শেষ আপডেট: 5th January 2025 23:59
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ২০ বছর আগে জন্মদাত্রী মা ছেড়ে চলে গেছিলেন। তারপর থেকে এক স্প্যানিশ দম্পতির কাছে মানুষ হয়েছেন স্নেহা ও তাঁর একমাত্র ভাই সোমু। ভাগ্যচক্রে স্প্যানিশ দম্পতি দু’জনকে দত্তক নেওয়ায় পাকাপাকিভাবে দু’জনেই স্পেনের নাগরিক। কিন্তু আচমকাই স্নেহা জানতে পারেন যার কাছে বড় হয়েছেন, তিনি তাঁকে জন্ম দেননি। এরপরই জন্ম দেওয়া মায়ের খোঁজ করতে সোজা ভারতে চলে আসেন তিনি।
যদিও মাকে হন্যে হয়ে খুঁজলেও তাঁর খোঁজ পাননি ২১ বছর বয়সি স্নেহা। জানা গেছে, ভুবনেশ্বরের একাধিক প্রান্তে মায়ের জন্য ঘুরে বেড়ালেও নিরাশ হতে হয়েছে তাঁকে। স্প্যানিশ দম্পতির কাছে বেড়ে উঠলেও স্নেহা ও তাঁর ভাই সোমু মনেপ্রাণে একজন ভারতীয়।
ভাবছেন তো স্পেন থেকে এসে আচমকা ভুবনেশ্বরে কেন গেলেন তরুণী? জানা গেছে, ২০১০ সালে ভুবনেশ্বরের একটি অনাথ আশ্রম থেকেই স্নেহা ও তাঁর ভাইকে দত্তক নেন স্প্যানিশ বাবা-মা গেমা ভিদাল ও জুয়ান জোশ। এরপর সে কথা জানতে পেরেই সোজা স্পেন থেকে ওড়িশার আশ্রমে চলে আসেন তিনি। জানা গেছে, স্নেহা বত্মানে নিজেও শিশুদের নিয়ে গবেষণা করছেন। সেখান থেকেই নিজের শিকড়ের খোঁজে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হন্যে হয়ে ঘুরে বেরিয়েছেন তিনি।
যদিও স্নেহা আশ্রমে এলে জানতে পারেন, ২০০৫ সালেই তাঁদের জন্মদাত্রী বনলতা দাস ভুবনেশ্বরের নয়াপল্লী এলাকার ভাড়া বাড়িতেই তাঁদের ছেড়ে চলে গেছিলেন। পরে বনলতার স্বামী সন্তোষ, যিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় বাবুর্চি হিসাবে কাজ করতেন তিনিও পরিবার ছাড়েন। জানা গেছে বনলতার চার সন্তান ছিল। তবে স্নেহা ও সোমুকে বাড়িতে রেখে বাকি দু’জনকে নিয়ে পালিয়ে যান তিনি। এরপর বাড়ির মালিক পুলিশকে খবর দিলে দু’জনকে অনাথ আশ্রমে নিয়ে যাওয়া হয়।
এরপর সেখান থেকেই ২০১০ সালে পাঁচ বছর বয়সি স্নেহা ও চার বছর বয়সি সোমুকে স্প্যানিশ দম্পতি আইনিভাবে দু’জনকে দত্তক নেন। পরে স্নেহা বড় হতেই তাঁকে পুরো বিষয়টি জানান স্প্যানিশ বাবা-মা। এরপরই স্পেন থেকে ভারতে দৌড়ে আসেন তরুণী।
স্নেহা জানিয়েছেন, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর তিনি তাঁর যোগা টিচারের সঙ্গে ভারতে আসেন। এরপর ভুবনেশ্বরের একটি হোটেলে থাকতে শুরু করেন। তবে নিজের লেখাপড়া শুরু হয়ে যাওয়ার কারণে সোমবারই স্পেনে ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। পাশাপাশি পুরনো যে বাড়িতে স্নেহা পরিবারের সঙ্গে থাকতেন সেখানকার মালিকের থেকে বাবা-মায়ের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে পুলিশের কাছে সমস্ত বিষয় খুলে জানান। তবে পুলিশ বাবা-মাকে খুঁজলেও এখনও তাঁদের সন্ধান মেলেনি।