ছবি সংগৃহীত
শেষ আপডেট: 24 April 2025 21:35
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পহেলগামে হামলার (Pahalgam Attack) অন্যতম অভিযুক্ত আদিল হুসেন (Adil Hussain) ঠোকার এক সময়ে অনন্তনাগের শিক্ষক ছিলেন। জম্মু-কাশ্মীর (Jammu and Kashmir) পুলিশ জানিয়েছে, কলেজজীবনেই ধর্মীয় উগ্রপন্থার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ওঠেন আদিল। ২০১৮ সালে পাকিস্তানে যান প্রশিক্ষণের জন্য। পরে ফিরে এসে পহেলগাম হামলায় অংশ নেয় বলে মনে করা হচ্ছে।
আদিলের বাড়ি অনন্তনাগ জেলার বিজবেহারা মহকুমার গুরি গ্রামে। পরিবারে রয়েছে দুই ভাই এবং বেশ কিছু জমিজমা। স্নাতকোত্তর শেষ করে শিক্ষকতার পেশায় যোগ দেন তিনি। পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, কলেজে পড়ার সময় থেকেই আদিল ধর্মীয় সভা ও নিরাপত্তা কর্মীদের গুলিতে নিহত জঙ্গিতে শেষকৃত্যে নিয়মিত যেতেন। সেই সময় তাঁকে সন্দেহ করার মতো কিছু চোখে পড়েনি, কারণ অনেকেই ওইসব অনুষ্ঠানে যেতেন। কিন্তু ২০১৮ সালে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর থেকেই সন্দেহ দানা বাঁধে।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, পাকিস্তানে থাকা অবস্থায় আদিলের বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগে ছিল এবং সেখানেই অস্ত্র ও কৌশলগত প্রশিক্ষণ নেয়। চলতি বছরের শুরুতে সে আবার কাশ্মীরে প্রবেশ করে। এরপর একাধিক এলাকায়—যেমন পুঞ্চ-রাজৌরি, ডোডা, কিশতওয়ার—লুকিয়ে থাকার সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছে গোয়েন্দারা।
পহেলগামে হামলার কয়েক দিন আগে থেকেই উপত্যকায় আদিলের উপস্থিতির ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল বলে জানা গেছে। সেইসঙ্গে এও জানা গেছে, পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গিরা পহেলগামে হোটেল ও পর্যটকদের গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে শুরু করেছিল। তবে এই প্রশ্নও উঠছে, গোয়েন্দা সূত্রে সেই তথ্য জানার পরেও পহেলগামে কেন নিরাপত্তা বাড়ানো হল না! কেন ঘটনার পর কুইক অ্যাকশন টিম পৌঁছতে এক ঘণ্টারও বেশি সময় লাগল।
গত মঙ্গলবার দুপুরে পহেলগামে পর্যটকদের উপর হামলা চালিয়েছিল চার সশস্ত্র জঙ্গি। তাদের মধ্যে দুজন ছিল পাকিস্তানি, দুজন স্থানীয় কাশ্মীরি। এর মধ্যে আদিল অন্যতম। গোয়েন্দারা মনে করছেন, গোটা ঘটনার প্ল্যান করতে আদিলই মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিল। কারণ, পাক জঙ্গিদের তুলনায় ওই এলাকা সম্পর্কে তার ধারণা অনেক বেশি।
গোয়েন্দাদের প্রাথমিক ধারণা, এই হামলাকারীরা পাকিস্তানে থাকা জঙ্গি নেতাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রেখে চলছিল, এবং হামলার সময়ও রিয়েল টাইমে তথ্য আদান-প্রদান হচ্ছিল।
তবে বড় ছবিটা উদ্বেগের। আদিলের কার্যকলাপ থেকে এই চিন্তাই বাড়ছে যে কীভাবে শিক্ষিত কাশ্মীরি যুবকদের একাংশ এখনও ধীরে ধীরে মৌলবাদ ও উগ্রপন্থার দিকে ঝুঁকে পড়ছে এবং আন্তর্জাতিক জঙ্গি চক্রের হাতে পড়ে সন্ত্রাসের পথ বেছে নিচ্ছে।