Date : 11th Jul, 2025 | Call 1800 452 567 | info@thewall.in
Eng vs Ind: বুমরাহর দাপটের পর ভারতকে টানছে রাহুল-পন্থ জুটিঘটকালির ছকে প্রেমের ফাঁদ! ম্যাট্রিমনি সাইটে পরিচয়, ৪৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে পগারপার পাত্রফের শহরে সিভিক ভলান্টিয়ারের 'দাদাগিরি'! ৬টি ধারায় মামলাভিন্ন ধর্মে বিয়ে, মেয়ের কুশপুতুল দাহ করলেন বাবা, চাঞ্চল্য রাজগঞ্জেস্ত্রীকে নির্যাতন, পরকীয়ার অভিযোগে পদ খোয়ালেন তৃণমূল ব্লক সভাপতিরাস্তায় যৌন হেনস্থা, ঠাটিয়ে চড় ফতিমাকে! শিউরে ওঠা ঘটনার বিবরণ দিলেন অভিনেত্রীচিকিৎসককে হুমকি, কাঞ্চনের 'অপরাধ' দেখছেন না বিজেপির রাজ্য সভাপতি! দিলেন ব্যাখ্যাওWorld Kebab Day: আজ বিশ্ব কাবাব দিবস, সপ্তাহান্তে লোভাতুর বাঙালির জন্য রইল শহরের ৫ দোকানের হদিসLocal Trains Cancel: আবার একগুচ্ছ লোকাল ট্রেন বাতিল, দুর্ভোগে নিত্যযাত্রীরাছিল তিন, হল চার, পুজোর ছবিতে নাটকীয় এন্ট্রি নিলেন দুঁদে গোয়েন্দা! চিন্তায় প্রযোজকরা
Women and The Indian Constitution

ভারতীয় সংবিধান তৈরিতে অংশ নিয়েছিলেন, জাতীয় আন্দোলনকে জাগিয়ে তোলেন যে নারীরা

ঊনবিংশ শতকের ভারত। মাথা তুলছে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলন। রাজনৈতিক পরাধীনতা ধীরে ধীরে অচল করছে সমাজব্যবস্থাকে। তারই মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষার ক্ষীণ আলো চুঁইয়ে এসে পড়ছে ব্যতিক্রমী কয়েকজনের কাছে। বদলাচ্ছে তাঁদের চিন্তা-চেতনা-মনন।

ভারতীয় সংবিধান তৈরিতে অংশ নিয়েছিলেন, জাতীয় আন্দোলনকে জাগিয়ে তোলেন যে নারীরা

শেষ আপডেট: 25 January 2024 10:26

দ্য ওয়াল ব্যুরো: ‘নারী হয়ে কেউ জন্মায় না, বরং নারী হয়ে ওঠে।’ ১৯৫৯ সালে সিমোন দ্য বোভোয়া বলেছিলেন,  শিশু তার লিঙ্গ সম্পর্কে সচেতন থাকে না। চুলে ফিতে বেঁধে, ফ্রক পরিয়ে, হাতে পুতুল তুলে দিয়ে তাকে ‘নারী’ হিসেবে নির্মাণ করে সমাজ। আদি মানবী ‘লুসি’ (প্রাচীনতম মানবীর জীবাশ্ম) স্বাভাবিক ভাবেই কোনও নারীবাদী মিছিলে সামিল হননি। কারণ, লিঙ্গবৈষম্য সভ্যতার আমদানি করা। ১৭৯২ সালের রক্ষণশীল ইংল্যান্ডেও ‘আ ভিনডিকেশন অফ দ্য রাইটস অব ওম্যান’-এর মতো বই লেখা হয়েছিল। মধ্যযুগের চন্দ্রাবতী নারীশক্তির গল্প জানতেন না। তিনি ভারতচন্দ্রও পড়েননি। অথচ নারীর প্রেমের স্বাধীনতা তিনি বুঝিয়েছেন অনায়াসে। কাজি বা দেওয়ানের মতো রাষ্ট্রশক্তি এবং পিতৃতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষমতাও দেখিয়েছেন। এসব কাহিনির প্রেক্ষাপট মধ্যযুগীয়। কিন্তু বিবর্তনের ধারা বুঝিয়েছে পরবর্তী সময়ে এসব কাহিনির প্রাসঙ্গিকতা। 

