শেষ আপডেট: 5th December 2024 18:11
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদে দেবেন্দ্র ফড়নবিশের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের মণ্ডপের ছাদের তলায় চাঁদের হাট বসল বৃহস্পতিবার। কে নেই সেই তালিকায়? শহরটার নাম যেহেতু মুম্বই, তাই বাণিজ্য দুনিয়া, গ্ল্যামার জগৎ ও ক্রিকেট দুনিয়ার আশ্চর্য প্রদীপদের একাসনে বসতে দেখা গেল আজাদ ময়দানের অনুষ্ঠানে। সপরিবারে মুকেশ আম্বানি থেকে শাহরুখ খান, সলমন খান, রণবীর সিং, রণবীর কাপুর, শচীন তেন্ডুলকর, তাঁর স্ত্রী অঞ্জলি সহ ঝাঁকে ঝাঁকে তারাদের মেলা বসল নীল আরব সাগরের পাড়ে।
অনুষ্ঠানে আসেন স্বামী সিদ্ধার্থ রায় কাপুরকে নিয়ে বিদ্যা বালন, মাধুরী দীক্ষিত, ভিকি কৌশল, শিখর পাহাড়িয়ার সঙ্গে জাহ্নবী কাপুর, খুশি কাপুরের সঙ্গে আসেন তাঁর বাবা বনি কাপুর, অর্জুন কাপুরও ছিলেন অনুষ্ঠানে। এছাড়াও ছিলেন বিজেপির অসংখ্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী ও দলের নেতারা। তাঁর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, দলের সভাপতি জেপি নাড্ডা, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন প্রমুখ।
বহু সিঁড়ি ভাঙা অঙ্ক পেরিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিশ তৃতীয়বারের জন্য মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হলেন। উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শেষ মুহূর্তে জটের জাল ছিন্ন করে শপথ নিলেন শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডে। এনসিপি-র অজিত পাওয়ারও। ফড়নবিশকে শপথবাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণন।
নাগপুরের কাউন্সিলার থেকে তৃতীয়বারের জন্য মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে। একেবারে সিনেমাটিক উত্থান দেবেন্দ্র ফড়নবিশের জীবনে। মাত্র ৫৪ বছরের জীবনে রাজনৈতিক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে চাণক্য-বুদ্ধিতে পথের নানান কাঁটা উপড়ে ফেলে ফের মুখ্যমন্ত্রীর পাগড়ি মাথায় দিলেন। বুধবারই বিধান পরিষদীয় দলনেতা নির্বাচিত হওয়ার পর দেবেন্দ্র বলেন, এক হ্যায় তো সেফ হ্যায়।
কে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ?
ইন্দিরা গান্ধীর জরুরি অবস্থা জারির সময় তাঁর বাবাকে জেলে পাঠিয়েছিল তৎকালীন কংগ্রেস সরকার। যা কিশোর দেবেন্দ্রর মনে তিক্ত ছাপ ফেলেছিল। নাগপুরের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম। ছাত্র বয়স থেকেই রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের সদস্য হিসেবে তাঁর রাজনীতিতে হাতেখড়ি।
সেই থেকে রাজনীতি করে ১৯৮৯ সালে মাত্র ২২ বছর বয়সে কনিষ্ঠতম কাউন্সিলর নির্বাচিত হন এবং মাত্র ২৭ বছর বয়সে নাগপুরের কনিষ্ঠতম মেয়র হন দেবেন্দ্র। বাবা গঙ্গাধররাও ফড়নবিশকে ইন্দিরা জমানায় জেলে যেতে হওয়ায় দেবেন্দ্র রাগে ইন্দিরা কনভেন্ট নামে স্কুল ছেড়ে দিয়ে সরস্বতী বিদ্যালয় নামে একটি স্কুলে নতুন করে ভর্তি হন। তিনি বিজনেস ম্যানেজমেন্ট পাশ করেন আইনে স্নাতক হওয়ার পর। রাজনীতির শুরুতে দেবেন্দ্রর কাজ ছিল দেওয়ালে পোস্টার সাঁটা ও দেওয়াল লিখন করা। পরপর দুবার নাগপুরের মেয়র হন। ২০১৪ সালে রাজ্যের অষ্টাদশ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে গদিতে বসেন।
উল্লেখ্য, এবার রাজ্যে ১৪৯টি আসনে লড়াই করে ১৩২টি আসনে জিতেছে বিজেপি। যা রাজ্যের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এছাড়াও তদারকি মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের শিবসেনা ৫৭টি এবং অজিত পাওয়ার গোষ্ঠীর এনসিপি ৪১ আসনে জয়ী হয়।