দ্য ওয়াল ব্যুরো: নিশ্ছিদ্র কূটনৈতিক উত্তেজনার আবহেই ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের মাঝে আরও একবার তীব্রতা বাড়াল ইসলামাবাদ। নয়াদিল্লি যখন শনিবার পাক পণ্যের আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করল, তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাল্টা সিদ্ধান্তের কথা জানাল পাকিস্তান। ভারতের পতাকা বহনকারী কোনও জাহাজ পাকিস্তানের কোনও বন্দরেই ভিড়তে পারবে না—জানিয়ে দিল ইসলামাবাদ।

পাকিস্তানের সমুদ্র পরিবহণ মন্ত্রকের বন্দর ও জাহাজ চলাচল বিভাগ শনিবার গভীর রাতে একটি নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছে, “ভারতের সঙ্গে সমুদ্রপথে সম্পর্কিত সাম্প্রতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে পাকিস্তান তার সামুদ্রিক স্বাধীনতা ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। ভারতীয় পতাকাবাহী কোনও জাহাজ পাকিস্তানি বন্দরে ঢুকতে পারবে না। একইভাবে পাকিস্তানি জাহাজও ভারতের কোনও বন্দরে যাবে না। কোনও ব্যতিক্রম ঘটলে তা বিশেষভাবে খতিয়ে দেখা হবে।”

এর আগে দিনভর উত্তেজনা ছড়িয়েছিল ভারতের তরফে নেওয়া বাণিজ্যিক সিদ্ধান্তে। কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রক জানায়, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ—কোনওভাবেই পাকিস্তানি পণ্য ভারতে ঢুকতে দেওয়া হবে না। ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার পরবর্তী প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে। সেই ঘটনায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নয়াদিল্লির তরফে দাবি করা হয়েছে, হামলার পিছনে পাকিস্তানের হাত রয়েছে।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও সংকটময় হয়ে উঠেছে। ভারতের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই স্থগিত করা হয়েছে সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি। অন্যদিকে পাকিস্তানও আগেই ভারত থেকে পণ্য আমদানি ও রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। যদিও ভারত-পাকিস্তান বাণিজ্যের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে খুবই কম, তবুও প্রতীকী দিক থেকে এই সিদ্ধান্তগুলির তাৎপর্য বিশাল।

চিঠি বা পার্সেল—কোনও রকম ডাকযোগেও পাকিস্তান থেকে ভারতে কিছু প্রবেশ করতে পারবে না বলেও জানানো হয়েছে। একাধিক আন্তর্জাতিক শক্তি, বিশেষ করে আমেরিকা, এই পরিস্থিতিতে ভারত ও পাকিস্তানকে সংযত থাকার আহ্বান জানালেও, বাস্তবক্ষেত্রে উত্তেজনা কমার পরিবর্তে তা প্রতিদিনই নতুন মাত্রা নিচ্ছে।