 ‘জাতীয় সংগ্রাম ও নারীর ক্ষমতায়নের প্রশ্ন’ প্রবন্ধে অনুরাধা রায় লিখেছেন, “বিশ দশকের গোড়ায় বঙ্গভঙ্গ তথা স্বদেশি আন্দোলন। এই প্রথম জাতীয় আন্দোলন স্পষ্ট ব্রিটিশ বিরোধী চেহারা নিল। আর এ সবের জন্য মেয়েদের সহযোগিতা দরকার ছিল। ‘বঙ্গলক্ষ্মীর ব্রতকথা’ শুনিয়ে এবং আরও নানাভাবে মেয়েদের কাছে সহযোগিতার জন্য আবেদন রাখা হয়েছিল। ঘরের মধ্যে থেকে নারীভূমিকাতেই তাদের অংশ নিতে বলা হয়েছিল।” 


ঊনবিংশ শতকের ভারত। মাথা তুলছে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী আন্দোলন। রাজনৈতিক পরাধীনতা ধীরে ধীরে অচল করছে সমাজব্যবস্থাকে। তারই মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষার ক্ষীণ আলো চুঁইয়ে এসে পড়ছে ব্যতিক্রমী কয়েকজনের কাছে। বদলাচ্ছে তাঁদের চিন্তা-চেতনা-মনন। সমাজের বাকি অর্ধেক আকাশে যখন রাত্রির নিকষ অন্ধকার, তখন সেই আঁধারে আলো ফুটিয়েছিলেন কয়েকজন নারী। কেউ নিতান্তই ছাপোষা গ্রাম্যবধূ, কেউ শহরের গৃহবধূ, কেউ গোঁড়া মুসলিম পরিবারের মেয়ে, কেউ রাজার কন্যা আবার কেউ পুরুষতান্ত্রিক সমাজের অবগুন্ঠন ছিন্ন করে চাকরিরতা স্বাধীনচেতা।

ভারতের জাতীয় আন্দোলন থেকে সংবিধান রচনা অবধি, প্রতিটা পর্বে নারীদের ভূমিকা বিরাট। আর এতে কোনও সন্দেহ নেই যে, এটা পাশ্চাত্যের চাপিয়ে দেওয়া ‘ফেমিনিজ়ম’ ছিল না, দেশের নারীরা সহজাতভাবেই দেশগড়ার কাজে এগিয়ে এসেছিলেন। নারী স্বাধীনতা বা নারীশক্তির আস্ফালন তাঁরা দেখাননি, অনেক পরিশীলিতভাবেই দেশ, জাতি, সমাজকে আলোর পথ দেখিয়েছিলেন তাঁদের স্বাধীন ভাবনাচিন্তায়।

১৯৪৭-এর ১৫ আগস্ট দেশ স্বাধীন হয়।  ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি ভারতের সংবিধান গৃহীত হলে ভারতকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম গণপ্রজাতান্ত্রিক দেশরূপে ঘোষণা করা হয়। মোট ৩৮৯ জনের কঠিন পরিশ্রমের ফলে রচিত হয় সংবিধান। এই সংবিধান রচনায় ১৫ জন মহিলার অবদান ছিল অনস্বীকার্য। সংবিধান কমিটিতে তাঁদের নাম সোনার হরফে লেখা আছে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন বাঙালি। প্রথমেই উল্লেখ করতে হয় অঘোরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কন্যা সরোজিনী নাইডুর নাম। তিনি কংগ্রেসের প্রথম মহিলা সভাপতি। ভারতের প্রথম মহিলা গভর্নরও। স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দিয়ে একাধিকবার জেলেও যেতে হয়েছে তাঁকে। ১৯১৭ সালে উইমেন ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ছিলেন তিনি। নারীদের ভোটাধিকারের দাবিতে এই সংগঠন তৈরি হয়েছিল যার সভাপতি ছিলেন অ্যানি বেসান্ত। ১৯২০ সালে মহাত্মা গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি।

