দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট
শেষ আপডেট: 23 April 2025 09:08
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পহেলগামে (Pahelgam) মঙ্গলবার দুপুরে হামলা চালায় লস্কর-ই-তোইবার (LeT) চার জঙ্গি। এদের মধ্যে দু’জন পাকিস্তানি, বাকি দু’জন কাশ্মীরের স্থানীয় বাসিন্দা। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় দুই যুবকের মধ্যে একজনের নাম আদিল ঠাকুর, বাড়ি বিজবেহারায়। অন্যজন আসিফ শেখ, ত্রালের বাসিন্দা (Jammu Kashmir Pahalgam Terror Attack)।
চারজনেই ছিল অত্যাধুনিক একে ফর্টি সেভেন রাইফেল (AK-47), বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও বডি ক্যাম তথা শরীরে লাগানো ক্যামেরা। এদের প্রধান টার্গেট ছিল হিন্দু পর্যটকরা। হামলার সময় তারা পর্যটকদের নাম জিজ্ঞেস করে হিন্দু পুরুষদের আলাদা করে গুলি চালায়। শিশু ও মহিলাদের আলাদা করে সরিয়ে রাখা হয়।
ঘটনাস্থল ছিল পহেলগামের জনপ্রিয় ‘ম্যাগি পয়েন্ট’ বা ‘মিনি সুইজারল্যান্ড’ নামে পরিচিত বৈসরন ঘাসের মাঠ (baisaran valley attack)। হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৬ জন। নিহতদের মধ্যে একজন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (IB) কর্মীও রয়েছেন, যিনি পরিবার নিয়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন।
সূত্রের দাবি, যদিও হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (TRF), আসলে এই সংগঠনটি লস্কর-ই-তোইবারই একটি ছদ্মবেশী শাখা। হামলার মূল পরিকল্পনা ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ১৯ এপ্রিলের কাটরা সফরের সময়ে বড়সড় নাশকতা চালানো। তবে সেই সফর বাতিল হওয়ায় জঙ্গিরা পহেলগামকে টার্গেট করে।
১৫ মিনিটের মধ্যে হামলা চালিয়ে এলাকা ছেড়ে পালায় জঙ্গিরা। তাদের খোঁজে শুরু হয়েছে ব্যাপক তল্লাশি। স্পেশাল ফোর্সও নামানো হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, চারজন ছাড়াও পাহাড়ের উপরে আরও ১-২ জন জঙ্গি ‘লুকআউট’-এর দায়িত্বে ছিল।
এই হামলা নিরাপত্তা ব্যবস্থার বড়সড় ব্যর্থতা হিসেবে দেখা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, পর্যটনের মরশুমে হাজার হাজার মানুষ যেখানে ভিড় করেন, সেখানে কেন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ছিল না। কেন্দ্র ও রাজ্য প্রশাসনের তরফে এলাকাকে নিরাপদ দেখানোর তাগিদেই হয়তো কোনও দৃশ্যমান সেনা মোতায়েন করা হয়নি।
ঘটনার পরপরই সৌদি সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী। দিল্লির বিমানবন্দরের কারিগরি ঘাঁটিতে উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা পর্যালোচনা করেন তিনি।
এখন গোটা উপত্যকায় ফের উত্তেজনা। পর্যটক ও স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী হুঁশিয়ার—আরও হামলার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।