শেষ আপডেট: 4th May 2024 11:43
দ্য ওয়াল ব্যুরো: তৃতীয় দফার লোকসভার ভোটে ১৩৫২ জন প্রার্থীর মধ্যে মহিলা রয়েছেন মাত্র ১২৩ জন। যা মোট প্রার্থীর মাত্র ৯ শতাংশ। আগের দু'দফার ভোটে মোট ২৮২৩ প্রার্থীর মধ্যে ছিলেন ২৩৫ জন মহিলা। অর্থাৎ ৮ শতাংশ। এই পরিসংখ্যানকে ধরে দেশ জুড়ে আলোচনা চলছে, ভারত এখনও পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার বাইরে বেরতে পারেনি। কিন্তু, দেশের রাজনীতিতে নারীশক্তির নেতৃত্বের প্রশ্ন যখন আন্তর্জাতিক মঞ্চে উঠে আসে, তখন সবার উঁচুতে গলা ফাটাল ভারত।
রাষ্ট্রসঙ্ঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি রুচিকা কাম্বোজ ভারতে পঞ্চায়েতিরাজ ব্যবস্থায় নারীশক্তির উল্লেখযোগ্য প্রতিনিধিত্বের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন। তিনি বলেন, গ্রামীণ প্রশাসনের মস্ত হাতিয়ার হল পঞ্চায়েতিরাজ। তৃণমূলস্তর থেকে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ নিয়ে এটাই ভারতের অনন্য সাধারণ ব্যবস্থা। আর এই ব্যবস্থায় মহিলারাই অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করছেন।
ভারতের লিঙ্গ-সাম্য অর্থাৎ পুরুষ-নারী সমান সমান চিন্তাভাবনার প্রশংসা করে তিনি বলেন, ১৯৯২ সালে সংবিধান সংশোধন করে উল্লেখযোগ্য সাফল্য মিলেছে। স্থানীয় প্রশাসনিক কাঠামোয় এক-তৃতীয়াংশ মহিলা প্রতিনিধিত্বকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর ফলে গ্রামীণ স্তর থেকে দক্ষ প্রশাসনিক দায়িত্বে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়েছে।
কাম্বোজ বলেন, আজ পঞ্চায়েতস্তরে ৩১ লক্ষ জনপ্রতিনিধির মধ্যে ১৪ লক্ষের কিছু বেশি মহিলা রয়েছেন। এতে সহজেই বোঝা যায়, কীভাবে সমাজের নিচুতলা থেকে পরিবর্তন আসছে। মহিলাদের প্রতি সম্মানবোধ, প্রশাসনে তাঁদের অংশীদারিত্ব সমানে সমানে চলে আসছে।
আন্তর্জাতিক দরবারে ভারতের প্রতিনিধি যখন এইভাবে নারীশক্তির বিকাশের কথা তুলে ধরছেন, তখন লোকসভা ভোটে মহিলা প্রতিনিধিত্বের চিত্রটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। তিনটি দফায় মহিলা প্রার্থীর হার মাত্র ১৭ শতাংশ। আশ্চর্যের এখানেই শেষ নয়। তৃতীয় দফার ভোটে মোট ১৩৫২ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৮ শতাংশের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে। যা মহিলা প্রতিনিধিত্বের থেকে দ্বিগুণ। ৩৮ জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে মহিলাঘটিত অপরাধের মামলাও চলছে। তিনটি দফার ভোটে মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৪১৭৫ জন। তাঁদের মধ্যে মহিলা প্রার্থী হলেন ৩৫৮ জন।
এ নিয়ে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ এবং সমাজকর্মীরা মুখ খুলতে দ্বিধা করেননি। রাজনৈতিক দলগুলির ভিতরে যে এখনও মহিলা প্রতিনিধিত্বের বিষয়ে অনীহা রয়েছে, এই ঘটনাই তার প্রমাণ। মহিলাদের দুর্গা, শক্তি, বিকাশের প্রতীক ইত্যাদি গালভরা কথা বলা দলগুলিই চায় না লোকসভায় নারীশক্তির পূর্ণ সহযোগিতা থাকুক। অথচ, বিশ্ব দরবারে ভারত গলা ফাটিয়ে বলে বেড়াচ্ছে যে, এদেশের রাজনীতিতে মহিলাদের ভাগীদারির অনেক উন্নতি ঘটেছে।