পূর্ণিমা বন্দোপাধ্যায়ের অবদানও কম নয়। তিনি ছিলেন কংগ্রেসের এলাহাবাদ কমিটির সম্পাদক। সত্যাগ্রহ এবং ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগ দিয়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন। 

কংগ্রেসের সদস্য পূর্ববঙ্গের মেয়ে মালতী চৌধুরীর নামও চলে আসে এখানে। বিশ্বভারতীর ছাত্রী ছিলেন মালতীদেবী। অংশ নিয়েছিলেন লবণ সত্যাগ্রহে। মহাত্মা গান্ধী ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন তিনি। অবস্থাপন্ন ঘরের মেয়ে ছিলেন মালতীদেবী। ব্রাহ্মপরিবারে জন্ম তাঁর। ঘরের নিশ্চিন্ত আরাম ছেড়ে স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৩০ সালে অসহযোগ আন্দোলনের মুখ ছিলেন। ১৯৪২-এ ভারত ছাড়ো আন্দোলনেও যোগ দেন। একাধিকবার জেলে যেতে হয়েছিল তাঁকে।

সরোজিনী নাইডু, মালতী চৌধুরীর মতো নারী অধিকার নিয়ে সোচ্চার ছিলেন লীলা রায়ও। অসমের মেয়ে হলেও কলকাতার বেথুন কলেজের স্নাতক ছিলেন। ১৯৪৭ সালে জাতীয় মহিলা সমিতি তৈরি করেছিলেন। পড়াশোনায় তুখোর ছিলেন লীলাদেবী। পদ্মাবতী স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন তিনি। তিনিই ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম এমএ ডিগ্রিধারী। ১৯৪১ সালে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোসের অন্তর্ধানের পরে তিনি ও তাঁর স্বামী অনিল রায় উত্তরভারতের ফরওয়ার্ড ব্লক সংগঠনের দায়িত্ব নিয়েছিলেন। 

সংবিধান কমিটির আরও এক সদস্য ছিলেন লন্ডন স্কুল অফ ইকনমিক্স-এর স্নাতক রেণুকা রায়। ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত সেন্ট্রাল লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলির সদস্য ছিলেন। ১৯৫২-৫৭ পর্যন্ত তিনি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য ছিলেন।
দক্ষিণের রাজ্যগুলি থেকেও একাধিক মহিলা নির্বাচিত হয়েছিলেন সংবিধান কমিটিতে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন কেরলের আম্মু স্বামীনাথন এবং অ্যানি মাসকারেন। ত্রিবাঙ্কুর স্টেট কংগ্রেসের প্রথম মহিলা সদস্য অ্যানি স্বাধীনতা আন্দোলনের নেত্রী ছিলেন। অনেকবার জেলে যেতে হয়েছিল তাঁকে। কেরলের ক্যাথলিক পরিবারে তাঁর জন্ম। কেরল থেকে প্রথম মহিলা সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন অ্যানি। সেটা ছিল ১৯৫১ সাল। ১৯৪৯ থেকে ৫০ সাল অবধি স্বাস্থ্য ও বিদ্যুৎমন্ত্রী হিসেবেও কাজ করেছেন।

