শেষ আপডেট: 1 January 2024 17:36
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ২০২৩ সালে চন্দ্রযানের বিরাট সাফল্য। ২০২৪ সাল পড়তে না পড়তেই ইসরোর ঐতিহাসিক অভিযান শুরু হতে চলেছে। আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পৃথিবীর মাটি ছাড়াবে ইসরোর রকেট। আজ ১ জানুয়ারি সকাল ৯টা ১০ মিনিটে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস রিসার্চ সেন্টার থেকে মহাকাশে পাড়ি দিতে চলেছে এক্সপোস্যাট স্যাটেলাইট।
দেশের প্রথম এক্সরে পোলারিমিটার স্যাটেলাইট বা এক্সপোস্যাট (XPoSat) উৎক্ষেপণ করতে চলেছে ইসরো। পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকল বা পিএসএলভি রকেটে চাপিয়ে এক্সপোস্যাটকে পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে পৌঁছে দেবে। সেখানে বসেই নিউট্রন তারার জন্ম-মৃত্যু, কৃষ্ণগহ্বরদের শিকারপর্ব, মহাকর্ষীয় তরঙ্গের বিচ্ছুরণ দেখবে ইসরোর স্যাটেলাইট। খবর পাঠাবে পৃথিবীতে।
পৃথিবী থেকে লক্ষ লক্ষ আলোকবর্ষ দূরে গ্যালাক্সি ক্লাসটার বা নক্ষত্রপুঞ্জের ভেতরে দানবীয় সব ব্ল্যাকহোলের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এত বিশাল ও ভারী ব্ল্যাকহোল বা কৃষ্ণগহ্বরের খোঁজ আগে মেলেনি। সেইসব ব্ল্যাকহোলদের সন্ধান দিতেই মহাকাশে যাচ্ছে ইসরোর এক্সপোস্যাট।
পৃথিবীর মাটি ছেড়ে ৫০০ থেকে ৭০০ কিলোমিটার উঁচুতে উঠবে এক্সপোস্যাট। তার পর নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করবে। মহাকাশে পাঁচ বছর ধরে ব্ল্যাকহোল, নিউট্রন তারাদের সংসারে আড়ি পেতে বসে থাকবে। দেখবে নতুন তারাদের জন্ম, প্রবীণদের মৃত্যু। দেখবে তারায়-তারায় যুদ্ধ, তীব্র মহাকর্ষীয় তরঙ্গের বিচ্ছুরণ।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, কৃষ্ণগহ্বরের মধ্যে সবসময় যে একটা খাই খাই ভাব থাকে। আকারে আয়তনে বিশাল হওয়ায় এদের দেমাকই আলাদা। ছায়াপথের ঠিক যেখানে এরা রয়েছে তার চারপাশে জমে থাকা পুরু গ্যাস ও ধুলোবালির মেঘ টেনে নিচ্ছে সেই দানবেরা। 'গ্র্যাভিটেশনাল লেন্সিং' দিয়ে ব্ল্যাকহোলদের নিরীক্ষণ করছেন বিজ্ঞানীরা। এবার মহাশূন্যে তাদের সামনে থেকে দেখবে ইসরোর স্যাটেলাইট।
সাধারণত দেখা যায়, যে কোনও গ্যালাক্সির মাঝে থাকা ব্ল্যাক হোলের অভিকর্ষ টান সাঙ্ঘাতিক হয়। ঘন জমাট বাঁধা গ্যাসের মেঘ, কাছে এসে পড়লে ওই রাক্ষুসে ব্ল্যাক হোলগুলি তাদের জোরালো অভিকর্ষ বলের টানে সেগুলিকে গিলে নেয়। সেগুলি আর ব্ল্যাক হোল থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না। খিদে মিটলে তার ভিতর থেকে উজ্জ্বল আলোর বিচ্ছুরণ দেখা যায়। যেগুলি আসলে প্রচণ্ড শক্তিশালী এক্স-রে বা গামা-রশ্মির স্রোত। যতক্ষণ এই খাবার প্রক্রিয়া চলে, ততক্ষণ এই তড়িৎ-চুম্বকীয় তরঙ্গ বেরিয়ে আসতে থাকে গ্যালাক্সি থেকে।
পৃথিবী থেকে ২৫ কোটি আলোকবর্ষ দূরে জিএসএন-০৬৯ (GSN-069) রাক্ষুসে ব্ল্যাকহোলের সন্ধান কয়েকমাস আগেই পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। এর আগে খোঁজ মিলেছিল দু’টি স্টেলার-মাস (Steller-Mass) ব্ল্যাক হোলের, যারা আড়ে বহরে সূর্যের প্রায় দ্বিগুণ। এতদিন নাসা ও ইউরোপীয়ান স্পেস এজেন্সি এই ব্ল্যাকহোলদের সন্ধান দিত। এবার থেকে ইসরোও কৃষ্ণগহ্বরদের আজব কাণ্ডকারখানার কথা বলবে।