শেষ আপডেট: 26th July 2024 18:18
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অপরাধ জগতের সঙ্গে ওঠাবসা করা তথা পুলিশের ইনফর্মার গুরু ওয়াগমারে-র খুনের তদন্তে বিস্ময়কর মোচড়। ময়নাতদন্তের সময় জানা গিয়েছে, খুন হওয়ার সম্ভাবনা আগাম আঁচ করেছিল গুরু। আর পুলিশকে সম্ভাব্য খুনিদের নাম জানাতে অভিনব কৌশল নিয়েছিল রক্তমাংসের 'গজনি।' নিজের ঊরুতে উল্কি বা ট্যাটুতে লিখে রেখেছিল খুনিদের নাম। আর তা থেকেই গুরু-খুনের রহস্য মোচনে এগতে সাহায্য করেছে পুলিশকে।
বৃহস্পতিবার ভোররাতে মুম্বইয়ের ওরলির একটি স্পায়ের ভিতর নৃশংসভাবে খুন করা হয় গুরুকে। শুরুতে পুলিশ কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছিল না, কে বা কারা এই খুন করে থাকতে পারে। কিন্তু, পরে তার দেহ পরীক্ষার সময় দেখা যায়, ঊরুতে সম্ভাব্য খুনিদের নাম ট্যাটু করে লিখে রেখেছিল গুরু। যাতে পুলিশের কাজের সুবিধা হয়।
সেখানে এও লেখা ছিল, যদি তার কোনও কিছু ঘটে যায়, তাহলে এই ব্যক্তিরা দায়ী থাকবে। এইভাবে মোট ২২ জনের নাম লেখা রয়েছে তার ঊরুতে। আশ্চর্যজনকভাবে ট্যাটুতে লেখা নামগুলির মধ্যে ওই স্পা-মালিকের নামও ছিল। পুলিশ সেই স্পা-মালিক সন্তোষ শেরেকরকে গ্রেফতার করে এই খুনের রহস্যের জাল ছিঁড়েছে।
সন্তোষকে জেরা করে ওয়াগমারে খুনে আরও ২ জনকে জালে বন্দি করে পুলিশ। তাদের একজনের নাম মহম্মদ ফিরোজ আনসারি, বয়স ২৬ এবং শাকিব আনসারি, বয়স ২৮। খুনের সময় অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য রাজস্থানের কোটা থেকে আরও দুই সন্দেহভাজনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশের তদন্তকারী অফিসাররা জানিয়েছেন, গুরু ওয়াগমারের কাছ থেকে একটি ডায়েরিও পাওয়া গিয়েছে। ওই ডায়েরিতে সে রোজের কাজ লিখে রাখত। যদি দিনটা খারাপ যেত, তাহলে সে লাল কালির পেনে লিখত। যাদের সঙ্গে তার সেদিন ঝামেলা হয়েছে, তাদের নামও লিখত গুরু। আবার যে দিনটা তার ভালো কাটত, সেদিন সে সবুজ কালিতে ডায়েরি লিখত। সাধারণ দিনের জন্য নীল কালি ব্যবহার করত।
২০১৪ সাল থেকে লেখা এই ডায়েরিতে সেই সমস্ত স্পা-মালিকদের নাম লেখা আছে, যাদের কাছ থেকে সে বিভিন্ন সময় তোলা আদায় করেছে। তার এই কাজের জন্যই শেরেকর গুরুর উপর তিতিবিরক্ত হয়ে উঠেছিল। তাই সে গুরুকে দুনিয়া থেকে সরানোর ফন্দি আঁটে। এই কাজের জন্য শেরেকর যোগাযোগ করে ফিরোজের সঙ্গে। তাদের মধ্যে ৬ লক্ষ টাকার সুপারি ঠিক হয়। যার মধ্যে ৪ লক্ষ টাকা অগ্রিম পেমেন্টও হয়ে যায়।
ফিরোজই দিল্লি থেকে তার এক বন্ধু শাকিবকে ডেকে আনে খুনে সাহায্য করার জন্য। পুলিশ জানিয়েছে ফিরোজেরও আগে একটি স্পা ছিল। কিন্তু অবৈধ কাজের অভিযোগে পুলিশ তা বছরখানেক আগে বন্ধ করে দেয়। ওয়াগমারের কাজই ছিল বিভিন্ন স্পায়ের বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজের অভিযোগ জানানো। এর আগে সে তার দাবিমতো টাকা চাইত মালিকদের কাছে। এইভাবে মুম্বই, নবি মুম্বই এবং ঠানেতে অসংখ্য স্পা-মালিকের কাছ থেকে টাকা তুলত গুরু। তাই ফিরোজ ও সন্তোষ মিলিতভাবে তাকে খতম করা ষড়যন্ত্র করে।