আম্মু স্বামীনাথন বা এভি আম্মাকুটি স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন নেত্রী ও ভারতীয় গণপরিষদের সদস্য ছিলেন। ১৯৪৬-এ ইনি মাদ্রাজ থেকে কন্সটিটুয়েন্ট অ্যাসেম্বলির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫২ সালে লোকসভায় ও ১৯৫৪ সালে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালে আন্তর্জাতিক মহিলা বর্ষের উদ্বোধনে ‘মাদার অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে সম্মানিত করা হয় তাঁকে।  
সংবিধান কমিটিতে কোচির মেয়ে দাক্ষায়ণী বেলায়ুধানের অবদান ভোলার নয়। কেরলে দলিতদের বঞ্চনার বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলেন এই দলিত নেত্রী। ১৯৪৫ সালে কোচির লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলির সদস্য হিসেবেও নির্বাচিত হয়েছিলেন এই দলিত নেত্রী।

ভোলা যাবে না দুর্গাবাই দেশমুখের কথাও। রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বরাবর। নারীশিক্ষা ও অধিকারের জন্য লড়াই করেছেন। রাজামুন্দ্রিতে বালিকা হিন্দি পাঠশালা শুরু করেছিলেন। তিনি ছিলেন একাধারে স্বাধীনতা সংগ্রামী, আইনজীবী, সামাজসেবী। ভারতের সংবিধান পরিষদ এবং ভারতের পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ছিলেন। ১৯৩৬ সালে অন্ধ্র মহিলা সভা তৈরি করেন, মাত্র এক দশকের মধ্যেই যা গোটা মাদ্রাজ শহরের শিক্ষা এবং মানবকল্যাণের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছিল। ১৯৭৫ সালে পদ্মবিভূষণে সম্মানিত করা হয়েছিল তাঁকে।

সংবিধান কমিটিতে যে দুই মহিলার কথা না বললেই নয় তাঁরা হলেন-- ভারতের প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী সুচেতা কৃপালনী এবং অন্যজন খোদ জহরলাল নেহেরুর বোন বিজয়লক্ষ্মী পণ্ডিত। ১৯৪০ সালে কংগ্রেসের মহিলা শাখার সূচনা হয়েছিল সুচেতাদেবীর হাত ধরেই। ১৯৪২ সালে ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৭ পর্যন্ত তিনি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।

বিজয়লক্ষ্মী পণ্ডিত সম্পর্কে ছিলেন জওহরলাল নেহরুর বোন। ভারতের অন্যতম অগ্রণী নারী চরিত্র ছিলেন বিজয়লক্ষ্মী। তাঁর আসল নাম ছিল স্বরূপ কুমারী নেহরু। ১৯৪১ থেকে ১৯৪৩ সাল অবধি সর্বভারতীয় মহিলা সম্মেলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন প্রথম মহিলা ক্যাবিনেট মন্ত্রী। ১৯৩৭ সালে তিনি প্রাদেশিক আইনসভায় নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক জীবনে একাধিকবার নানা দেশে ভারতের রাষ্ট্রদূত নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ সভার প্রথম মহিলা সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৪৬ সালে তিনি সংযুক্ত প্রদেশ (United Province) গণপরিষদের সদস্যা নির্বাচিত হন। 


ভারতের প্রথম স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজকুমারী অমৃত কৌরও ছিলেন সংবিধান কমিটিতে। ভারতের শীর্ষ চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান এইমস (AIMS) ছাড়াও টিউবারকুলোসিস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া, সেন্ট্রাল লেপ্রসি অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি। ১৯২৭ সালে অমৃত অল ইন্ডিয়া উইমেন'স কনফারেন্স প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পরবর্তী ১৯৩০ সালে তিনি সচিব এবং ১৯৩৩ সালে সভাপতি হয়েছিলেন। ১৯৩০ সালে লবণ সত্যাগ্রহে অংশ নেওয়ার জন্য তাঁকে জেলে যেতে হয়। মহাত্মা গান্ধীকে অনুসরণ করেছেন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির এই প্রাক্তনী। ১৯৩৪ সালে মহাত্মা গান্ধীর আশ্রমে বাস করতে শুরু করেন। রাজপরিবারে জন্ম হলেও অত্যন্ত সাধারণভাবে আশ্রমে জীবন কাটিয়েছেন তিনি। ১৬ বছর ধরে মহাত্মা গান্ধীর ঘনিষ্ঠ সচিবদের একজন ছিলেন তিনি। ১৯৩৭ সালে আইএনসির প্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরবর্তীকালে ব্রিটিশ বিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য তাঁকে আবারও জেলে যেতে হয়েছিল।

