শেষ আপডেট: 24th March 2024 17:52
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মার্চ মাসকে স্বাধীনতার মাস হিসাবে পালন করে বাংলাদেশ। পড়শি দেশের ৫৩ বছরের ইতিহাসে ২৬ মার্চের স্বাধীনতা দিবস ছাড়াও এই মাস জুড়ে রয়েছে আরও অনেক ঐতিহাসিক ঘটনা। তার অন্যতম ৭ মার্চ ঢাকায় শেখ মুজিবুরের ভাষণ। যা ইউনেসকোর বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য ঐহিত্য হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ১৮ মিনিটের যে ভাষণে রয়েছে কালজয়ী সেইসব লাইন— ‘এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।’ ‘ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যার যা কিছু আছে, তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকো।’
আবার এই মার্চেরই ২৫ তারিখ এক কালরাত্রির সাক্ষী তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ। পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের দল আওয়ামী লিগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাকিস্তান পিপলস পার্টির প্রধান জুলফিকার আলি ভুট্টো সেনা শাসকদের সঙ্গে যোগসাজস করে শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার গঠন আটকে দেন। নির্বাচনী ফলাফল অনুযায়ী আওয়ামী লিগ প্রধান মুজিবুরেরই সেবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোনও বাঙালি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হবেন, করাচি, রাওয়ালপিণ্ডির নেতারা তা মেনে নিতে পারেননি।
সেই অবিচারের প্রতিবাদে পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালিদের বিদ্রোহের আঁচ পেয়ে ২৫ মার্চ রাতে ঢাকা-সহ একাধিক জেলায় ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ কার্যকর করে। ব্যারাক থেকে হাজারে হাজারে সেনা বেরিয়ে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস, লেখক-শিল্পী-বুদ্ধিজীবী থেকে শহরের বাঙালি মহল্লার সাধারণ মানুষ—এক রাতে প্রায় ১০ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়। পৃথিবীর ইতিহাসে এত বড় হত্যাকাণ্ডের নজির কমই আছে।
সেই রাতেই পূর্ব পাকিস্তানকে ‘স্বাধীন বাংলাদেশ’ বলে ঘোষণা করে বঙ্গভূমিকে পাকিস্তানের সেনা মুক্ত করার ডাক দেন শেখ মুজিবুর রহমান। সেই ঘোষণার অব্যবহিত পরেই ধানমণ্ডির বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে করাচি নিয়ে যায় পাক সেনা। ততক্ষণে তাঁর ডাকে যুদ্ধে নেমে পড়ে হাজার হাজার মানুষ।
সোমবার সেই কালো দিনের ৫৩তম বর্ষ। সেদিনের শহিদদের স্মরণে গোটা বাংলাদেশ রাত ১১’টা থেকে সাড়ে ১১’টা পর্যন্ত নিষ্প্রদীপ থাকবে। অবশ্যই জরুরি পরিষেবা এর বাইরে থাকবে। নিহতদের স্মরণে সোমবার মসজিদ, মন্দির-সহ সব উপাসনাস্থলে বিশেষ প্রাথনার আয়োজন করা হবে।
তবে ২০১৭-র আগে পর্যন্ত দিনটি বাংলাদেশে সরকারিভাবে পালিত হত না। ওই বছর থেকে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস হিসাবে পালিত হয়ে আসছে। এজন্য বিশেষ উদ্যোগ নেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামীকাল তিনি এবং রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দির চুপ্রি জাতীর উদ্দেশে ভাষণ দেবেন এবং ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে হবে বিশেষ অনুষ্ঠান।