কাঁওয়ার যাত্রা নিয়ে মামলার শুনানিতে নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলেন বিচারপতি সরস ভেঙ্কটনারায়ণ ভাট্টি।
শেষ আপডেট: 22nd July 2024 19:05
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কাঁওয়ার যাত্রা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে। জল এতদূর গড়িয়েছে যে, সুপ্রিম কোর্টে দফায় দফায় মামলা দায়ের হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডের বিজেপি শাসিত সরকার ঘোষণা করেছিল, কাঁওয়ার যাত্রা চলাকালীন পুণ্যার্থীদের যাওয়ার রাস্তার দুইধারে দোকানিদের নিজেদের নাম ও কর্মীদের নামও দোকানের বাইরে লিখে রাখতে হবে। অবশেষে সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে, এই ধরণের কোনও কাজেই দোকানদারদের বাধ্য করা যাবে না। শুধু তারা পুণ্যার্থীদের দেখাতে বাধ্য থাকবে, তারা কীরকম খাবার তৈরি করছে।
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে আপাতত স্বস্তিতে অগণিত ছোত ব্যবসায়ী। যাদের দিন চলে খাবারের দোকান চালিয়ে। রায়ে বিচারপতি হৃষিকেশ রায় ও এসভিএন ভাট্টি জানিয়েছেন, 'হকার বা খাবারের বিক্রেতারা কী ধরণের খাবার বিক্রি করছেন সেটা তাঁরা লিখে রাখতে পারেন। কিন্তু তাঁদের নাম জানাতে হবে, এমন কোনও নির্দেশিকা কেউ জারি করতে পারেন না।' এই মর্মে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড সরকারকে নোটিস পাঠিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
শুনানি চলার সময় বিচারপতি ভাট্টি বলেন, তিনি কেরলে থাকার সময় এক মুসলিম দোকানদারের রেস্তোরাঁয় নিয়মিত খেতে যেতেন। সেখানে নিরামিষ খাবারই পরিবেশন করা হত। কিন্তু মালিক প্রায় আন্তর্জাতিক মানের পরিচ্ছন্নতা মেনে চলতেন। বিচারপতি ভাট্টির কথায়, 'আমি আদালতের বিচারপতি হিসেবে নামধাম প্রকাশ করতে পারি না। কিন্তু আমি সেই সময় কেরলে কর্মরত ছিলাম। একটি শহরের কথা বলছি। সেখানে এক হিন্দুর নিরামিষ হোটেল ছিল। এক মুসলিমের নিরামিষ হোটেলও ছিল। আমি নিরামিষ খেতে মুসলিম ভদ্রলোকের রেস্তোরাঁতেই যেতাম। খাবারের মান ও গুণের দিক থেকে তিনি আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতেন। রীতিমত দুবাই থেকে কাজ শিখে এসেছিলেন তিনি। যেমন নিরাপদ ছিল, তেমনই ভাল, সুস্বাদু খাবার ছিল। আর তেমনই ছিল তাঁর পরিচ্ছন্নতা। আমিও সেইজন্যই যেতাম।'
শুনানিতে এই শুনে প্রবীণ আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, 'এতে বোঝা যায়, আপনি মেনু কার্ড দেখে হোটেলে যেতেন, নাম দেখে নয়।' অভিষেক তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের আবেদনের ভিত্তিতে শুনানিতে ছিলেন। বিচারপতিরা জিজ্ঞেস করেন, 'নাম দিতেই হবে, এমন কি কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে?' অভিষেক বলেন, সরাসরি না হলেও ঘুরিয়ে এমন একটি 'ক্যামোফ্লাজড' অর্ডার পাস করা হয়েছে, যাতে বোঝা যায়, দোকানিদের নাম দিতে হবে।