দেশবসীর উদ্দেশে নরেন্দ্র মোদীর লেখা খোলা চিঠি
শেষ আপডেট: 20 March 2024 12:13
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দেশবাসীর উদ্দেশে নরেন্দ্র মোদীর লেখা খোলা চিঠি এখনও বিলি হচ্ছে। বিলি বলতে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে বাল্ক মেসেজ হিসাবে ছড়িয়ে দিচ্ছে বিজেপি। যদিও চিঠিটি নরেন্দ্র মোদী লিখেছিলেন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে, গত ১৫ মার্চ, অর্থাৎ নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশের আগের দিন। যদিও আদর্শ আচরণবিধি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী বা কোনও মন্ত্রীর সরকারি বক্তব্য ভোট ঘোষণার পর প্রচার করা যায় না।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, কংগ্রেস-সহ একাধিক বিরোধী দল বিজেপির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর লেখা চিঠি প্রচার করে আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গের নালিশ ঠুকেছে। শুধু তাই নয়, দেশের অনেক রেল স্টেশন, সরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ছবি, কাটআউট রয়েছে। রয়েছে সেলফি কর্নার।
রাজনৈতিক দলের অভিযোগ নিয়ে কমিশন এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। তবে রাজ্যের মুখ নির্বাচনী অফিসারদের কাছে কমিশন রিপোর্ট তলব করেছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। সব রাজ্যেই অভিযোগ নথিভুক্ত করতে কমিশনের বিশেষ অ্যাপ আছে। তাতেই চণ্ডীগড়ের এক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, ভোট ঘোষণার পরও প্রধানমন্ত্রীর লেখা খোলা চিঠি তাঁর কাছে এসেছে। কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন প্রেরক হিসাবে কেন্দ্রের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের নাম রয়েছে।
‘বিকশিত ভারত সম্পর্ক’ শীর্ষক ওই চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, বিগত দশ বছরে আমি দেশবাসীর জীবন বদলে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমি আপনাদের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইছি।’ বলাই বাহুল্য সেই ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া ভোটের বাক্সে চান প্রধানমন্ত্রী।
ভোট ঘোষণার পরও মোদীর ওই চিঠি সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করার অভিযোগ জমা পড়ার পর চণ্ডীগড়ের রিটার্নিং অফিসার বিনীত প্রতাপ সিং এই বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন। সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন আমরা অভিযোগটি ডিস্ট্রিক্ট মিডিয়া সার্টিফিকেশন অ্যান্ড মনিটরিং সেলের কাছে পাঠিয়েছিলাম। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী প্রাথমিক অনুসন্ধানের প্রেক্ষিতে বলা যায়, এটি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে। তবে যেহেতু বিষয়টি সর্ব ভারতীয় তাই আমরা এই ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের কাছে বিষয়টি পেশ করেছি।
এখন প্রশ্ন প্রধানমন্ত্রীর লেখা খোলা চিঠি নিয়ে আদর্শ আচরণ বিধি ভঙ্গের অভিযোগের প্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন কোনও ব্যবস্থা নেবে কি? ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশের দিনই মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছিলেন কমিশন নিরপেক্ষতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স অবস্থান নিয়ে কাজ করবে। অর্থাৎ তারা কারও বিরুদ্ধে অভিযোগকেই লঘু করে দেখবে না। প্রসঙ্গত, ২০১৯-এর ভোটে প্রধানন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগের মুখে কমিশনের নীরবতা এবং শেষে ক্লিনচিট দেওয়া নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন তৎকালীন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরা।
কংগ্রেস নেতা শশী তারুর এবং মনীশ তিওয়ারি কমিশনের অফিসে গিয়ে দলের তরফে অভিযোগ জানিয়ে এসেছেন। শশীর বক্তব্য, অনেক বিদেশি নাগরিকের মোবাইলেও এই চিঠির কপি পাঠানো হয়েছে। বিরোধী দলগুলির দাবি, অবিলম্বে ওই চিঠির বিলি কারিগরি উপায় অবলন্বন করে প্রচার বন্ধ করা দরকার। অনেকের মতে, ভোট ঘোষণার আগের দিন চিঠিটি প্রকাশ করাও অনৈতিক কাজ হয়েছে। তবে বিতর্কের মুখে সরকারি প্রচারমাধ্যম থেকে চিঠিটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।