শেষ আপডেট: 17th March 2025 22:51
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কাজের লোভ দেখিয়ে ভিন রাজ্য থেকে নাবালকদের নিয়ে এসে বন্দী করে শ্রমিক (Bonded Labour) হিসাবে কাজ করতে বাধ্য করার অভিযোগ। বিহারের বাসিন্দা এক মায়ের (Delhi Police) তৎপরতায় ১২ জন ছেলেকে নবজন্ম দিল দিল্লি পুলিশ (Delhi Police)।
দিল্লিতে কাজে এসে ছেলেদের খুঁজে না পেয়ে বিহারের দুই পরিবার দিল্লি পুলিশের দ্বারস্থ হন। অভিযোগ জানান, তাঁদের সন্তানদের প্রলোভন দেখিয়ে দিল্লিতে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু তাঁদের উদ্ধারে যেতেই সামনে এল ভয়াবহ ছবি।
জানা গিয়েছে, দিল্লির সদর বাজার এলাকার সরু, ঘনবসতিপূর্ণ গলিতে অবস্থিত কয়েকটি দোকানে তল্লাশি চালিয়ে ১২ জনকে উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু জানালাবিহীন বেসমেন্টের উপরে যেতেই চোখ কপালে ওঠে তদন্তকারীদের। নজরে আসে কমপক্ষে ১৫×৬ ফুটের প্রায় ১২ জন ছেলে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। ঘরের ছবি সামনে এনেছে পুলিশ। যেখানে দিনরাত এক করে জোর করে কাজ করতে বাধ্য করা হত সবাইকে।
বিহারের সীতামারহির বাসিন্দা ১১ বছর বয়সি এক শিশুর মায়ের অভিযোগ, তাঁর সন্তানকে প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু বহুদিন পর নিজের সন্তানকে দেখে চুপ করে থাকতে পারেননি তিনি। শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে চাইলেও ছেলের অবস্থা দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান তিনি।
আরেক বিহারের বাসিন্দা তাঁর ১৫ বছর বয়সি ছেলেকে খুঁজে পেতে পুলিশের দ্বারস্থ হন। জানা গিয়েছে, ৩ মার্চ অভিযোগের ভিত্তিতে সদর বাজার এলাকার সাতটি দোকান মালিকের বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়। তারপরই ঘটনার তদন্তে নেমে নাবালকদের উদ্ধার করে পুলিশ।
দোকান মালিকদের বিরুদ্ধে শিশুদের যত্ন ও সুরক্ষা আইনের ৭৯ ধারা, শিশু ও কিশোর শ্রম আইনের ৩ এবং ১৪ ধারায় দায়ের হয় মামলা।
ইতিমধ্যে ছেলেদের বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। আগামীদিনে সঠিক বয়স নির্ধারণের জন্য তাদের হাড়ের পরীক্ষাও করা হতে পারে বলে খবর। যদিও ঘটনায় পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
বিহারের সীতামারহির ১১ বছর বয়সি ছেলেটির মায়ের অভিযোগ, তাঁর বাচ্চাকে ১২ হাজার টাকার প্রলোভন দেখিয়ে এখানে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু মাসের পর মাস গড়ালেও হাতে টাকা আসা তো দূর একবারই তাঁদের হাতে ৫০০ টাকা ধরিয়ে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই ছেলের পাত্তা পাওয়া যাচ্ছিল না।
এমনকি ঠিকাদার সংস্থার বিরুদ্ধে মারধরের পাশাপাশি ভোর ৪টে থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কাজ করতে বাধ্য করানোর অভিযোগ উঠেছে। এমনকি তাদের ঠিকমতো ঘুমোতেও দেওয়া হয়নি। সপ্তাহে একবার খাবারের জন্য মাত্র ১,০০০ টাকা দেওয়া হত। খাবার আনা ছাড়া তাদের বাইরে পা রাখার অনুমতি ছিল না। উদ্ধার হওয়া ছেলেদের মধ্যে অনেকের অভিযোগ, ঠিকাদাররা জোর করে মদ খেতে বাধ্যও করেছে।