প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ঘটনার সময় অভিযুক্ত প্রীতিক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন এবং স্ত্রীকে নিয়ে একটি পার্টি থেকে ফিরছিলেন।
ছবি সংগৃহীত
শেষ আপডেট: 17 May 2025 18:40
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গাড়ির ভিতরে বসে খাবার দোকান থেকে খাবার এনে খাওয়া বা গাড়িতে বসে আড্ডা দেওয়া প্রায়শই দেখা যায়। আজকাল এটা খানিকটা টেন্ড। তাই পাল্লা দিয়ে গাড়িতে গাড়িতে খাবার পৌঁছে দেওয়ার জন্য দোকানগুলোও লোক রাখে। কিন্তু গাড়িতে বসে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা বা দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কাউকে কিছু কিনে দিতে বলা কার্যত বিরল। তাই গাড়ি থেকে কাউকে এমন প্রস্তাব দিলে যে চমকাবেই। চমকেছিলেন বছর ২৯-এর এইচএন সঞ্জয়ও। তাই সিগারেট কিনে দেওয়ার প্রস্তাবে রাজি হননি।
কিন্তু এই সামান্য জিনিস নিয়ে গাড়ি চালক ও ওই আইটি কর্মীর মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। বিলাসিতা ও অলসতা নিয়ে দু-চারটে কথাও তাঁকে শোনান যুবক। ব্যাস, গায়ে লেগে যায় চালকের। তিনি পরে চড়াও হন যুবকের ওপর। বেঙ্গালুরুর রাস্তায় গাড়ি নিয়ে পিষে দেন তাঁকে। বাড়ির ফেরার বদলে তাঁর জায়গা হয় হাসপাতালে। পরে সেখানেই মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, বেঙ্গালুরুর কনকপুরা রোডের বসন্তপুরা ক্রস এলাকার এটি ঘটনা। নিহত যুবকের নাম এইচএন সঞ্জয় (২৯)। তিনি বেঙ্গালুরুর বজরাহল্লি এলাকার বাসিন্দা ও সফটওয়্যারের কোম্পানিতে চাকরি করতেন । অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম প্রীতিক (৩১), তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় ম্যানেজারের পদে কর্মরত এবং রাজারাজেশ্বরী নগরের বাসিন্দা।
১০ মে রাতের দিকে কাজের ফাঁকে কিছুটা সময় বের করে সঞ্জয় তাঁর বন্ধু চেতন পুজামাথের সঙ্গে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। ঘটনার সময় রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই একটি গাড়িতে করে সেখানে আসেন অভিযুক্ত প্রীতিক। গাড়ি থেকে সঞ্জয়কে রাস্তার পাশে থাকা দোকান থেকে সিগারেট কিনে দেওয়ার অনুরোধ জানান।
সঞ্জয় এই অনুরোধে রাজি না হয়ে উল্টে প্রীতিকের আচরণের কড়া সমালোচনা করেন। এই নিয়ে দু’জনের মধ্যে তীব্র বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। আশপাশের লোকজন তৎক্ষণাৎ হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। কিন্তু প্রীতিকের রাগ কমেনি। গাড়ি নিয়ে তিনি ঘটনাস্থল ছেড়ে চলে যান কিন্তু কিছুটা দূরে গিয়ে গাড়ি পার্ক করে অপেক্ষা করতে থাকেন।
কিছুক্ষণ পর সঞ্জয় ও তাঁর বন্ধু চেতন মোটরসাইকেলে করে অফিস থেকে বাড়ির দিকে রওনা দেন। ঠিক সেই সময়, পেছন দিক থেকে প্রীতিক তাঁর গাড়ি নিয়ে বাইকটিতে সজোরে ধাক্কা মারেন। সঞ্জয় রাস্তার ধারে পড়ে গিয়ে মাথায় গুরুতর চোট পান। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার মৃত্যু হয়। চেতন, যিনি সঞ্জয়ের বাইকে পিছনে বসে ছিলেন, তিনিও মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন এবং বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ঘটনার সময় অভিযুক্ত প্রীতিক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন এবং স্ত্রীকে নিয়ে একটি পার্টি থেকে ফিরছিলেন। পুরো ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ ইতিমধ্যেই পুলিশ সংগ্রহ করেছে এবং অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে মামলা রুজু করেছে পুলিশই।