দেবেন্দ্র ফড়নবিশ মঙ্গলবার বিধানসভায় নাগপুর হিংসা নিয়ে বলতে উঠে এই দায় চাপান।
শেষ আপডেট: 18 March 2025 10:24
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ঔরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের আগুন জ্বালিয়ে তুলেছে ভিকি কৌশল অভিনীত 'ছাবা' সিনেমা। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ মঙ্গলবার বিধানসভায় নাগপুর হিংসা নিয়ে বলতে উঠে এই দায় চাপান। বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী স্বীকার করেন, ছাবা সিনেমা ঔরঙ্গজেবের বিরুদ্ধে মানুষকে ক্ষোভে ঘি ঢেলে দিয়েছে। তিনি সকলের কাছে রাজ্যের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার আবেদন জানান। ফড়নবিশ অবশ্য নাগপুরের হিংসাত্মক ঘটনাকে পূর্বপরিকল্পিত বলে বর্ণনা করেন। একইদিনে উপমুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে বলেন, যাঁরা ঔরঙ্গজেবের সমর্থক, তাঁরা যেন ইতিহাসটা পড়ে নেন এবং ছাবা সিনেমাটি একবার দেখে নেন। তাঁর দাবি, দেশের কোনও সাচ্চা মুসলিমও ঔরঙ্গজেবকে সমর্থন করেন না। ঔরঙ্গজেব শুধু মহারাষ্ট্রের নয়, এই দেশের শত্রু। ঔরঙ্গজেব দেশদ্রোহী।
মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় আরও বলেন, কাউকে আইন হাতে তুলে নিতে দেওয়া হবে না। উপমুখ্যমন্ত্রী তথা শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডেও হিংসাত্মক ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানান। এটা পূর্বপরিকল্পিত চক্রান্ত কিনা পুলিশ তা তদন্ত করে দেখছে বলেও জানান তিনি। ফড়নবিশের দাবি অবশ্য, এটা পুরোপুরি ছক কষে হামলা হয়েছে। পুলিশ ছিল হামলাকারীদের লক্ষ্য। পুরো বিবরণ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় জানান, একটি গোষ্ঠীর মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে পুলিশকে টার্গেট করে হামলা চালায়।
তিনি জানান, তিন ডিসিপি সহ ৩৩ জন পুলিশ কর্মী ও পাঁচ সাধারণ মানুষ জখম হয়েছেন। একজন আইসিইউতে রয়েছেন। যারা এই কাজে জড়িত তারা যে ধর্মেরই হোক, কেউ পার পাবে না। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, হামলাকারীরা সশস্ত্র অবস্থায় তৈরি হয়েই এসেছিল। একটি ট্রলি ভর্তি করে ইট-পাথর এনে জমায়েত করেছিল। পুলিশের উপর আক্রমণ কোনওমতেই বরদাস্ত করা হবে না। মুখ্যমন্ত্রী এই দাবি করলেও বিধান পরিষদীয় দলনেতা অম্বাদাস ডাভনে এই ঘটনার জন্য সরাসরি দেবেন্দ্র ফড়নবিশকে দায়ী করেছেন। কংগ্রেস নেতার অভিযোগ, শাসক বিজেপি রাজ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা করছে। তাঁর দাবি, নাগপুরের হিংসার ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী ফড়নবিশ, যিনি পুলিশমন্ত্রীও, তিনি এর পিছনে রয়েছেন।
বিধানসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের বিজয় ওয়াদ্দেতিওয়ার এই হিংসাকে সরকারি মদতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। কংগ্রেসের সংসদ সদস্য বর্ষা গায়কোয়াড়ও নাগপুরের ঘটনাকে সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা বলে ব্যাখ্যা করেন। কংগ্রেস সাংসদ ইমরান মাসুদ বলেন, সংঘর্ষের জন্য সরকার দায়ী। এআইএমআইএম প্রধান আসাউদ্দিন ওয়েইসি এদিন অভিযোগ করে বলেন, নাগপুরের ঘটনায় রাজ্যের গোয়েন্দা ব্যর্থতাকেই প্রমাণ করে। উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা নেতা আদিত্য ঠাকরের অভিযোগ, বিজেপি মহারাষ্ট্রকে মণিপুর করার চেষ্টা করছে।
বিজেপি-শিবসেনা বিরোধী দলগুলি সরকারকে দোষারোপ করলেও গেরুয়া শিবির এবং ছত্রপতি শিবাজি মহারাজের অনুগত দল শিবসেনা ও হিন্দুত্ববাদী নেতারা এখনও ঔরঙ্গজেবের সমাধি সরিয়ে ফেলার দাবিতে অনড় রয়েছেন। নাগপুরের সংঘর্ষকে গেরুয়া শিবিরও পরিকল্পিত চক্রান্ত এবং দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে বলা হয়েছে, একটি নির্দিষ্ঠ গোষ্ঠী ছক কষে হামলা চালিয়েছে। তারা বেছে বেছে যুব সংগঠন বজরং দলের কর্মীদের বাড়িতে আক্রমণ করে।