শেষ আপডেট: 9th March 2025 11:44
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পাকিস্তানের বালুচিস্তানে অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজন বন্দুকবাজের গুলিতে মৃত্যু হল সেখানকার ধর্মীয় নেতা মুফতি শাহ মীরের (Mufti Shah Mir)। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি হয়।
তুরবাতে এক মসজিদ থেকে প্রার্থনা শেষে বেরোনোর সময় তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। মোটরবাইকে করে এসে কয়েকজন ওই মসজিদের কাছেই গুলি চালায় বলে খবর। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে পর পর গুলি চলে, হাসপাতালে পরে মত্যু হয়।
মীরের মৃত্যুর পর পাকিস্তানে শুরু হয়েছে জল্পনা—এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে কি আইএসআই-এর হাত রয়েছে? স্থানীয় সূত্রের দাবি, মীর পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর (Pakistan's ISI) ঘনিষ্ঠ ছিলেন, তবে সম্প্রতি তাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। এমনকি, একটি অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বও চলছিল বলে জানা যায়।
উল্লেখযোগ্যভাবে, মীর যে রাজনৈতিক দল জামাইত উলেমা-এ-ইসলাম (জেইউআই)-এর সদস্য ছিলেন, সেই দলের আরও দুই সদস্যও গত সপ্তাহে একই কায়দায় খুন হন। বাইকে আসা আততায়ীরা খুব কাছ থেকে গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ এই হত্যাগুলিকে পরিকল্পিত বলে মনে করলেও, গোটা ঘটনায় আইএসআই-এর যোগ নিয়েই সবচেয়ে বেশি চর্চা চলছে বর্তমানে।
এটাই প্রথমবার নয়, এর আগেও দু'বার প্রাণঘাতী হামলার শিকার হয়েছিলেন মীর, তবে দু'বারই তিনি প্রাণে বেঁচে যান। কিন্তু এবার আর কোনও ম্যাজিক কাজ করেনি। পুলিশ মনে করছে, আততায়ীরা দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর গতিবিধির উপর নজর রাখছিল এবং পরিকল্পনা করেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
ধর্মীয় নেতা হিসেবে পরিচিত হলেও, মীরের বিরুদ্ধে বেআইনি কার্যকলাপের একাধিক অভিযোগ ছিল। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি মাদক, অস্ত্র ও মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এমনকি, পাকিস্তানের বিভিন্ন জঙ্গি শিবিরের সঙ্গেও নাকি তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। ভারতে জঙ্গি অনুপ্রবেশে তাঁর মদত ছিল বলে জানা যায়।
২০১৬ সালে ইরান-পাকিস্তান সীমান্ত থেকে ভারতের প্রাক্তন নৌসেনা কুলভূষণ যাদব (Kulbhushan Jadhav)-কে অপহরণ করেছিল জইশ-অল-আদল গোষ্ঠীর প্রধান মুল্লা ওমর ইরানি। পরে আইএসআই-এর হাতে কুলভূষণকে তুলে দিতে মীর সাহায্য করেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনাচক্রে, ২০২০ সালে তুরবাতে মুল্লা ওমর ইরানি এবং তাঁর দুই পুত্র খুন হয়েছিলেন। সেই হত্যাকাণ্ডের পেছনেও আইএসআই-এর হাত থাকার অভিযোগ উঠেছিল।
এদিকে সূত্রের খবর, মীর বালুচিস্তানের তরুণদের জঙ্গিগোষ্ঠীতে যোগ দিতে উৎসাহিত করতেন। আত্মঘাতী হামলাকারী বাছাই, অপহরণ এবং বালুচিস্তানে একাধিক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়েছিল।
প্যাটার্ন এক হলেও খুনের নেপথ্যে কারণ নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় সেখানকার পুলিশ। তদন্ত শুরু হয়েছে।