কাশ্মীর সমস্যা আলোচনার শর্ত, এমনই দাবিতে তুলে ভারতের সঙ্গে শান্তির জন্য আলোচনার প্রস্তাব দিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। সম্প্রতি সংঘর্ষের পরে সেনাঘাঁটি সফরে গিয়ে তাঁর শান্তির বার্তা কূটনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।
নরেন্দ্র মোদী ও শেহবাজ শরিফ।
শেষ আপডেট: 16 May 2025 08:12
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ শান্তিপূর্ণ আলোচনার প্রস্তাব রাখলেন ভারতের উদ্দেশে। বৃহস্পতিবার পাঞ্জাব প্রদেশের কামরা এয়ারবেসে সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে অংশ নেওয়া সেনা ও অফিসারদের সঙ্গে কথা বলার সময়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রীর কথায়, 'আমরা ভারতের সঙ্গে শান্তির জন্য আলোচনায় প্রস্তুত।' তিনি আরও বলেন, এই শান্তির প্রেক্ষাপট নির্ধারিত হবে কাশ্মীর ইস্যুর ভিত্তিতেই। অর্থাৎ আলোচনার যে কোনও পর্যায়ে কাশ্মীর সমস্যা অগ্রাধিকার পাবে।
যদিও কাশ্মীর প্রসঙ্গে ভারত বহুবারই স্পষ্ট করে জানিয়েছে, জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ভারতের অবিচ্ছেদ্য ও অখণ্ড অংশ এবং এ বিষয়ে কোনও আপসের প্রশ্নই নেই।
কামরা ঘাঁটি সফরে শাহবাজের সঙ্গে ছিলেন পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ, পাকিস্তান সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির এবং বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল জহির আহমেদ বাবর সিদ্দিকী। এটি ছিল শাহবাজের দ্বিতীয় প্রতিরক্ষা ঘাঁটি সফর। ১০ মে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ বিরতির পরেই এই সফর করেছিলেন শরিফ।
প্রসঙ্গত, ৬ ও ৭ মে মধ্যরাতে পাকিস্তানে 'অপারেশন সিঁদুর' চালানো হয় ভারতের তরফে, যার লক্ষ্য ছিল পাহেলগামের সন্ত্রাসবাদী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার প্রতিশোধ নেওয়া। এই অভিযানে ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি নিশানা করে হামলা চালায়। একশোরও বেশি জঙ্গি নিহত হয় বলে দাবি করা হয় এই অভিযানে।
এর উত্তর দিতে ৮, ৯ ও ১০ মে ভারতের একাধিক সামরিক ঘাঁটি নিশানা করে হামলার চেষ্টা করে পাকিস্তান। এর পর ভারতীয় সেনা শক্তিশালী পাল্টা প্রতিক্রিয়াও দেয়। ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের রফিকি, মুরিদ, চাকলালা, রহিম ইয়ার খান, সুক্কুর ও চুনিয়ান-সহ বেশ কয়েকটি সামরিক ঘাঁটিতে প্রতিশোধমূলক হামলা চালায়।
এর পরে গত পরশু, বুধবার শাহবাজ শরিফ সিয়ালকোটের পাসরুর ক্যান্টনমেন্ট সফর করেন এবং সেখানে সেনা জওয়ানদের সঙ্গে আলাপ করেন। টানা কয়েকদিনের সীমান্ত উত্তেজনা ও সংঘর্ষের আবহে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর এই পরপর দু’টি সেনা ঘাঁটি সফর তাৎপর্যপূর্ণ।
যদিও শাহবাজ শরিফ শান্তির বার্তা দিলেন, তবু তাঁর বক্তব্যে কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে ভারতের সঙ্গে আলোচনা শুরু করার শর্ত স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে। এটি ভবিষ্যতের কূটনৈতিক সমীকরণের উপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।