শেষ আপডেট: 12th November 2024 16:09
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিগত ১৩ বছর ধরে প্যারালাইসিস। ছেলের চিকিৎসার বিপুল খরচ। আর তা সামলাতে পারছেন না অসহায় বাবা-মা। তাই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে ছেলের স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানিয়েছিলেন তাঁরা। প্রধান বিচারপতি পদে নিজের কর্মজীবনের শেষ দিনে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। কী নির্দেশ দিয়েছেন তিনি?
সালটা ২০১১। উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা হরিশ রানা নামের যুবক এক দুর্ঘটনায় গুরুতর চোট পায় মাথায়। তারপর থেকেই সে হাসপাতালে ভর্তি। বর্তমানে তাঁর ৩০ বছর বয়স। লাখ লাখ টাকা খরচ করেও তাঁকে সুস্থ করতে পারেননি বাবা-মা। এদিকে ছেলের চিকিৎসায় প্রায় সর্বশান্ত হয়েছেন তাঁরা। তাই কার্যত বুকে পাথর রেখে ছেলের স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টে।
তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের কাছে হরিশের বাবা-মার আবেদন ছিল, তাঁর লাইফ-সাপোর্ট খুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হোক। এই কাজ করলে রোগীর স্বাভাবিকভাবেই মৃত্যু হবে। টাকার অভাবে আর চিকিৎসা না করাতে পারার যন্ত্রণায় এই কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন হরিশের বাবা অশোক (৬২) এবং মা (৫৫) নির্মলা দেবী। শীর্ষ আদালতে এই আর্জি করার সময়ে তাঁদের মানসিক অবস্থা কেমন ছিল তা কল্পনাও করা যায় না। সেই পরিস্থিতি বুঝেই তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দেন ডিওয়াই চন্দ্রচূড়।
নিজের কর্মজীবনের শেষদিনে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে ডিওয়াই চন্দ্রচূড় নির্দেশ দিয়েছিলেন, হরিশের চিকিৎসার ভার অন্যভাবে কী করে বহন করা যায় তা সরকারকে দেখতে হবে। তাঁরা বাবা-মা যেহেতু চিকিৎসার ভার নিতে পারছেন না, তাই এই দায়িত্ব নিতে হবে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে। শুধু তাই নয়, হরিশের ওষুধের খরচের দায়িত্বও নেবে তাঁরা। এছাড়া প্রয়োজন পড়লে হরিশকে অন্য কোনও জেলা হাসপাতাল যেখানে আরও উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা রয়েছে তাতে স্থানান্তর করতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি। এই নির্দেশ শোনার পরই স্বেচ্ছামৃত্যুর আর্জি ফিরিয়ে নেয় হরিশের পরিবার।
এই নির্দেশের পর সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি পদে তাঁর শেষ দিনে ডিওয়াই চন্দ্রচূড় একটি স্ট্যাটাস রিপোর্ট খতিয়ে দেখেন। তাতে উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, হরিশকে হোম-কেয়ার সার্ভিস দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন ডাক্তার ভিজিট থেকে শুরু করে ফিজিওথেরাপিস্ট এবং নার্সিং সাপোর্টও দেওয়া হচ্ছে। প্রসঙ্গত, মোহালিতে পড়াশোনা করতে গিয়ে চারতলার বারান্দা থেকে পড়ে গেছিলেন হরিশ। সেই কারণেই তাঁর মাথায় চোট লাগে।