সংবিধান কমিটিতে আরও তিনজন মহিলার নাম না করলেই নয় যাঁদের নিষ্ঠা ও পরিশ্রম সমাজকে পরিপূর্ণ করেছিল। মহিলার। ‘অল ইন্ডিয়া উইমেন’স কনফারেন্স’-এর প্রেসিডেন্ট হংসা জীবরাজ মেহতা, রাজপরিবার ছেড়ে আইন অমান্য আন্দোলনে যোগ দেওয়া কমলা চৌধুরী এবং কমিটির একমাত্র মুসলমান মহিলা সদস্য বেগম আইজাজ রসুল ভারতের সংবিধান রচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ইংল্যান্ডে সাংবাদিকতা ও সমাজবিদ্যায় শিক্ষা নিয়েছিলেন হংসা, তিনি ছিলেন লেখিকা। গুজরাতি ভাষায় ছোটদের জন্য অনেক বই লেখেন। তিনি উপদেষ্টা কমিটি এবং মৌলিক অধিকার বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য ছিলেন। দেশ সেবিকা নামে একটি দলও গড়েছিলেন। ১৯৪৫-৪৬ সালে সর্বভারতীয় মহিলা সম্মেলনের সভাপতি হন। ১৯৬০ সাল অবধি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্ব সামলেছেন। ১৯৪৭-৪৮ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনে ভারতীয় মহিলা প্রতিনিধি হিসেবে লিঙ্গ সমতার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রথম আলোচনা করেন তিনি।
রাজ পরিবার ছেড়ে ১৯৩০-এ আইন অমান্য আন্দোলনে অংশ নেন কমলা চৌধুরী। ৫৪তম অধিবেশনে অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির সভাপতি ছিলেন তিনি। বেগম আইজাজ রসুল ১৯৩৭ সালের নির্বাচনে তিনি অসংরক্ষিত আসন থেকে সফলভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এবং উত্তর প্রদেশ বিধানসভায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৫২ সাল পর্যন্ত তিনি এর সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৩৭ থেকে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত কাউন্সিলের ডেপুটি প্রেসিডেন্টের পদে দায়িত্ব সামলেছেন। 

সংবিধান কমিটি বা সমাজের বিভিন্ন উচ্চপদ শুধু নয়, এমন অনেক নারীই ছিলেন যাঁরা অবগুণ্ঠন ছিন্ন করে দেশের মেয়েদের নবজীবন দিয়েছিলেন। বাংলার নিরুপমা দেবী, অনুরূপা দেবী, মহারাষ্ট্রের কাশিবাঈ কানিতকর মেয়েদের কথা লিখেছেন। কাদম্বিনী গাঙ্গুলি, আনন্দীবাঈ যোশীরা কত শত মানুষকে মৃত্যুমুখ থেকে ফিরিয়ে এনেছেন। ঠাকুর পরিবারের স্বর্ণকুমারী দেবী, পুণের পণ্ডিতা রমাবাঈ সরস্বতী নারী সমিতি গড়ে তোলেন, বিভিন্ন প্রকাশ্য সমাবেশে নানারকম বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখা শুরু করেন। ভারতীয় মহিলাদের মনে স্বাধিকার এবং গণতান্ত্রিক চেতনা সঞ্চার করাই ছিল তাঁদের উদ্দেশ্য।


ভিডিও স্টোরি