শেষ আপডেট: 9th July 2024 16:57
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পুরীর জগন্নাথের শ্রীমন্দিরের রত্নভাণ্ডারের দরজা অবশেষে খুলছে। আগামী রবিবার, ১৪ জুলাই জগন্নাথ মন্দিরের রত্নভাণ্ডার খোলা হবে বলে মঙ্গলবার জানান বিশেষ কমিটির প্রধান বিশ্বনাথ রথ। নতুন বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ওড়িশা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রথের নেতৃত্বে ১৬ সদস্যের প্যানেল গঠন করা হয় রত্নভাণ্ডার নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে।
এদিন এক বৈঠকের শেষে প্রাক্তন বিচারপতি রথ বলেন, রত্নভাণ্ডার খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদি রত্নভাণ্ডারের চাবি পাওয়া যায় ভালো, না পাওয়া গেলেও খোলা হবে দরজা। দীর্ঘদিন তালা না খোলার জন্য চাবি যদি কাজ না করে তাহলে ভাঙা হবে সেই তালা। সরকারি আধিকারিকরা এখন রথযাত্রার জন্য ব্যস্ত রয়েছেন।
মন্দির কমিটির মুখ্য প্রশাসক ১৪ জুলাই কমিটির হাতে চাবি তুলে দেবেন। রথ জানান, দরজা খোলার বিষয়ে আশা করি সরকার প্রয়োজনীয় অনুমতি দেবে। রথ সাংবাদিকদের সামনে বলেন, রত্নভাণ্ডার খোলা, ডুপ্লিকেট চাবি নিয়ে সামগ্রিক কথাবার্তা হয়েছে। তালা ভাঙার বিষয়ে সরকারের অনুমতি চাওয়া হচ্ছে। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে রত্নভাণ্ডারের ভিতর জল চুঁইয়ে পড়ছে। সুতরাং চটজলদি তার মেরামতি প্রয়োজন। কিন্তু সেই কাজের জন্য জগন্নাথের সমস্ত অলঙ্কারাদি অন্যত্র সরাতে হবে। সে বিষয়েও সরকারের পরামর্শ ও অনুমোদন চাওয়া হবে। তিনি আরও জানান, রত্নাবলির মূল্য নির্ধারণ ও কোনটি কোন ধাতু বা রত্ন, তা চেনার কাজে সাহায্য করার জন্য জহুরির সাহায্য নেওয়া হবে।
পুরী সার্কলের এএসআইয়ের সুপার দিবিশাদ গড়নায়ক জানান, রত্নভাণ্ডারের গঠনগত অবস্থা খতিয়ে দেখবে ভারতের পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ। গতবছর বাইরের দেওয়ালের লেজার স্ক্যানিংয়ে বেশকিছু ফাটল এবং জোড় দেওয়া এলাকায় চিড় ধরেছে বলে দেখা গিয়েছিল। এই ফাটলগুলি থেকে বৃষ্টির জল চুঁইয়ে ভিতরে পড়তে পারে। সবমিলিয়ে বহু প্রাচীন এই রত্নভাণ্ডারের অবস্থা ভালো নয় বলে জানান গড়নায়ক।
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের গর্ভগৃহের কাছেই রয়েছে রত্নভাণ্ডার। এটাই মন্দিরের সবথেকে দামি প্রকোষ্ঠ। যুগ যুগ ধরে এখানে জমা হয়ে রয়েছে, জগন্নাথদেব, বলভদ্র ও সুভদ্রার রত্নরাজি। হিরে, পান্না, চুনী, মুক্তোখচিত স্বর্ণ ও রৌপ্যের অলঙ্কার। যার কিছুর দাম ধরা যেতে পারে, আর অসংখ্য এমন গয়না আছে, এখন যা দুষ্প্রাপ্য। মূল্যের নিক্তিতে যাকে ধরা যায় না।
এই রত্নভাণ্ডারের দুটি প্রকোষ্ঠ আছে। বাইরেরটি বিভিন্ন পালাপার্বণে খোলা থাকে। যেমন জগন্নাথের স্বর্ণবেশের সময়। কিন্তু, অন্দর মহলটি ১৯৭৮ সাল থেকে বন্ধ পড়ে রয়েছে। জগন্নাথ মন্দিরের আইন অনুযায়ী, তিন বছর অন্তর এই প্রকোষ্ঠের অডিট হওয়ার কথা। কিন্তু, বন্ধ পড়ে থাকায় সেই থেকে কোনও অডিটও হয়নি।