শেষ আপডেট: 18th October 2023 13:04
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছেন বহু নামজাদা নেতা। কংগ্রেসের হিসাব বলছে সর্ব ভারতীয় এবং রাজ্যস্তর মিলিয়ে বিগত তিন-চার বছরে সংখ্যাটা দু’শোর বেশি হবে। তবে তাঁদের কেউই হিমন্ত বিশ্ব শর্মা হননি, যিনি আট বছর আগে কংগ্রেস ছেড়ে গিয়েও আগের দলের মুণ্ডপাত বিনা জলস্পর্শ করেন না। বিশেষ করে রাহুল গান্ধীকে আক্রমণে তিনি বিজেপি বাকি নেতাদের ছাপিয়ে গিয়েছেন। বুধবার প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতিকে নিরক্ষর রাজনীতিক বলে নিশানা করেছেন অসমের মুখমন্ত্রী। তাঁর কথায়, রাহুল গান্ধী রাজনীতির কিছু বোঝেন না। তিনি নিরক্ষর ব্যক্তি।
অসমের মুখ্যমন্ত্রীর এমন আক্রমণের কারণ মিজোরামে বিধানসভা ভোটের প্রচারে বিজেপির পরিবারতন্ত্র নিয়ে রাহুলের প্রত্যাঘাত। কংগ্রেস নেহরু-গান্ধী পরিবারের দল—বিজেপির এই প্রচারের পাল্টা হিসাবে রাহুল নিশানা করেন অমিত শাহের পুত্র জয় শাহ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর এবং উত্তর প্রদেশে বিজেপি বিধায়ক পঙ্কজ সিংকে। অনুরাগ হিমাচল প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রেমকুমার ধুমলের পুত্র। পঙ্কজ হলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের ছেলে।
রাহুল তাঁর এবং মা সনিয়া ও বোন প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে বিজেপির এই নেতাদের সন্তানের তুলনা টানায় তাঁকে পরিবারতন্ত্র নিয়েও নিরক্ষর বলেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, রাহুল, সনিয়া কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। প্রিয়ঙ্কা দলের সাধারণ সম্পাদক। তাঁদের সঙ্গে কি পঙ্কজ সিংহের, অনুরাগ ঠাকুরের তুলনা চলে! আর জয় শাহ’র সঙ্গে তো বিজেপির কোনও সম্পর্কই নেই, বলেছেন হিমন্ত।
পাঁচ রাজ্যের ভোটের মুখে পরিবারতন্ত্রের বিষয়টি বিজেপি ফের অস্ত্র করেছে অবশ্য কংগ্রেস নেতা শশী তারুরের একটি মন্তব্যের জেরে। তিরুবনন্তপুরমে শশী সম্প্রতি বলেন, লোকসভা ভোটের পর কংগ্রেস সরকার গড়ার সুযোগ পেলে প্রধানমন্ত্রী হবেন রাহুল গান্ধী। সেই সঙ্গে শশী মন্তব্য করেন, কংগ্রেস আসলে একটি পরিবারের দল। সকলে সেই পরিবারকে গ্রহণ করেছে।
শশীর এই মন্তব্যকে লুফে নিয়ে বিজেপি পাঁচ রাজ্যের ভোটে পরিবারবাদ নিয়ে ঝড় তুলতে চাইছে। উত্তর-পূর্বে ৪০ আসন বিশিষ্ট মিজোরামের ভোটেও পদ্ম শিবির কংগ্রেসের বিরুদ্ধে পরিবারতন্ত্রকে হাতিয়ার করতে গিয়ে শশীর বক্তব্যের ভিডিও প্রচার করা শুরু করেছে। চাপে পড়ে শশী তাঁর মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ওই কথা আমি কোনও জনসভায় বা পাবলিক প্রোগ্রামে বলিনি। বলেছি একটি ঘরোয়া আড্ডায়। সেখানে কংগ্রেসে নেহরু-গান্ধী পরিবারের গুরুত্ব বোঝাতে বলেছি, কংগ্রেসের সঙ্গে মিশে আছে ওই পরিবারের ডিএনএ। এর সঙ্গে দলের কোনও পরিবার নির্ভরতা বোঝায় না। নেহরু-গান্ধী পরিবার তাদের অবদানের জন্যই বিশিষ্টতা অর্জন করেছে শতাব্দী প্রাচীন দলটিতে।
তবে শশী ব্যাখ্যা দেওয়ার আগেই বিজেপি তাঁর মূল বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল করে দিয়েছে। তার পিছনে অবশ্য পরিবারতন্ত্র ছাড়াও ইন্ডিয়া জোটে ফাটল ধরানোর চেষ্টাও আছে। ইন্ডিয়া জোটের তরফে সিদ্ধান্ত হয় প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর বিষয়ে কোনও দলই কোনও নেতার নাম করবে না। সেখানে বৃহত্তম শরিক দলের নেতা রাহুলের নাম প্রস্তাব করায় জোটের নেতারা অনেকেই ক্ষুণ্ণ হয়েছেন। যদিও শশী ব্যাকরণ মেনে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার সুযোগ পেলে প্রধানমন্ত্রী হবেন রাহুল গান্ধী।