকসভায় মোদী নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারকে তুলোধনা করেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। তাঁর দাবি, ভারত নিজস্ব উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে ব্যর্থ, তাই বাজার চলে গিয়েছে চিনের হাতে। দেশের অর্থনীতি, বৈদেশিক, সীমান্ত সমস্যা, সামাজিক, রাজনৈতিক নানান বিষয়ে নিয়ে এ দিন মোদী সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হন কংগ্রেস সাংসদ।
সোমবার ভাষণের গোড়ায় ভাষণের শুরুতেই রাহুল গান্ধী বলেন, "আমি রাষ্ট্রপতির ভাষণ পুরোটাই শুনেছি। গত কয়েক বছর ধরে তিনি একই কথা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বলে চলেছেন। আমরা এই করেছি, ওই করেছি, এই করছি। যে কোনও দেশ চলে উৎপাদন ও খরচের উপর ভর দিয়ে। অথচ, এ দেশে রিলায়েন্স, আদানি, টাটা, মাহিন্দ্রা কোম্পানির বৃদ্ধি ঘটলেও দেশের সর্বসম্মিলিত কোনও উন্নতি ঘটেনি। আসলে আমরা দেশের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ব্যর্থ হয়েছি। যার সুফল নিয়েছে চিন। আমরা চিনা ফোন ব্যবহার করি, বাংলাদেশি জামা পরি, যার সব লাভের কড়ি নিয়ে যাচ্ছে চিন।"
বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী দাবি করার একদিন পরই মঙ্গলবার সেই প্রসঙ্গ টানেন অখিলেশ। তিনি দাবি করেন সেনাবাহিনী বলেছে যে চিনারা ভারতীয় ভূখণ্ডের মধ্যে আছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন এবং বলেছেন যে ভারত যদি জমি হারায়, তাহলে তা ১৯৬২ সালের সংঘর্ষের সময় হয়েছিল যখন কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল।
সমাজবাদী পার্টির প্রধান আরও বলেন, একটা সময় ছিল যখন কংগ্রেস এই দাবি সমর্থন করত না। যদি কংগ্রেস তখন এটি সমর্থন করত, তাহলে আমাদের এখন এটি চাইতে হত না। আমি কংগ্রেসের বন্ধুদের বলতে চাই, আমরা আপনাদের সাথে আছি এবং এই ইস্যুতে আপনাদের সমর্থন করব। এর জন্য দ্রুত জাতি সমীক্ষার আবেদন জানিয়েছেন অখিলেশ।
কংগ্রেসের সঙ্গে বন্ধুত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই বিরোধীদের জবাব দিয়ে অখিলেশ বলেন, আমাদের দুই দলের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব নেই, আপনাদের ডবল ইঞ্জিনের মতো নয়। অখিলেশ মনে করিয়ে দেন, কেন্দ্র সাহায্য না করলে দিল্লির উন্নয়ন বন্ধ হবে না।