শেষ আপডেট: 9th April 2025 14:34
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গোল্ড লোন সংক্রান্ত নিয়মনীতি কড়া করতে চলেছে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (RBI)। গত এক বছরে এই খাতে অভূতপূর্ব বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে খুব শীঘ্রই গোল্ড লোন নিয়ে বিস্তৃত নির্দেশিকা আনা হবে বলে জানালেন আরবিআই গভর্নর সঞ্জয় মালহোত্রা।
২০২৫ সালের জানুয়ারির হিসেব অনুযায়ী, ব্যাঙ্ক ও এনবিএফসি (নন-ব্যাঙ্কিং ফিনান্সিয়াল কোম্পানি)-গুলির দেওয়া সোনার ঋণের মোট পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১.৭৮ লক্ষ কোটি টাকা, যা গত বছরের তুলনায় ৭৬.৯ শতাংশ বেশি। সোনার দাম বাড়ার সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে এই ব্যবসা।
ব্যাঙ্ক এবং এনবিএফসি-র জন্য এই খাতটি লাভজনক হয়ে উঠেছে, কারণ ঋণগ্রহীতা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে তারা সেই সোনা নিলামে তুলতে পারে। বর্তমানে, পুনরায় ঋণ নেওয়ার জন্য বা সময়সীমা বাড়াতে হলে ঋণগ্রহীতাদের মূল টাকা এবং সুদ সম্পূর্ণ মিটিয়ে দিতে হয়।
গোল্ড লোন নিয়ে নানা কার্যকলাপ পর্যালোচনা করে রিজার্ভ ব্যাংক একাধিক অনিয়মেরও খোঁজ পেয়েছে। উল্লেখযোগ্য ত্রুটিগুলির মধ্যে রয়েছে, ঋণ সংগ্রহ এবং মূল্যায়নের ক্ষেত্রে তৃতীয় পক্ষের অনিয়ন্ত্রিত হস্তক্ষেপ, গ্রাহকের অনুপস্থিতিতে সোনার মূল্য নির্ধারণ, ঋণগ্রহীতার বিস্তারিত বিবরণ যাচাই না করা, ঋণের ব্যবহারের উপর নজরদারির ঘাটতি, ঋণখেলাপির ক্ষেত্রে গহনা নিলামের সময় স্বচ্ছতার অভাব, Loan-to-Value (LTV) অনুপাতে দুর্বল নজরদারি, ঝুঁকি নির্ধারণে ভুল হিসাব-- ইত্যাদি।
এই অনিয়মগুলি দূর করতে আরবিআই সমস্ত ব্যাঙ্ক ও এনবিএফসি-কে তাদের সোনার ঋণ সম্পর্কিত নীতি, পদ্ধতি এবং রীতিনীতি সমগ্রভাবে পুনর্বিবেচনা করতে বলেছে। কোথায় ফাঁকফোকর রয়েছে তা চিহ্নিত করে দ্রুত সময়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরবিআই আরও বলেছে, যেহেতু সোনার ঋণের পরিমাণ দ্রুত বাড়ছে, তাই এই পোর্টফোলিওতে নজরদারি আরও জোরদার করতে হবে। একইসঙ্গে, তৃতীয় পক্ষ বা আউটসোর্স করা পরিষেবার উপর নিয়ন্ত্রণ আরও শক্তিশালী করতে হবে।
মোদ্দা বিষয়টি হল, সোনার দুনিয়ায় যেভাবে ঋণের পরিমাণ হুহু করে বাড়ছে, তা নিয়ন্ত্রণে আনতে কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। নিয়মনীতি আরও কঠোর হলে গ্রাহকদের হয়তো আরও কিছু যাচাইয়ের ধাপ পেরোতে হবে, তবে তাতে ঋণ পরিষেবা আরও স্বচ্ছ এবং নিরাপদ হবে বলেই আশা বিশেষজ্ঞদের।