শেষ আপডেট: 21st October 2024 11:23
দ্য ওয়াল ব্যুরো: লাহোরের ইমামবাড়া থেকে বিয়ের সাজে পাত্রী অনলাইন ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘কবুল হ্যায়’। সঙ্গে আনন্দ উচ্ছাসে মেতে উঠলেন একদল মানুষ। তাদের একদল লাগোরের ইমামবাড়ায়। আর একদল উত্তর প্রদেশের জৈনপুরে মৌলানা মাহফুজ হাসান খানের দফতরে। বিয়ে হল লাহোরের পাত্রী আন্দালিপ জোহরা এবং জৈনপুরের পাত্র মহম্মদ আব্বাস হায়দারের। আন্দালিপ লাহোরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। আব্বাস হায়দায় লখনউয়ের তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানির কর্তা। অনলাইনে বিয়ে হলেও দু’জনেই ছিলেন পুরোদস্তুর বিয়ের সাজে।
গত আঠারো অক্টোবর তাঁদের ধূমধাম করে বিয়ের যাবতীয় আয়োজন সারা হয়ে গিয়েছিল। উৎসব বাড়ি ভাড়া নেওয়া, কেটারারের সঙ্গে কথা, আত্মীয়স্বজন-পাড়া প্রতিবেশীদের নিমন্ত্রণ থেকে বিয়ের কেনাকাটা সবই করা হয়ে গিয়েছিল পাত্র ও পাত্রীর বাড়ির। বিয়ের কবুলনামা-সহ লাহোরের ভারতীয় দূতাবাসে ভিসার জন্য কয়েকমাস আগেই আবেদন করেছিল পাত্রীর পরিবার। গন্তব্য উত্তর প্রদেশের জৈনপুর। কিন্তু বিয়ের দিন অর্থাৎ ১৮ অক্টাবরের আগে ভিসা মেলেনি।
তবু দু-পক্ষের কেউই বিয়ে পিছতে চায়নি। কারণ পাত্রীর মা রানা ইয়ানমিন জায়েদি লাহোরের হাসপাতালে ভর্তি। আইসিসিইউ-তে রেখে চিকিৎসা চলছে। তাঁর ইচ্ছা, বেঁচে থাকতে একমাত্র মেয়ের বিয়ে দিয়ে যাবেন। তাঁর ইচ্ছাকে মর্যাদা দিয়েই অনলাইনে বিয়ের আয়োজন।
শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের ইমাম মৌলানা মাহফুজুল হাসানের কথায়, বিয়ের জন্য পাত্র-পাত্রীর পাশাপাশি থাকাটা বাধ্যতামূলক নয়। দু-পক্ষের ইমামের উপস্থিতিতে পাত্রীর মুখে ‘কবুল হ্যায়’ শোনাটাই আসল। সেটা অনলাইনেও বৈধ।
লাহোরের ভারতীয় দূতাবাস পাত্রীপক্ষকে ভিসা কেন দেয়নি? সরকারি বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পাত্রের বাবা তাহসিন শাহিদ জৈনপুর পুরসভায় বিজেপির কাউন্সিলর। তাঁর কথায়, ‘মনে হয় দু-দেশের সম্পর্কের অচলাবস্থাই এর কারণ হবে। তবে দু-দেশের জনসাধারণের সম্পর্কের মধ্যে কূটনীতিকে টেনে আনা ঠিক নয়। দু-প্রান্তের মানুষের যোগাযোগ চালু রাখা দরকার।’
পাত্র-পাত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে জৈনপুরের বিয়ের আসরে হাজির ছিলেন উত্তরপ্রদেশ বিধান পরিষদের সদস্য ব্রিজেশ সিং প্রিসু-সহ একাধিক নেতা। তাহসিন শাহিদ বলেন, পাকিস্তানে আমাদের অনেক আত্মীয়-পরিজন আছেন। দেশভাগের সময় আমাদের পরিবারের একাংশ ওপারে চলে যান। সেই সম্পর্কের সূত্রেই আমার বড়মেয়ের পাকিস্তানে বিয়ে হয়েছে। এখন ভিসা জটিলতা কাটিয়ে নবদম্পতি কবে মিলিত হবে তারই অপেক্ষা দু-পক্ষের।