শেষ আপডেট: 3rd May 2024 16:07
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কোভিড টিকা কোভিশিল্ডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা ইতিমধ্যেই ব্রিটেনের আদালতে স্বীকার করে নিয়েছে ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকা। আর এই কোভিশিল্ড টিকা নেওয়ায় মেয়ের মৃত্যুর অভিযোগে অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার (এসআইআই)বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হলেন অভিভাবকেরা।
হাইকোর্টে অ্যাস্ট্রোজেনেকা স্বীকার করেছে যে, কোভিশিন্ড ভ্যাকসিনের কারণে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। ব্রিটেনের অ্যাস্ট্রাজেনেকার ওষুধ ভারতে তৈরির লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল পুনের সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (এসআইআই)কে। অতিমারির সময়ে দেশের বেশিরভাগ মানুষই কোভিশিল্ডের টিকা নিয়েছিলেন।
কোভিশিল্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। এবার আইনের দ্বারস্থ হয়েছেন সন্তান হারানো বাবা-মায়েরা। অভিযোগ, কোভিশিল্ড টিকা নেওয়ার পরেই তাঁদের সন্তানদের মৃত্যু হয়েছে।
কোভিড মহামারী চলাকালীন ঋতিকা শ্রী ওমট্রি এবং করুণ্য নামের দুই তরুণীর মৃত্যু হয়। তাঁরা দুজনেই কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন। দ্বাদশ পাশ করার পর ১৮ বছরের ঋতিকা ২০২১ সালে স্থাপত্য নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। অভিযোগ, কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ নেওয়ার একসপ্তাহ পর ঋতিকার প্রচন্ড জ্বর আসে। সেই সঙ্গে শুরু হয় বমি। খুব অল্প সময়ের মধ্যে তাঁর অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে ঋতিকার হাঁটাচলা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর একটি এমআরআই স্ক্যানে ধরা পড়ে যে তাঁর মস্তিষ্কে একাধিক রক্ত জমট বাঁধতে শুরু করেছে। উপসর্গ নজরে আসার মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যেই মৃত্যু হয় ঋতিকার।
একইভাবে ভেনুগোপাল গোবিন্দনের মেয়ে করুণ্যাও কোভিড ভ্যাকসিন নেওয়ার এক মাস পরে ২০২১ সালের জুলাই মাসে মারা যান। কোভিশিল্ডই প্রাণ কেড়েছে তাঁর মেয়ের, দাবি ভেনুগোপালের। এক্স হ্যান্ডলে তিনি অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও কোভিশিল্ডের নির্মাতা সিরাম ইনস্টিটিউটের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ওই টিকা নেওয়ায় রক্তজমাট বাঁধার কারণে মৃত্যুর ঘটনায় ইউরোপের ১৫ টি দেশে সেটির ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছিল। তখনই সিরাম ইনস্টিটিউটের উচিত ছিল সংশ্লিষ্ট টিকা সরবরাহ বন্ধ রাখা। ইতিমধ্যেই মেয়ের মৃত্যুর বিচার চেয়ে বহু আদালতে গেলেও কোনও শুনানিই হয়নি বলেই অভিযোগ তাঁর।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার তরফে টিকায় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কথা স্বীকার করে নেওয়ার ঘটনায় তিনি লেখেন, ‘এরা স্বীকার করল তবে অনেক দেরিতে। ততদিনে বহু মানুষ অকালে প্রাণ হারিয়েছেন।’ প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে প্রয়াত ঋতিকা নাম্নী আর এক তরুণীর মা রচনা গাঙ্গু এবং ভেনুগোপালন আগেই সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন জমা দিয়েছিলেন।
সম্প্রতি করোনার টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকার একটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে হইচই পড়ে গিয়েছে বিশ্বে। একটি মামলার প্রেক্ষিতে অ্যাস্ট্রেজেনেকা সংস্থাটি স্বীকার করে তাদের তৈরি কোভিশিল্ডে বিরল থ্রম্বোসিস বা থ্রম্বসাইটোপেনিয়া সিনড্রোমে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। খবর ছড়িয়ে পড়তেই টিকাপ্রাপকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।