ফাইল ছবি
শেষ আপডেট: 19 March 2025 09:00
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মহারাষ্ট্রের নাগপুরে (Nagpur) হিংসার আগুন জ্বলছে। মুঘলসম্রাট ঔরঙ্গজেবের সমাধি (Aurangzeb’s Tomb) সরানোর দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্ফু জারি করেও লাভ কিছুই হচ্ছে না। জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে একের পর এক গাড়ি। সময় যত গড়াচ্ছে সেখানকার মানুষজন বুঝে উঠতেই পারছেন না বাড়ি থেকে বেরিয়ে কীভাবে সোজা হাসপাতালে (Hospitalised) ভর্তি হচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা।
অভিযোগ, ইফতার সেরে সেহরির জন্য দুধ ও দই আনতে গিয়ে গুরুতর আহত ১৭ বছর বয়সি এক যুবক। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাঁকে। অন্যদিকে কাজের জন্য রাতে স্টেশনে ট্রেন ধরতে গিয়ে বিপদে পড়েছেন এক শ্রমিক। অভিযোগ, বাড়ি থেকে বেরলে কিছুক্ষণ পর সোজা হাসপাতাল থেকে পরিবারের কাছে ফোন আসে।
জানা গিয়েছে, মোমিনপুরার কাছে গার্ড লাইনের বাসিন্দা ১৭ বছর বয়সি রাজা ইউনুস খানকে মা রাত ১০টা ৩০ নাগাদ সেহরির জন্য দুধ এবং দই কিনতে পাঠিয়েছিলেন। পরদিন সকাল ১১টা ৩০ টার দিকে ইন্দিরা গান্ধী সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়ার মা একটি ফোন পান। জানতে পারেন তাঁর ছেলেকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রাজার মায়ের অভিযোগ, ছেলে বাড়ির কাছেই দুধ কিনতে গিয়েছিল, তাকেও ছাড়া হয়নি। রাতে বেরলেও পরদিন সকাল পর্যন্ত বাড়িতে না ফেরায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। পরে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ছেলেকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। যেখানেই ভেন্টিলেটরে রয়েছে সে। তবে কী কারণে এমন অবস্থা হল বুঝে উঠতেই পারছেন না মা।
অন্যদিকে, বড়ে নওয়াজ নগরের বাসিন্দা ইমরান আনসারি তাঁর বড় ভাই ইরফান আনসারির আশঙ্কাজনক অবস্থা দেখে হতবাক। পেশায় লোহার ঝালাই মিস্ত্রি ইরফান সোমবার রাত ১১টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। নাগপুর স্টেশন থেকে ইটারসির উদ্দেশ্যে রাত ১টার ট্রেনে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু ছত্রপতি সম্ভাজিনগর জেলায় ঔরঙ্গজেবের সমাধি অপসারণের জন্য বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি।
ইমরান আনসারি জানান, রাতের দিকে ইন্দিরা গান্ধী সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে পরিবারকে ফোন করে জানান হয় তাঁদের বাড়ির ছেলেকে জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ইরফানের মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে এবং তাঁর একটি পা ভেঙে গিয়েছে। বর্তমানে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা চলছে তাঁর। যদিও ঘটনার পর পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। কারণ ইরফানের সঙ্গে ঠিক কী ঘটেছিল তা এখনও জানা যায়নি। তবে দাদাকে সুস্থ করে তুলতে মরিয়া ইমরান।
এদিকে বারবার আবেদন দেবেন্দ্র ফড়ণবীস শান্তিবজায় রাখার আবেদন জানালেও লাভ হয়নি। তবে নাগপুর পুলিশের তরফে অশান্তির কারণ হিসেবে গুজবকেই দায়ি করা হয়েছে।