কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) মানুষের কাজ কেড়ে নিচ্ছে না, বরং উৎপাদনক্ষমতা বাড়াচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি।
নারায়ণ মূর্তি (ফাইল ছবি)
শেষ আপডেট: 18 June 2025 18:35
দ্য ওয়াল ব্যুরো: নিজের বক্তৃতা কিংবা লেকচারের জন্য এখন আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা খাটতে হয় না ইনফোসিস (Infosys)-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা এন আর নারায়ণ মূর্তিকে। চ্যাট জিপিটির সাহায্যে ৩০ ঘণ্টার কাজ মাত্র ৫ ঘণ্টায় করে ফেলছেন তিনি, জানালেন এক সাক্ষাৎকারে।
সম্প্রতি বেসরকারি সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নারায়ণ মূর্তি বলেন, 'আগে আমি ২৫ থেকে ৩০ ঘণ্টা সময় দিতাম একটা বক্তৃতা তৈরি করতে। বিষয় নির্বাচন, কাঠামো তৈরি আর বার্তা ঠিক করতেই অনেক সময় চলে যেত। কিন্তু আমার ছেলে রোহন মূর্তি পরামর্শ দিলেন চ্যাট জিপিটি ব্যবহারের। তখনই পুরো বিষয়টা বদলে গেল।'
তিনি জানান, এআই টুলের সাহায্যে প্রাথমিক খসড়াটি তৈরি করতে খুব কম সময় লাগে। এরপর সেটিকে নিজের মতো সাজিয়ে নিতে খুব বেশি সময় লাগে না। 'মাত্র পাঁচ ঘণ্টায় একটা বক্তৃতার খসড়া আমি এত ভালভাবে তৈরি করে ফেলতে পারছি। মানে আমার উৎপাদনক্ষমতা পাঁচ গুণ বেড়ে গেল,' বলেন তিনি।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) মানুষের কাজ কেড়ে নিচ্ছে না, বরং উৎপাদনক্ষমতা বাড়াচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি। বলছেন, 'এআই-কে সাপোর্ট টুল হিসেবেই দেখা উচিত, যেটা আমাদের কাজকে সহজ ও দক্ষ করে তোলে।'
তবে এআই কতটা সাহায্য করবে, সেটা নির্ভর করছে প্রশ্ন ঠিকভাবে করা হচ্ছে কি না, তার উপর। এই বিষয়ে রোহন মূর্তির একটি উপদেশ তুলে ধরেন ইফোসিসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। বলেন, 'যখন আপনি জানবেন ঠিক কী চাইছেন, তখনই এআই আপনাকে কার্যকরী উত্তর দিতে পারবে।'
নারায়ণ মূর্তি এও জানান, ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি যদি এই প্রযুক্তিকে সঠিকভাবে কাজে লাগায়, তাহলে কোডিংয়ের কাজ আরও দ্রুত হবে, ভুল কমবে এবং আরও জটিল সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হবে। আর রুটিনের কাজ এআইয়ের হাতে তুলে দিয়ে ইঞ্জিনিয়র এবং প্রোগ্রামাররা আরও সৃজনশীল ও বুদ্ধিদীপ্ত কাজে মন দিতে পারবেন।
তিনি ১৯৭০-এর দশকের ইংল্যান্ডের উদাহরণ টেনে বলেন, যখন ব্যাঙ্কিংয়ে প্রথম কম্পিউটার ব্যবহারের শুরু হয়, তখন অনেকেই ভয় পেয়েছিলেন চাকরি চলে যাবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছিল, কাজের গতি বেড়েছে, ভুল কমেছে, বরং নতুন নতুন পদ সৃষ্টি হয়েছিল। এআইয়ের ক্ষেত্রেও তিনি তেমনটাই প্রত্যাশা করছেন।