মাধবী বুচ।
শেষ আপডেট: 11th August 2024 10:39
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভারতের শেয়ার বাজারে ফের একবার ঝড় উঠতে চলেছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছিল হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। সে কথা সত্যি করেই গতকাল বোমা ফাটাল মার্কিন শর্ট সেলিং সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। এতে মোদী জমানায় ভারতে শেয়ার বাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া তথা (সেবির) স্বশাসিত ও নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়েই বড় প্রশ্ন চিহ্ন তৈরি হয়ে গেছে। হুইসলব্লোয়ারের তথ্য উদ্ধৃত করে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ জানিয়েছে, সেবির বর্তমান চেয়ারপার্সন মাধবী বুচ এবং তাঁর স্বামীর আদানির অফশোর কোম্পানি অংশীদারিত্ব রয়েছে।
তবে এই নিয়ে দেশজুড়ে চলা তোলপাড়ের মাঝে সেই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন মাধবী বুচ এবং তাঁর স্বামী ধবল বুচ। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, সেবি কর্তা মাধবী এবং তাঁর স্বামী বিবতি দিয়ে বলেছেন, 'আমরা হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টের সব অভিযোগ অস্বীকার করছি। এই দাবিগুলি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমাদের জীবন এবং টাকাপয়সার লেনদেন খোলা বইয়ের মতো। সেবিতে এত বছর ধরে কাজ করার ফলে সব আর্থিক লেনদেনই প্রকাশ করতে হয়েছে। কিছুই গোপন নেই।'
তাঁরা আরও বলেন, 'কোনও আর্থিক লেনদেনের নথি প্রকাশ্যে আনতে আমাদের কোনও দ্বিধা নেই। আমরা যখন সাধারণ নাগরিক ছিলাম এবং সেবির সঙ্গে কোনও সম্পর্কেই ছিলাম না, সেই সময়ের আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত নথি দরকারে আমরা প্রকাশ করতে পারি। যে কোনও তদন্তকারী সংস্থাও তা দেখতে চাইতে পারে, আমাদের অসুবিধা নেই।'
এই কথার পাশাপাশি তাঁরা আরও বলেন, 'আমরা পরবর্তী সময়ে এই নিয়ে আরও বিস্তারিত ভাবে জানাব। স্বচ্ছতা বজায় রাখার স্বার্থেই তা করা হবে। হিন্ডেনবার্গের এই রিপোর্ট আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়। সেবি-র তরফে তাদের শো কজ করা হয়েছে।'
কী বলেছে হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট?
ভারতে উপার্জিত অর্থের উপর করফাঁকি দিতে বিদেশে সংস্থা খোলার প্রবণতা অনেক দিন ধরেই রয়েছে। হিন্ডেনবার্গের দাবি, আদানির এমনই অফশোর কোম্পানিতে লতায়পাতায় স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে সেবি প্রধানের। গত বছর জানুয়ারি মাসে এই হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টেই দাবি করা হয়েছিল, আদানি কীভাবে কর ফাঁকি দিয়ে বিদেশে ভুয়ো কোম্পানি খুলে টাকা সরিয়েছে। সেই অভিযোগের তদন্ত ভার দেওয়া হয়েছিল সেবির উপর। এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টেরও নির্দেশ ছিল।
শনিবার হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট ঠারেঠোরে বোঝাতে চেয়েছে যে সর্ষের মধ্যেই ভূত রয়েছে। যাঁর উপর তদন্ত ভার, আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁর তলে তলে আঁতাত রয়েছে তা নয়, বাণিজ্যিক স্বার্থেও জড়িয়ে রয়েছেন মাধবী। হিন্ডেনবার্গ এদিন বলেছে, তাদের রিপোর্ট প্রকাশের পর ১৮ মাস কেটে গেছে। অথচ আদানির অসদাচরণ এবং মরিশাস ও বিদেশে অন্যান্য ভুয়ো কোম্পানিতে তাদের লেনদেনের ব্যাপারে সেবি বিষ্ময়কর ভাবেই কোনও আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
হিন্ডেনবার্গের দাবি, মাধবী বুচ ও তাঁর স্বামী মরিশাস ও বারমুডার এমন সব ভুয়ো বিদেশি সংস্থায় বিনিয়োগ করে রেখেছেন যাদের সঙ্গে গৌতম আদানির ভাই বিনোদ আদানির প্রত্যক্ষ যোগ ছিল। এই সব বিনিয়োগ করা হয়েছে ২০১৫ সালে। তার পর ২০১৭ সালে সেবির পূর্ণ সময়ের সদস্য হিসাবে নিয়োগ করা হয় মাধবী বুচকে। পরে ২০২২ সালে সেবির চেয়ারপার্সন হন মাধবী।