শেষ আপডেট: 10th September 2024 12:36
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ট্রেনে করে কোথাও যাওয়ার আগে এখন আতঙ্ক তৈরি হয় অনেকের মনে। যদি আবার দুর্ঘটনা ঘটে! বিগত কয়েক বছরে এমন একাধিক দুর্ঘটনার খবর সামনে এসেছে দেশজুড়ে। বহু মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। কিন্তু রেলের তরফে বলা হচ্ছে, পরপর ট্রেন দুর্ঘটনা চিন্তার বিষয় হলেও এখানে জঙ্গি হামলার কোনও আতঙ্ক নেই। শেষ কয়েক মাসে যে কটি রেল দুর্ঘটনা হয়েছে সেগুলির কোনওটাই জঙ্গি হামলার কারণে হয়নি।
রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, ভারতীয় রেলের ওপর সবসময় হামলার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু তাঁরা আগের থেকে অনেক বেশি সতর্ক হয়েছেন এবং যে কোনও রকম হামলার ইনপুট পেলেই ইন্টালিজেন্সকে শেয়ার করছেন। তারা এও জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত বেশ কয়েকজনকে রেলওয়ে অ্যাক্টের ১৫০ ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি ইতিমধ্যে ৭০-৮০টি ঘটনার তদন্তও সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু কোনওটার সঙ্গেই জঙ্গি হামলার কোনও সংযোগ নেই।
পরিসংখ্যান বলছে, গত এক বছরে ৭ শতাংশ ট্রেন দুর্ঘটনার হার বেড়েছে দেশে। তাহলে এগুলির পিছনে কারণ কী? রেল বলছে, কিছু মানুষ নিজেদের ফুর্তির জন্য রেললাইনগুলিতে অনেক জিনিস ফেলে রাখেন। তার কারণ দুর্ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি দেখা গেছে, এক গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধানের ছেলে ট্রেন লাইনে কিছু ফেলে রেখেছিল। রেলের তদন্তে জানা যায়, খ্যাতি পাওয়ার জন্য এবং সংবাদমাধ্যমে মুখ দেখানোর জন্য সে এমন কাজ করেছিল। পাশাপাশি এও দেখা গেছে, অনেক সময়ে রেললাইনের পাশে লাইন তৈরির নানা সরঞ্জাম ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। এলাকাবাসীর কেউ কেউ এমন কাজ করে থাকেন।
রেললাইনে বসে মদ্যপান করাটাও একটা রীতি হয়ে গেছে। দেশের নানা জায়গার রেলওয়ে ট্র্যাকে বসে অনেকেই মদ খান। রেলের তথ্য বলছে, বেশিরভাগ ২০-২২ বছরের ছেলেরা মদ খেয়ে ট্রেনে হামলা করে। সাম্প্রতিক সময়ে বন্দে ভারত থেকে শুরু করে শতাব্দী এক্সপ্রেসে যে হামলার ঘটনা ঘটেছে তার জন্য এরাই দায়ী। কে কত বেশি ট্রেনের ক্ষতি করতে পারে এমন প্রতিযোগিতাও তাদের মধ্যে চলে বলে জানিয়েছে রেল।
চুরির কারণেও অনেক সময়ে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। রেললাইনের পাশ থেকে চুরি করে দ্রুত লাইনে টপকে পালানোর সময়ে অনেকে ধাক্কা খান। তাতে একদিকে যেমন মৃত্যুর ঘটনা ঘটে, তেমনই ট্রেনেরও ক্ষতি হয়। তবে ট্রেন চালকের উপস্থিত বুদ্ধির জেরে বেশিরভাগ সময়ই এমন দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তারা অন্তত ২ কিলোমিটার দূর থেকে বিষয়টির আভাস পেয়ে ট্রেন থামিয়ে দেন। নেমে দেখেন ট্র্যাকে কোনও ব্যারিকেড আছে কিনা, থাকতে তা সরান। তারপর আরপিএফ-কে খবর দেন।
সম্প্রতি পাকিস্তানের মদতপুষ্ট ফারহাতুল্লাহ ঘোরি যে ২০০২ সালের অক্ষরধাম মন্দির হামলা এবং বেঙ্গালুরুর ক্যাফে হামলার মাস্টারমাইন্ড, সে স্লিপার সেল নিয়ে ভারতে একাধিক জায়গায় হামলার হুমকি দিয়েছে। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই হুমকিবার্তার পরই আরও বেশি সতর্ক হয়েছেন আধিকারিকরা। রেললাইন তদারকি থেকে শুরু করে, ড্রোন নিয়ে নজরদারি সবই বাড়ানো হয়েছে।