গ্রীষ্মা কুমারী।
শেষ আপডেট: 21st January 2025 00:33
হত্যাকাণ্ডের ঘটনা
২০২২ সালের ১৪ অক্টোবর শরন গ্রীষ্মার বাড়িতে বেড়াতে গেলে গ্রীষ্মা তাঁকে একটি আয়ুর্বেদিক মিশ্রণ দেয়, যা বিষাক্ত পেস্টিসাইডে ভরা ছিল। শরন ওই মিশ্রণটি খেয়েই অশুস্থ হয়ে পড়েন। এর পরে ১১ দিন ধরে আইসিইউতে যমে-মানুষে টানাটানির পরে শেষে অঙ্গ বিকল হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর।
শরন মৃত্যুর আগে এক ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে একটি বয়ান দেন, যেখানে তিনি গ্রীষ্মাকে দোষী সাব্যস্ত করে বলেন যে, তাঁকে খাওয়ানো ওই ওষুধে বিষ ছিল। পরবর্তী কালে ফরেনসিক পরীক্ষায় সেই ওষুধে বিষ থাকার প্রমাণও পাওয়া যায় এবং তদন্তে গ্রীষ্মার জড়িত থাকারও প্রমাণ পাওয়া যায়।
আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
বিশেষ সরকারি আইনজীবী আদালতে জানান, গ্রীষ্মা শরনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক শেষ করতে চেয়েছিলেন, কারণ তাঁর পরিবারের তরফে অন্যত্র তাঁর বিয়ে ঠিক হয়েছিল। এর পরেই গ্রীষ্মা তাঁর মামা নির্মলকুমারন নায়ার এবং মাকে সঙ্গে নিয়ে শরনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। নির্মলকুমারন নায়ারকে আদালত তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। মা সিন্ধুকুমারী অবশ্য এই মামলায় তথ্যপ্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস পেয়ে গিয়েছেন।
গ্রীষ্মার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে, যেমন খুন, হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ, খুনের উদ্দেশ্যে বিষপ্রয়োগ, মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিচার ব্যবস্থাকে বাধা দেওয়া।
আদালতের মন্তব্য
আদালত তার রায়ে বলে, গ্রীষ্মা এমন একটি সময়ে এই কাণ্ড ঘটিয়েছিল, যখন তার পরিবার বাড়ির বাইরে ছিল। সে এমনভাবে বিষ প্রয়োগ করেছিল, যাতে তা সহজে ধরা না পড়ে। সে হত্যাকাণ্ডটি অত্যন্ত গোপনে ও পরিকল্পনা করে করেছিল। আদালত আরও বলে, 'অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। শরন ১১ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করেছেন, এক ফোঁটা জলও খেতে পারেননি।'
আদালতে অবশ্য গ্রীষ্মার পাল্টা দাবি ছিল, শরন তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন। তবে তা প্রমাণিত হয়নি। এই মামলায় রায় দেওয়ার সময়ে আদালত এ-ও উল্লেখ করেছে, যে, গ্রীষ্মার কম বয়সের কারণে তার অপরাধের গুরুত্ব কমিয়ে দেখা উচিত নয়।