শেষ আপডেট: 16th February 2025 21:19
দ্য ওয়াল ব্যুরো: 'পেরেক বিঁধে গিয়েছিল মাথায়'। শনিবার রাতে নিউ দিল্লি স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে যে ১৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন তার মধ্যে ছিল তাঁর সাত বছর বয়সি মেয়েও। প্রয়াগরাজের মহাকুম্ভে যাওয়ার জন্য শনিবার নিউ দিল্লি স্টেশনে ভিড় জমান পুণ্যার্থীরা। তার মধ্যেই ঘটে যায় দুর্ঘটনা।
কীভাবে মৃত্যু হল মেয়ের? সংবাদমাধ্যমের সামনে সে বিষয়ে মুখ খুললেন উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ের বাসিন্দা ৭ বছর বয়সি রিয়ার বাবা ওপিল সিং। তিনি পরিষ্কার জানিয়েছেন, পরিবারকে নিয়ে মহাকুম্ভে যাওয়ার জন্য ট্রেনের সংরক্ষিত টিকিট থাকলেও লাভ কিছুই হয়নি।
ওই ব্যক্তি পরিষ্কার জানিয়েছেন, আমরা নয়াদিল্লি স্টেশনে পৌঁছতেই পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে। ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করলেও ট্রেনের দেখা মেলেনি। তার উপরে স্টেশনে ভিড় বাড়তে থাকায় আমরা বাড়ি ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিই।
ওপিল সিংয়ের আরও অভিযোগ, ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে নীচে নেমে এলেও পরে ভিড় দেখে সিদ্ধান্ত ব্দল করতে বাধ্য হই। স্ত্রীকে জানাই বাচ্চাদের নিয়ে এমন অবস্থায় না যাওয়াই ভাল। ট্রেনে শোয়ার জায়গা তো দূর, বসারও কোনও সুযোগ নেই। এরপরই সেখান থেকে ফিরছিলাম।
আমরা ওপরের দিকে যাচ্ছিলাম। মাত্র ৬টা সিঁড়ি বাকি ছিল। সেই সময় আমার মেয়েটা আটকে গেল। ওপর থেকে ৫-৬ হাজার মানুষ নামছিলেন। একের পর এক মানুষ আমাদের উপর পড়ে গেলেন। সেই সময় আমার মেয়ে পড়ে গেলে পাশে থাকা রেলিং থেকে একটি পেরেক মাথায় পেরেক ঢুকে গেল।
উত্তর প্রদেশের বাসিন্দা আরও বলেন, ‘আমার কী মিষ্টি বাচ্চা ছিল।’ চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি তিনি। মোবাইলের ভাঙা স্ক্রিনে মেয়ের ছবি হাতে কেঁদে চলেছেন তিনি। জানা গিয়েছে, দিল্লিতে শ্রমিকের কাজ করেন তিনি। পুলিশের কাছে কোনও সহায়তা পেয়েছিলেন কি না সেই প্রশ্নের উত্তরে ওপিল জানান, কেউ সাহায্য করেননি। একজন পুলিশ খালি বাঁশি বাজাচ্ছিলেন।
ওই ব্যক্তির আরও অভিযোগ, ‘যখন মেয়েকে পেলাম, স্টেশনের বাইরে কোনও অ্যাম্বুল্যান্স ছিল না। একটা অটোতে চাপিয়ে নিয়ে গেলাম। স্টেশনের বাইরে দু'জন কুলি ছিলেন। তাঁদের থেকে ১০০ টাকা করে সাহায্য নিই। তারপর অটোতে করে মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। ব্যক্তির আরও অভিযোগ, তাঁর পকেট থেকে মোবাইল, টাকা সব বের করে নেওয়া হয়েছে।
যদিও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন ওই কিশোরীকে। প্রতি ১২ বছর অন্তর প্রয়াগরাজ শহরে লক্ষ লক্ষ ভক্তের সমাগম ঘটে কুম্ভমেলায়। ২৬শে ফেব্রুয়ারি শেষ হবে মহা মেলা।