আমদাবাদে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার (Ahmedabad Plane Crash) ধ্বংসস্তূপের কোথাও হয়তো পড়ে আছে রাজস্থানের যোশী পরিবারের (Joshi Family) সেল ফোন।
যোশী পরিবারের শেষ সেলফি
শেষ আপডেট: 12 June 2025 17:27
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আমদাবাদে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার (Ahmedabad Plane Crash) ধ্বংসস্তূপের কোথাও হয়তো পড়ে আছে রাজস্থানের যোশী পরিবারের (Joshi Family) সেল ফোন। হয়তো কখনও আর খুঁজে পাওয়া যাবে না সেটি, হয়তো বিস্ফোরণের আগুনেই পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সেই ফোনে তোলা একটি সেলফি রয়ে গেল— এক ভয়ঙ্কর দিনের মর্মান্তিক স্মৃতি হয়ে।
তিন সন্তানকে সঙ্গে আজই লন্ডনের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন উদয়পুরের ডাক্তার দম্পতি। বৃহস্পতিবারের তাঁদের এই বিমান সফর ছিল এক নতুন জীবনের শুরু।
কমি ব্যাস (Komi Vyas), উদয়পুরের একটি হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসক। সম্প্রতি চাকরি ছেড়েছিলেন একটাই কারণে, লন্ডনে চিকিৎসক স্বামী প্রতীকের (Prateek Joshi) সঙ্গে নতুন করে জীবন শুরু করবেন বলে। সেই সফরের আগে অভিশপ্ত বিমানের ৬৯ থেকে ৭৩ নম্বর আসনে বসেই স্বামী-স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে একটি সেলফি তুলেছিলেন কমি। সকলের হাসিমুখ।
যেখানে দেখা যাচ্ছে কমির পাশে বসে হাসছেন প্রতীক। অন্যদিকে সিটে বসা তাঁদের যমজ দুই পুত্র ও কন্যা। ছেলেরা ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করছে, মেয়ে মিরায়ার মুখে ফেটে পড়ছে উচ্ছ্বাস। কে জানত এই ছবিই তাঁদের শেষ সেলফি!
প্রতীক-কমি দু’জনেই আগে উদয়পুরের প্যাসিফিক হাসপাতালে কাজ করতেন। প্রতীক কিছুদিন আগেই লন্ডনে চাকরি পেয়েছিলেন। কয়েকদিন আগে রাজস্থানের বাঁশওয়াড়ায় ফিরে এসে পরিবারের সকলকে নিয়ে যান আমদাবাদ। সেখান থেকেই লন্ডন যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের।
দম্পতির দুই যমজ পুত্র, নকুল ও প্রদ্যুৎ-এর বয়স মাত্র পাঁচ বছর। বড় মেয়ে মিরায়ার আট। তাঁদের আত্মীয় নয়ন জানিয়েছেন, “প্রতীক সম্প্রতি এখানে এসেছিল। গতকাল আমদাবাদে রওনা দেয় লন্ডন যাবে বলে। সিঅফ করতে গিয়েছিল পরিবারের অনেকেই।”
কমির ভাই প্রাবুদ্ধ জানিয়েছেন, প্রায় দশ বছর আগে তাঁর দিদির সঙ্গে প্রতীকের বিয়ে হয়। প্রতীকের বাবা একজন নামী রেডিওলজিস্ট এবং কমির বাবা পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্টের অফিসার। প্রতীকের একটি বোনও আছেন, যিনি পেশায় ইঞ্জিনিয়ার।
কিন্তু বৃহস্পতিবার সর্দার বল্লভভাই বিমানবন্দরে ওঠার সময় কেউ কি জানত, এক সঙ্গে তোলা সেই সেলফিই হবে তাঁদের শেষ পারিবারিক ছবি? আনন্দের মুহূর্তে তোলা সেই ছবিই যেন আজকের বিমান দুর্ঘটনার নিরব সাক্ষী হয়ে থেকে গেল।