আতঙ্ক এতটাই ভয়াবহ আকার নেয় যে সংশ্লিষ্ট রিজার্ভের ১০টি জোনের মধ্যে ২টি জোনে সাফারিও বন্ধ রাখা হয়।
প্রতীকী ছবি
শেষ আপডেট: 14 May 2025 21:27
দ্য ওয়াল ব্যুরো: তার বিরুদ্ধে রয়েছে দু'দুটি খুনের মামলা। কিন্তু তাকে আটকে রাখার মতো জেল ভূ ভারতে নেই বললেই চলে!
রাজস্থানের রণথম্ভোর টাইগার রিজার্ভ ফরেস্টের ঘটনা। গত রবিবার, রণথম্ভোর ন্যাশনাল পার্কের যোগী মহল এলাকায় কর্তব্যরত অবস্থায় বনরক্ষী দেবেন্দ্র চৌধুরীর মৃত্যু হয়। দেহে একাধিক ক্ষতের আঘাত, কেউ যেন থাবা বসিয়ে মাংস খুবলে নিয়েছে। এর ঠিক আগে ১৬ এপ্রিল রিজার্ভের মধ্যেই ত্রিনেত্র গণেশ মন্দিরের কাছে সাত বছরের এক শিশু-ও একইভাবে মারা যায়। আগুনের গতিতে সে খবর ছড়িয়ে পড়তেই সংশ্লিষ্ট বনাঞ্চলে তীব্র আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়।
আতঙ্ক এতটাই ভয়াবহ আকার নেয় যে সংশ্লিষ্ট রিজার্ভের ১০টি জোনের মধ্যে ২টি জোনে সাফারিও বন্ধ রাখা হয়। এমনকী বনাঞ্চলের মধ্যে থাকা ত্রিনেত্র গণেশ মন্দির, যেখানে নিত্যদিন প্রচুর মানুষের সমাগম হয়, নিরাপত্তার কারণে সেটিও বন্ধ রাখা হয়।
কে এই ঘাতক? তদন্তে নেমে বনকর্তারা নিশ্চিত হন, তাঁদেরই আশ্রয়ে থাকা বাঘিনী অ্যারোহেড এর মেয়ে 'কানকাটি'ই দু'দুটি 'খুন' করেছে। মানুষ খেকো এই বাঘিনি কন্যেকে বাগে আনতে রীতিমতো বেগ পেতে হয় বনকর্তাদের।
সূত্রের খবর, গত কয়েকদিনের চেষ্টায় অবশেষে টোপ পেতে ঘুম পাড়ানি গুলিতে নিস্তেজ করা হয় অ্যারোহেডের মেয়েকে। আপাতত খাঁচায় বন্দি সে। 'ঘাতক' বাঘিনিকে কোথায় ছাড়া হবে তা নিয়েও দুশ্চিন্তা কাটছে না বনকর্মীদের। এক বনকর্তা জানান, জখম বাঘিনিকে আপাতত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। শীঘ্রই তাকে গভীর জঙ্গলে ছাড়া হবে।
হঠাৎ বাঘিনি 'কানকাটি' মানুষ খেকো হয়ে উঠল কীভাবে?
এর পিছনে রয়েছে এক কাহিনীও। রাজস্থানের রণথম্ভোর টাইগার রিজার্ভ ফরেস্ট সূত্রের খবর, অ্যারোহেডের বয়স বাড়ায় নিজে শিকারের ক্ষমতা প্রায় হারিয়ে ফেলেছে অনেকদিন। মানবিকতার কারণে তাকে বনাঞ্চলের যোগী মহল এলাকায় নিয়ে যায় বনকর্মীরা। সেখানে অ্যারোহেড ও তার সন্তানের জন্য প্রতিদিনই দু'বেলা খাবার পৌঁছে দিতেন তাঁরা।
বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত এই খাবার দেওয়া এবং মানুষের উপস্থিতিতে খাবার পাওয়ার অভ্যাস অ্যারোহেডের কন্যের মানুষের প্রতি স্বাভাবিক ভীতি নষ্ট করে দেয়। তার ফলস্বরূপ অ্যারোহেডের মেয়ে 'মানুষ খেকো" হয়ে উঠেছে বলেই মনে করছেন তাঁরা।
সুস্থ হয়ে ওঠার পর অ্যারোহেডের কন্যে থুড়ি 'ঘাতক' বাঘিনিকে আবার জঙ্গলে ছাড়া হবে! তারপর সে যদি আবার গভীর বনাঞ্চল থেকে লোকালয়ের মধ্যে ফিরে আসে! তখন...? ভাবলেই শরীর দিয়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে যাচ্ছে বনকর্তাদের!