শেষ আপডেট: 10th November 2024 18:13
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সহকর্মীদের মধ্যে ভুল যোগাযোগের কারণেই ঘটেছে দুর্ঘটনা। বিহারের বেগুসরাইয়ের বারাউনি জংশনে কাপলিং খুলতে গিয়ে রেলকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় উঠে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। রেলের তরফে পেশ করা প্রাথমিক রিপোর্টে এমনই দাবি ভারতীয় রেলের। স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বারাউনি স্টেশনে উপস্থিত দ্বিতীয় পয়েন্টসম্যান এবং ট্রেন চালকের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাবেই মর্মান্তিক পরিণতি তৃতীয় জনের।
শনিবার সকালে ট্রেনের ইঞ্জিন ও বগির মাঝের কাপলিং খুলতে গিয়ে মৃত্যু হয় ২৫ বছরের রেলকর্মী অমর কুমার রাওয়ের। তিনি রেলের পয়েন্টসম্যান হিসাবে কাজ করতেন। অন্যান্য দিনের মতো শনিবারও সেই কাজ করতে গিয়েছিলেন অমর। কিন্তু তাঁর জন্য এমন পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে তা কে জানত? জানা যায় কাপলিং খোলার জন্য ওই রেলকর্মী যখন ইঞ্জিন এবং বগির মাঝের ফাঁকা অংশে প্রবেশ করেছিলেন, সেই সময় আচমকা ইঞ্জিনটি পিছিয়ে এসে বগির সঙ্গে ওই রেলকর্মীর দেহ পিষে দেয় বলে খবর।
ঘটনার কথা জানাজানি হতেই নিজেদের মুখ বাঁচাতে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করে রেল। পাঁচ আধিকারিকের যুগ্ম রিপোর্টে স্পষ্ট উল্লেখ, মৃত কর্মী অমর ছাড়াও ওই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন দ্বিতীয় পয়েন্টসম্যান মহম্মদ সুলেমন। মূলত তাঁর ভুলেই এমন দুর্ঘটনা ঘটে যায়।
যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে সুলেমন। তিনি পরিষ্কার জানিয়েছেন, শনিবার অমরই পাওয়ার কার থেকে ইঞ্জিনটি আলাদা করেছিলেন। যার জেরে ইঞ্জিনটি কিছুটা হলেও সামনের দিকে গড়িয়ে যায়। সেই সময়ে কাপলিং বন্ধ করতে গেলে কোনও ইঙ্গিত ছাড়াই আচমকা ইঞ্জিনটি পিছিয়ে দেন ট্রেনের চালক। অভিযোগ, এ ক্ষেত্রে চালককে হাত দেখিয়ে ইশারা করার কথা ছিল সুলেমনের। কিন্তু তিনি কোনওরকম ইঙ্গিত না দিলেও নিজের মর্জিমতো ট্রেনটি পিছিয়ে আনেন লোকো পাইলট। তার জেরেই মৃত্যু হয় অমরের।
সূত্রের খবর, সোনপুর রেলওয়ে ডিভিশনের কর্মী ছিলেন অমর। শনিবার বারাউনি জংশনের প্ল্যাটফর্ম ৫-এর কাজে নিযুক্ত ছিলেন তিনি। বেলার দিকে ওই স্টেশনেই ঢোকে লখনউ-বারাউনি এক্সপ্রেস। রেল সূত্রে খবর, এই ট্রেনের কাপলিং খোলার চেষ্টায় ছিলেন অমর। যদিও হঠাৎ ট্রেনটি উল্টোদিকে পিছিয়ে আসায় দুটি বগির মাঝের অংশে থাকা অমর পিষে যান।
ইতিমধ্যে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ রেল আধিকারিকদের হাতে এসেছে। সকাল ৮ টা ১০ নাগাদ ট্রেনটি স্টেশনে ঢোকার পর কাপলিং চেঞ্জ করতে গিয়ে সকাল ৮ টা ২৯ মিনিট নাগাদ ঘটে যায় দুর্ঘটনা। যদিও এখনও পর্যন্ত রেল কারও বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি বলে খবর। মৃত কর্মীর ময়নাতদন্তের পরই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে রেল। ইতিমধ্যে উচ্চ পর্যায়ের তদন্তও শুরু হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে সব দোষ কী কর্মীদের? এর দায় কীভাবে এড়াতে পারে রেল?