শেষ আপডেট: 8th March 2025 10:51
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সোনা পাচারে অভিযুক্ত জনপ্রিয় কন্নড় অভিনেত্রী রানিয়া রাওকে জেরার সময় মারধর করা হয়েছে? আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মুখে এই প্রশ্নেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে মহিলাদের সম্পর্কে দেশের আইন ব্যবস্থা নিয়ে। আদালতের নির্দেশে ডিরেক্টরেট অফ রেভেনিউ ইন্টেলিজেন্সের হেফাজতে থাকা রানিয়ার চোখের নীচে ফোলা, কালশিটে দাগের ছবি ভাইরাল হতেই প্রশ্নের মুখে পড়েছে তদন্তকারী সংস্থা। রানিয়ার যে ছবি প্রকাশ্যে এসেছে তাতে পরিষ্কার যে, অভিনেত্রীকে বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেফতারের সময় অথবা হেফাজতে থাকাকালীন শারীরিক নিগ্রহ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কর্নাটকের রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন নাগলক্ষ্মী চৌধুরি বলেন, কমিশন স্বতঃপ্রণোদিতভাবে তদন্ত চালাতে পারে না। অভিনেত্রীর তরফে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করা হলে তখনই কমিশন পদক্ষেপ করতে পারে। তবে তিনি এও বলেন, যদি কেউ তাঁকে শারীরিক নির্যাতন করে থাকেন তাহলে তাঁর এরকম করা উচিত নয়। এটা ঠিক নয়। কেউ আইন নিজের হাতে নিতে পারে না। আইন আইনের পথে চলবে। তবে হেফাজতে কারও উপর নির্যাতন করার অধিকার কারও নেই। তা সে মহিলাই হন, বা অন্য কেউ। আমি অত্যাচারের পুরোপুরি বিরোধী।
তিনি আরও বলেন, রানিয়া কমিশনের কাছে অভিযোগ জানালে তাঁরা অবশ্যই পদক্ষেপ করবেন। উনি তা না করলে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি লিখতে পারি যাতে তাঁকে সাহায্য করা হয়, যথার্থ তদন্ত চালানো হয় এবং একটি রিপোর্ট দিতে বলতে পারি আমরা। কিন্তু, উনি কোনও অভিযোগ না করায় আমি এর বেশি কিছু বলব না।
শুক্রবার বিদেশ থেকে সোনা পাচারের অভিযোগে ধৃত কন্নড় অভিনেত্রী রানিয়া রাওকে তিনদিনের ডিরেক্টরেট অফ রেভেনিউ বা ডিআরআই-এর হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত। বেঙ্গালুরুর আর্থিক বিষয়ক একটি বিশেষ আদালত তদন্তকারী সংস্থার আর্জির ভিত্তিতে তাঁকে ডিআরআইয়ের হেফাজতে দিয়েছে। শুক্রবার বিচারক বিশ্বনাথ সি গৌড়া এই নির্দেশ দেন। গত সোমবার ডিআরআই বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর থেকে রানিয়াকে হাতেনাতে পাকড়াও করে। প্রথমে তাঁকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হলেও ডিআরআই রাওকে নিজেদের হেফাজতে চায় বৃহস্পতিবার।
ডিআরআই আর্জিতে জানিয়েছিল, এই ঘটনা জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে ভয়ঙ্কর। তাই তাঁকে হেফাজতে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন আছে। কারণ তদন্তকারীদের অনুমান, এই ঘটনার পিছনে শুধু অভিনেত্রী একা নন, একটি বিরাট চক্র আছে। যার সঙ্গে অনেক হোমড়াচোমড়াও থাকতে পারে। এদিকে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় রানিয়া রাও অফিসারদের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন বলে সূত্র জানিয়েছে। তিনি বলেছেন, সোনা পাচার চক্রে জড়িত নন। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে।
অন্যদিকে, রানিয়ার আইনজীবী একটি জামিনের আবেদন করেছিলেন আদালতে। ডিআরআই অভিনেত্রীকে গ্রেফতার করে এক বিচারকের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সেখানে আদালত বসানোর পর তাঁকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ হয়। মঙ্গলবার রাতের ওই ঘটনায় ডিআরআই হেফাজতে চায়নি আদালতের সামনে। যে কারণে তাঁকে জেল হেফাজতে রাখা হয়। আইনজীবীর দাবি, এই অভিনেত্রী বেঙ্গালুরু বাসিন্দা এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যখনতখন তাঁকে পাওয়া যাবে। তাই তাঁকে জামিন দেওয়া হোক।