শেষ আপডেট: 10th April 2025 13:12
দ্য ওয়াল ব্যুরো: এনজিওর আড়ালে মানবপাচার চক্র, গণবিবাহের নামে মহিলাদের কেনা-বেচা। জয়পুরের ঘটনায় তাজ্জব পুলিশও।
জয়পুরের কাছে সুজনপুরা গ্রাম। একটি এনজিওর আড়ালে চলছিল মানবপাচার চক্র। গরিব পরিবারের মেয়েদের গণবিবাহের নামে আনা হত এনজিওতে। তারপর বিয়ের জন্য খোঁজা হত পাত্র। আগ্রহী যুবকদের কাছ থেকে আড়াই লক্ষ-পাঁচ লক্ষ টাকা চাওয়া হত। টাকা দিলেই ওই মেয়েদের বিক্রি করে দেওয়া হত সহজে।
স্থানীয় থানার ইনচার্জ অভিজিৎ পাটিল জানান, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা এবং উত্তরপ্রদেশের গরিব পরিবার থেকে মেয়েদের পাচার করে আনা হত। একটি চক্র তাদের 'গায়ত্রী সর্ব সমাজ ফাউন্ডেশন' নামের ওই এনজিওর মালিকের হাতে তুলে দিত। এরপর মালিক গায়ত্রী ওই মেয়েদের বিবাহের জন্য খোঁজ শুরু করতেন। মেয়েদের 'দাম' নির্ধারিত হত তাঁদের গায়ের রঙ, উচ্চতা ও বয়স অনুযায়ী। নাবালিকাদের বয়স ১৮ বছরের বেশি দেখানোর জন্য ভুয়ো আধার কার্ড তৈরি করতেন গায়ত্রী। এখনও পর্যন্ত প্রায় ১,৫০০ এরও বেশি এধরনের বিয়ে তিনি আয়োজন করেছে বলে জানা গেছে।
গত রবিবার উত্তরপ্রদেশের এক ১৬ বছর বয়সি কিশোরী সুজনপুরার ফার্ম হাউস থেকে পালিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন। ওই মেয়েটির বয়ান অনুযায়ী, পুলিশ ফার্ম হাউসে হানা দিয়ে গায়ত্রী, তাঁর সহযোগী হনুমান এবং আরও দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। ধৃত দুই ব্যক্তির নাম ভগবান দাস এবং মহেন্দ্র, যারা ওই কিশোরীকে 'কিনতে' এসেছিলেন বলে জানা গেছে। পরে তদন্ত করে গায়ত্রীর নামে দশটি মামলা রুজু হয়।
গ্রামবাসীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তাঁরা জানিয়েছেন, এমন কিছুই জানতেন না। শুধু জানতেন ওই ফার্ম হাউসে গরিব পরিবারের মেয়েদের জন্য গণবিবাহের আয়োজন করা হয়। আর ফার্ম হাউসটি গ্রাম থেকে অনেকটা দূরে হওয়ায় ভিতরে কী চলছে, সে সম্পর্কে কোনও ধারণারই ছিল না। প্রায় চার মাস আগে আরও একটি মেয়ে পালিয়ে এসে স্থানীয়দের কিছু বোঝাতে চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ভাষাগত সমস্যা থাকায় তাঁরা মেয়েটির কথা বুঝতে পারেননি।
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদের খোঁজে তল্লাশি চলছে এবং যারা এর সঙ্গে যুক্ত তাদের কঠোর আইনি শাস্তির মুখোমুখি করা হবে।