শেষ আপডেট: 20th December 2024 15:13
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ইংরেজি বছর প্রায় শেষ। গোটা বছরটাই প্রায় কেটে গেল ভোট ভোট করে। একটার পর একটা বিধানসভা ও লোকসভা ভোটের কুরুক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলির লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে কাটল ২০২৪। আর এই ভোটকেই কেন্দ্র করে ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি, জ্বালানি তেল, রান্নার গ্যাসের দাম, মূল্যবৃদ্ধির কোপ, তিরুমালা-তিরুপতি বালাজি মন্দিরের লাড্ডুতে পশু চর্বি মেশানোর অভিযোগ, আদানি-আম্বানি ইস্যুতে সারাবছর সরগরম হয়ে থাকল দেশীয় রাজনীতি।
বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের ভোট ছিল ২০২৪ সালের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনা। গত এপ্রিল মাস থেকে জুন পর্যন্ত সাতটি দফায় ভোটগ্রহণ হল। এছাড়াও বেশ কয়েকটি বিধানসভা ভোটে কোথাও পরিবর্তন, কোথাও পুনঃপ্রতিষ্ঠা হয়েছে সরকারের। বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের উত্থান কোমর ভেঙে দিতে সমর্থ হয়েছে এনডিএ জোটের। এবং তৃতীয়বার দিল্লির তখত-এ-তাউসে বসেও সংখ্যালঘু সরকার চালাতে হচ্ছে নরেন্দ্র মোদীকে। ৯৯টি আসন পেয়ে লোকসভায় বিরোধী দলনেতার মর্যাদা পেয়েছেন রাহুল গান্ধী। নেহরু-গান্ধী পরিবারের চতুর্থ প্রজন্ম রাহুলের লাডলি বহেনা প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা এই প্রথম লোকসভার সদস্য হলেন।
রাজধানী দিল্লির রাজনীতি সারা বছর উত্তপ্ত ছিল আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের জেলযাত্রা নিয়ে। দীর্ঘ দড়ি টানাটানির পর জামিনে মুক্ত হয়ে অরবিন্দ ইস্তফা দিয়ে চমক লাগিয়ে দেন সকলকে। তাঁর অবর্তমানে দিল্লি বিধানসভা ভোটের মুখে নতুন মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন আতিশী। অন্যদিকে, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের গ্রেফতার এবং জামিনে মুক্ত হয়ে ফের মুখ্যমন্ত্রী আসনে বসা নিয়েও উৎকণ্ঠা ও কৌতূহল ছিল রাজনীতি সচেতন মানুষের মনে।
ওড়িশা বিধানসভা ভোটে বিজু জনতা দলের পরাজয়ে ২৪ বছর পর মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন ত্যাগ করতে হয়েছে নবীন পট্টনায়েককে। তেমনই অন্ধ্রপ্রদেশেও প্রায় হারিয়ে যাওয়া এন চন্দ্রবাবু নাইডু বিস্ময়কর জয়ে ফের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন এ বছরেই। জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভা ভোটেও ফের ন্যাশনাল কনফারেন্স জিতেছে এবং দ্বিতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। পাশাপাশি মহারাষ্ট্র বিধানসভায় লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পর আশ্চর্যজনক জয় পেয়েছে মহায়ুতি জোট। মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের জায়গায় বসেছেন।
২০২৪ সালের শুরুতেই লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারের বড় চমক ছিল রামমন্দির উদ্বোধন। ২০১৯ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর অতি তৎপরতায় ভোটের আগে রামমন্দিরের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রামমন্দির উদ্বোধনের পরেই ভারতীয় রাজনীতিতে বিজেপির বিরুদ্ধে জোর করে হিন্দুত্ববাদ চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলতে থাকে বিরোধীরা। এর পরপরই জ্ঞানবাপী মসজিদে প্রার্থনার অনুমতি এবং সম্প্রতি আজমির শরিফ দরগা ও সম্ভলের মসজিদ হিন্দু মন্দির ছিল বলে আদালতে পাঞ্জা কষা চলছে।
এই বছরেই দেশ হারিয়েছে বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতাকে। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন সিপিএমের সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। এছাড়াও এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিকিকে গুলি করে হত্যা করে গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই দলের লোকরা। বিহারের রাজনীতিতে প্রবীণ বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রী সুশীলকুমার মোদী, কংগ্রেস নেতা ও প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী নটবর সিং এবছরেই মারা গিয়েছেন। গত সোমবারই ৯২ বছর বয়সে মৃত্যু হয়েছে কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এসএম কৃষ্ণের।