শেষ আপডেট: 21st November 2024 16:38
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ২৬/১১-র মুম্বই হামলার পাকিস্তানি জঙ্গি আজমল কাসবও এদেশে স্বচ্ছ বিচার পেয়েছিল। বৃহস্পতিবার কাশ্মীরি জঙ্গি ইয়াসিন মালিক সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে এই মন্তব্য সুপ্রিম কোর্টের। কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ইয়াসিন মালিককে জম্মুর আদালত সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিল। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় সিবিআই।
ইয়াসিন মালিক ১৯৯০ সালে শ্রীনগরের অদূরে চার বায়ুসেনাকে হত্যা এবং ১৯৮৯ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মুফতি মহম্মদ সইদের মেয়ে রুবাইয়া সইদকে অপহরণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত। জঙ্গি সংগঠনকে আর্থিক রসদ জোগানোর মামলায় ইয়াসিন বর্তমানে দিল্লির তিহার জেলে যাবজ্জীবন সাজা ভুগছে। জম্মুর আদালতে জঙ্গি ও উপদ্রবমূলক কাজ দমন আইনের মামলায় অভিযুক্ত ইয়াসিন মালিক। এই কারণে তাকে শুনানিতে সশরীরে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় সিবিআই।
এদিন সিবিআইয়ের তরফে শীর্ষ আদালতে বলা হয়, মালিককে জম্মু নিয়ে গিয়ে আদালতে হাজির করলে জম্মু-কাশ্মীরের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। সাক্ষীদের পক্ষেও তা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে। কেন্দ্রীয় সংস্থার পক্ষে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বিচারপতি এএস ওকা এবং বিচারপতি এজি মসিহ্-র এজলাসে এ নিয়ে সওয়াল করেন। মেহতা বলেন, আমরা তাকে জম্মু-কাশ্মীরে নিয়ে যেতে রাজি নই।
এর জবাবে বিচারপতি ওকা জানতে চান, তাহলে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কীভাবে জেরা করা সম্ভব। কারণ, বেঞ্চ উল্লেখ করে যে, জম্মু-কাশ্মীরের ইন্টারনেট সংযোগ অত্যন্ত ধীর, তাতে সওয়াল-জবাব করা খুবই দুঃসাধ্য। তুষার মেহতা বলেন, ইয়াসিন মালিক যদি হাজিরা দিতে অনড় হয়, তাহলে শুনানি দিল্লিতে স্থানান্তরিত করা যেতে পারে। তাঁর দাবি, কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদী ওই নেতা সশরীরে হাজিরার জন্য চাপ দিয়ে কৌশল নিতে চাইছে।
মেহতা আরও বলেন, মালিক কোনও সাধারণ জঙ্গি নয়। এর উত্তরে বিচারপতি ওকা বলেন, বিচার-শুনানির সময় কতজন সাক্ষী থাকবে জানান। আমাদের দেশে আজমল কাসবকেও স্বচ্ছ বিচার দেওয়া হয়েছিল। মেহতা তখন বলেন, সরকার এক্ষেত্রে পুঁথিগত বিদ্যা কাজে লাগাতে পারে না। মনে রাখতে মালিক প্রায়ই পাকিস্তানে যাতায়াত করত এবং হাফিজ সইদের সঙ্গে মঞ্চেও দেখা গিয়েছে তাকে।
বেঞ্চ তখন শুনানির জন্য জেলে আদালত বসানোর বিষয়ে রাজি হয়। কেন্দ্রকে বলেছে, কতজন সাক্ষী শুনানিতে হাজির থাকবেন এবং তাঁদের নিরাপত্তায় কী ব্যবস্থা থাকবে তা জানাতে। আমরা দেখছি এই আদালতের জন্য কী করে একজন বিচারককে নিয়োগ করা যায়। এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন আগামী বৃহস্পতিবার ধার্য করেছে সর্বোচ্চ আদালত।