প্রতীকী ছবি
শেষ আপডেট: 17 December 2024 08:10
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মঙ্গলবার লোকসভায় পেশ হল ‘এক দেশ এক ভোট’ বিল। আর সঙ্গে সঙ্গেই তার বিরোধিতায় গর্জে উঠল বিরোধী রাজনৈতিক শিবির। কংগ্রেসের মণীশ তিওয়ারি থেকে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেসের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সকলেই এই বিল এখনই বাতিল করার দাবি জানান। তাঁদের মূল বক্তব্যই হল, এই বিল আদতে দেশের গণতন্ত্রের ওপর সরাসরি আঘাত করছে।
কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অর্জুন মেঘওয়াল এদিন দুপুর ১২টা নাগাদ সংসদে এই বিল পেশ করেন। তারপরই কার্যত হই হট্টগোল শুরু হয়। কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারি বলেন, এই বিল একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে দেশে। তাই এই বিল দ্রুত সম্ভব বাতিল করা উচিত। অন্যদিকে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে নিশানা করে বলেন, সংবিধানের ভিতকেই নড়িয়ে দিচ্ছে এই বিল। কোনও ভাবেই এটি লাগু হওয়া উচিত নয়। তাঁর স্পষ্ট কথা, ব্যক্তিভিত্তিক স্বার্থরক্ষার জন্যই এই বিল আনা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা অবশ্য মনে করছেন, শীতকালীন অধিবেশন শেষ হওয়ার আগে এক দেশ এক ভোট বিলের উপর আলোচনা হলেও সরকার এখনই সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে বিলটি পাশ করাতে চায় না। লোকসভায় পেশ করার পর সেটি সংসদীয় কমিটির কাছে পেশ করা হবে ঐকমত্যে পৌঁছানোর লক্ষ্যে। তবে তার আগে থেকেই বিরোধী পক্ষ সরব হতে শুরু করে।
লোকসভা এবং সব বিধানসভার ভোট একত্রে করতে সংবিধানের ৮৩ এবং ১৭২ নম্বর অনুচ্ছেদের সংশোধন করা হবে। সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী ৪৭টি দলের মধ্যে ৩২টি এক দেশ এক ভোটের পক্ষে সায় দিয়েছে। লোকসভা এবং রাজ্যসভায় এখন বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। তবে সংসদের দুই কক্ষে পাশ করালেই হবে না, দেশের দুই-তৃতীয়াংশ রাজ্যের বিধানসভারও সম্মতি প্রয়োজন নয়া ব্যবস্থার পক্ষে। মোদী সরকার ২০২৯ সালে নির্বাচনের এই নয়া ব্যবস্থা কার্যকর করার কথা বিবেচনা করছে।
মঙ্গলবার সকালেই সোশ্যাল মিডিয়ায় লম্বা পোস্ট লেখেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, 'এক দেশ এক ভোট' বিল আদতে গণতন্ত্রের ভিতকে অপমান করে। যারা সংবিধানকে বাঁচিয়ে রাখতে অনেককিছু ত্যাগ করেছিল তাদের অপমান করে। তিনি স্পষ্টত বলেছেন, ''বাংলা চুপ করে বসে থাকবে না। দেশের আত্মাকে রক্ষা করতে আমরা প্রাণপন লড়াই করব আর এই গণতন্ত্র বিরোধী মনোভাবকে উৎখাত করেই ছাড়ব।'' তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিলের প্রতিবাদে আগেই সরব হয়েছিলেন।
বিজেপি সরকারের অবশ্য বক্তব্য, বিরোধীদের বিরোধিতা করার মতো কিছু নেই, তাই এই সংস্কার নিয়েও বিরোধিতা করছে। এক দেশ এক ভোট হলে একদিকে যেমন খরচ কমবে, ঠিক তেমনই সরকারি কাজকর্ম এবং প্রকল্পের কাজ আরও স্বচ্ছ গতিতে হবে।