শেষ আপডেট: 10th May 2024 13:47
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ধর্মের ভিত্তিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার গণনা হয়নি। কোনওভাবেই ধর্মের সঙ্গে জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার জড়িত নয়, এটা ভুলভাবে প্রচার করা হচ্ছে। জানাল, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পপুলেশন ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়া। দুদিন ধরে দেশজুড়ে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিয়ে হিন্দুত্ববাদীরা লাফিয়ে বেড়াচ্ছে। তার প্রেক্ষিতে পিএফআই এই কথা জানাল। তাদের বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রীর ইকনিমিক অ্যাডভাইজরি কাউন্সিলের (ইএএম-পিএম) রিপোর্টের ভুল সংবাদ প্রচার হয়েছে।
পিএফআই বলেছে, ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলির মধ্যে জন্মের হার কমছে। শুধু তাই নয়, মুসলিমদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ইএএম-পিএমের সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট উল্লেখ করে হিন্দুত্ববাদীরা বলছে, রিপোর্টে রয়েছে ১৯৫০ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত হিন্দু জনসংখ্যা ৭.৮২ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে, মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ৪৩.১৫ শতাংশ। যার অর্থ হল, দেশে বৈচিত্র্য বজায় রাখার পক্ষে অনুকূল পরিবেশ।
এই সমীক্ষার পরপরই রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে বাগযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির অভিযোগ, কংগ্রেসের মুসলিম তোষণের রাজনীতিরই ফল এটা। যার ফলে দেশে মুসলিম জনসংখ্যা এই হারে বেড়েছে। কিন্তু, পপুলেশন ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সংবাদমাধ্যমের এই খবর প্রচারে তারা ভীষণভাবে চিন্তিত।
কারণ হিসেবে সংস্থাটি বলেছে, গোটাটাই ভুল সংবাদ বেরিয়েছে। সমীক্ষার ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। যাতে করে দেশে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি বিপদঘণ্টির মতো বেজে ওঠে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সমীক্ষার মূল নজর ছিল, গত ৬৫ বছর ধরে গোটা বিশ্বে ধর্মীয় গোষ্ঠীগুলির জন্মহার বৃদ্ধি। কিন্তু, তাকে অংশবিশেষ করে আতঙ্ক সৃষ্টির পরিবেশ তৈরি এবং কোনও একটি বিশেষ ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ তৈরির চেষ্টা উচিত কাজ হয়নি।
জনগণনার হিসেব বলছে, গত তিন দশকে মুসলিম জন্মহার কমেছে। বিশেষত, ১৯৮১-১৯৯১ পর্যন্ত মুসলিম জন্মহার ছিল ৩২.৯ শতাংশ. ২০০১-২০১১ সালে তা কমে দাঁড়ায় ২৪.৬ শতাংশ। এই নিম্নবর্তিতা হিন্দুদের থেকেও অনেক বেশি। দৃষ্টান্ত দিয়ে তারা বলেছে, ওই একই সময়ে হিন্দু জন্মহার ২২.৭ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ১৬.৮ শতাংশ।
২০০৫-০৬ থেকে ২০১৯-২১ সালের মধ্যে মোট জন্মহার মুসলিমদের মধ্যে কমেছে ১ শতাংশ। যেখানে ওই একই সময়ের মধ্যে হিন্দু জন্মহার কমেছে ০.৭ শতাংশ। এই প্রবণতা থেকে বোঝা যায় জন্মহার বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে মিশে যাচ্ছে। পিএফআইয়ের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর পুনম মুতরেজা বলেন, মুসলিম জনসংখ্যা বেড়েছে বলে সংবাদমাধ্যমের আংশিক খবরকে শিহরণ জাগানো খবর বলে প্রচার করা ঠিক হয়নি। তারা বৃহত্তর বিষয়কে আড়াল করার চেষ্টা করেছে। জন্মহার একটি পরিবারের শিক্ষা, রোজগারের উপর নির্ভর করে। কোনওদিনই ধর্মের উপর তা নির্ভরশীল নয়।