শেষ আপডেট: 18th February 2025 23:31
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মহারাষ্ট্রে বিজেপি-শিবসেনা-এনসিপির (মহাযুতি) সরকার গঠনের পর তিন মাসও কাটেনি। শাসক জোটের শরিকদের মধ্যে ক্রমশই অসন্তোষ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। তা এতটাই যে জাতীয় স্তরে সংবাদমাধ্যমগুলির শিরোনাম দখল করে নিয়েছে মারাঠা মুলুকের ঘরোয়া ঝগড়া। মুম্বইতে খেলা ভাঙার খেলা নিয়ে কৌতূহল বাড়তে শুরু করেছে নয়াদিল্লিতেও। কেউ কেউ আবার মনে করছেন, এই চিত্রনাট্য আগেই তৈরি করে রেখেছিল বিজেপি। শিবসেনা তথা একনাথ শিণ্ডে ও এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ারকে ব্যবহার করে নিয়ে এবার তাঁদের ছুড়ে ফেলতে চান ফড়নবিশরা।
এবারের বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে, বিধায়ক ও মন্ত্রীদের নিরাপত্তা কমানোর সিদ্ধান্ত ঘিরে অসন্তোষ।
সম্প্রতি রাজ্যের স্পেশাল প্রোটেকশন ইউনিট বিধায়ক ও মন্ত্রীদের নিরাপত্তা পর্যালোচনা করেছে। তাতে দেখা গেছে, বিশেষ করে একনাথ শিন্ডের শিবিরের নেতাদের নিরাপত্তা স্তর কমানো হয়েছে। ২০২২ সালে শিন্ডের নেতৃত্বাধীন সরকার বিদ্রোহী বিধায়কদের ওয়াই ('Y') ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দিয়েছিল। কিন্তু এখন সেই সুবিধা অনেকটাই কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা শিন্ডে গোষ্ঠীর মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করেছে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ ও উপ-মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনের পর তাঁদের ক্ষমতার ভারসাম্য বদলেছে, যা মহাযুতির স্থায়িত্বই নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
রাজ্যে অভিভাবক মন্ত্রী তথা গার্জিয়ান মিনিস্টার নিয়োগ নিয়ে আর এক দফা বিতর্ক তৈরি হয়েছে। রায়গড় ও নাসিক জেলার অভিভাবক মন্ত্রীর পদ শিবসেনার না পাওয়া নিয়ে শিন্ডে শিবির অসন্তুষ্ট। একইভাবে, এনসিপির অদিতি টাটকর ও বিজেপির গিরিশ মহাজনকেও অভিভাবক মন্ত্রীর তালিকা থেকে বাদ দেওয়ায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
সম্প্রতি কুম্ভ মেলা নিয়ে ফড়নবিশের ডাকা গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে যাননি শিন্ডে। বরং, তিনি আলাদাভাবে নিজেই বৈঠকের আয়োজন করেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এটি ফড়নবিশের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ জানানোর বার্তা।
তা ছাড়া ইদানীং উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠীর নেতারা ফড়নবিশের সঙ্গে একাধিকবার দেখা করেছেন। একইভাবে, দিল্লিতে শরদ পওয়ার একনাথ শিন্ডেকে পুরস্কার দিয়েছেন, যা মহাযুতির অভ্যন্তরীণ সমীকরণকে নতুন মোড় দিয়েছে।
সর্বোপরি রাজ ঠাকরের মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার (এমএনএস) সঙ্গে বিজেপির সম্ভাব্য জোট নিয়েও আলোচনা চলছে। ফড়নবিশ ও রাজ ঠাকরের সাম্প্রতিক বৈঠক সেই জল্পনাকে আরও উস্কে দিয়েছে।
তবে একনাথ শিন্ডে বলেছেন, “ফড়নবিশের সঙ্গে আমার কোনও দ্বন্দ্ব নেই, আমরা উন্নয়নের জন্য একসঙ্গে কাজ করছি।” রাজনৈতিক মহল যদিও মনে করছে, মহাযুতির অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন আগামী দিনে আরও বাড়বে। বিচ্ছেদ অনিবার্যও হয়ে উঠতে পারে।