শেষ আপডেট: 18th September 2024 13:46
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অরুণাচল প্রদেশের 'ফিশটেল' অঞ্চলের একেবারে নাকের ডগায়, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার মাত্র ২০ কিমি পূর্বে একটি নতুন কপ্টার-বন্দর তৈরি করছে চিন। যা ভারতের নিরাপত্তার পক্ষে খুবই উদ্বেগজনক। সম্প্রতি ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র দুজনেই দাবি করেছিলেন, দুদেশের সীমান্ত সমস্যার অনেকটাই সুরাহা হয়ে গিয়েছে। লাদাখের প্রায় ৭৫ শতাংশ দখলকৃত এলাকা চিনের দখলমুক্ত করতে পেরেছে ভারত।
তারপরেও উপগ্রহ চিত্রে দেখা যাচ্ছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার ঠিক ওপারে নতুন কপ্টার-বন্দর গড়ে তুলছে ড্রাগনের দেশ। আর তা সম্পূর্ণ হয়ে গেলে চিনা প্রতিরক্ষা বাহিনীর পক্ষে দ্রুত সেনা মোতায়েন, যুদ্ধাস্ত্র ও অন্যান্য রসদ সরবরাহ অনেক দ্রুত এবং সহজগামী হয়ে যাবে। কারণ ভারত-চিন সীমান্তের এই দুর্গম এলাকায় এর বিকল্প তেমন কোনও যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই।
চিন অধিকৃত তিব্বত স্বশাসিত অঞ্চলের নাইয়িংচি এলাকার গোঙ্গরিগাবু কু নদী তীরবর্তী পাহাড়ি উপত্যকায় এই হেলিপোর্ট বা কপ্টার-বন্দরটি নির্মাণটি করছে চিন। উপগ্রহ চিত্রে আরও বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে যে, ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সেখানে কোনও নির্মাণ হয়নি। জায়গাটি ফাঁকাই ছিল। ৩১ ডিসেম্বরের ছবিতে দেখা যায়, জায়গাটি নির্মাণের জন্য ফাঁকা করে ফেলা হয়েছে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর পাওয়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে, কপ্টার-বন্দরটির কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে।
ভূক্ষেত্র বিশেষজ্ঞ অর্থাৎ কোনও বিশেষ অঞ্চলের উপগ্রহ ছবি বিশ্লেষক দামিয়েন সাইমন প্রথম চিনের এই কাজকারবারটি লক্ষ্য করেন। তাঁর মতে, এই নতুন হেলিপোর্ট নির্মাণ হলে চিনের লালফৌজ বা পিপলস লিবারেশন আর্মির পক্ষে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে অনেক সুবিধা হবে। ওদের পক্ষে নজরদারি সহ সেনা মোতায়েন এবং সরবরাহ ব্যবস্থা অনেক সুগম হবে। ঘন জঙ্গল ও রুক্ষ্ম পার্বত্য এলাকার দুর্গমতা কারণে তার সুলুকসন্ধান পাওয়াও অনেক কঠিনতর কাজ হবে।
তিনি আরও বলেছেন, হেলিপোর্টের ফলে চিন অতি দ্রুত সেনা নিয়ে আসতে পারবে। টহলদারি ও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে লাভবান হবে। সর্বোপরি দুর্গম ও জনবসতিহীন এলাকায় যুদ্ধকৌশলগত দিক থেকে কয়েক কদম এগিয়ে থাকবে পিএলএ। ভারতের সেনা সূত্র নিশ্চিত করে জানিয়েছে, ওখানে যে নির্মাণকাজ চলছে তা প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এই কপ্টার-বন্দর নির্মাণে চিনা হামলা ও আত্মরক্ষার পক্ষে সহায়ক হবে। দ্রুত মোকাবিলার ক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে।
এই কপ্টার-বন্দরে দেখা গিয়েছে, ৬০০ মিটার রানওয়ে তৈরি হচ্ছে। যেখানে হেলিকপ্টার উড়তে পারবে। এখানে অন্তত তিনটি হ্যাঙার বা কপ্টারের গ্যারাজ রয়েছে। রয়েছে একটি অ্যাপ্রন এরিয়া যেখানে হেলিকপ্টার পজিশন নিতে পারবে। একটি এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলসহ বেশ কয়েকটি বাড়িঘর।