পাকিস্তানকে জঙ্গিরাষ্ট্র ঘোষণার দাবি তুললেন রাজ্যসভা সদস্য তথা ডাকসাইটে আইনজীবী কপিল সিবাল।
প্রাক্তন কংগ্রেসি সিবালের কথায়, আসল বিষয় হচ্ছে, সন্ত্রাসবাদ।
শেষ আপডেট: 17 May 2025 16:27
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পাকিস্তানকে জঙ্গিরাষ্ট্র ঘোষণার দাবি তুললেন রাজ্যসভা সদস্য তথা ডাকসাইটে আইনজীবী কপিল সিবাল। শনিবার তিনি বলেন, বেআইনি কার্যকলাপ দমন আইন (UAPA) সংশোধন করা উচিত সরকারের। এদিন এক সাংবাদিক সম্মেলনে সিবাল দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের জমানায় জম্মু-কাশ্মীরে জঙ্গি কার্যকলাপ কমে গিয়েছিল।
প্রাক্তন কংগ্রেসি সিবালের কথায়, আসল বিষয় হচ্ছে, সন্ত্রাসবাদ। সে কারণে দেশের বিদেশনীতিকে এ বিষয়েই একমাত্র নজর দিতে হবে। বাস্তব ঘটনা হল, পাকিস্তান হল সন্ত্রাসবাদীদের কারখানা। আমি এর আগেও বলেছি, রাষ্ট্রসঙ্ঘে আমাদের একটা সংশোধনী আনা উচিত। একটা সংশোধনী এনে পাকিস্তানকে জঙ্গি রাষ্ট্র ঘোষণা করে সন্ত্রাসবাদী দেশের তালিকাভুক্ত করা উচিত।
এখন আমরা যখন বিশ্বের দরবারে যাচ্ছি, তখন যাদের সঙ্গে কথা হবে, তাদের বলা হোক, আপনারা পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করে দিন। কারণ এতেই বিশ্বের মঙ্গল হবে। এতেই প্রগতি সুনিশ্চিত হবে। আর এতেই কাশ্মীরের লাভ হবে। কাশ্মীরিরা কেন ভুক্তভোগী হবেন। সাধারণ মানুষ কেন শিকার হবেন। তাই বিদেশনীতির নজর শুধুমাত্র এদিকেই থাকা উচিত। অর্থাৎ সিবালের মতে, পাকিস্তানকে গোটা পৃথিবীতে একঘরে করার কাজে নামুক ভারত।
সর্বদলীয় সংসদীয় দলের বিদেশযাত্রার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে সিবাল আরও বলেন, ২৬/১১ হামলার পর প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংও বিভিন্ন দেশে ভারতের প্রতিনিধিদল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যাতে সকলের কাছে প্রমাণ করা যায় যে, মুম্বই হামলার আসল নায়ক ছিল পাকিস্তান। তিনি সব দেশের কাছে প্রমাণ দিতে চেয়েছিলেন, পাকিস্তান জঙ্গি রাষ্ট্র এবং সেখানকার মাটিতেই জন্ম দেয় সন্ত্রাসবাদীরা। তার ফলে পৃথিবীতেই একটা ধারণা জন্মেছিল যে, পাকিস্তান মানেই জঙ্গি তৈরির আঁতুড়ঘর।
পাকিস্তান বিরোধী বিশ্ব-প্রচারে প্রতিনিধি যখন প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা অটলবিহারী বাজপেয়ী
অপারেশন সিঁদুর কিংবা পহলগাম কাণ্ড নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই প্রথম নন, যিনি সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল পাঠাচ্ছেন পাকিস্তানি চক্রান্তের কথা তুলে ধরতে। ১৯৯৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিমা রাও একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিলেন। যার নেতৃত্বে ছিলেন সেই সময়ের বিরোধী দলনেতা অটলবিহারী বাজপেয়ী। বাজপেয়ীর নেতৃত্বাধীন দল জেনেভাস্থিত রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার কমিশনে পাকিস্তানের ঘোরতর বিরোধিতা করেছিলেন। বাজপেয়ীর সঙ্গে গিয়েছিলেন প্রাক্তন জম্মু-কাশ্মীরের প্রধানমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা এবং সলমন খুরশিদকে।
পাকিস্তান সেবার রাষ্ট্রসঙ্ঘের মানবাধিকার কমিশনে ভারতের বিরুদ্ধে কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি প্রস্তাব এনেছিল। কিন্তু বাজপেয়ীর নেতৃত্বাধীন এই ত্রয়ী-বাহিনীর যুক্তির চাপে পাকিস্তানের সেই প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়।
২০০৮ সালেও মুম্বই হানা সহ একাধিক পাকিস্তানি জঙ্গিদের হামলার কথা তুলে ধরতে মনমোহন সিং প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিলেন সব দেশে। তখন ভারত সেনা অভিযান না চালালেও কূটনৈতিক জয় হাসিল করে সহজেই। রাষ্ট্রসঙ্ঘের অর্থ মঞ্জুরির শীর্ষ সংস্থা ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্স যারা সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্রকে অর্থ অনুদান বন্ধ করতে ক্ষমতাশালী, তাদের খাতায় পাকিস্তানকে গ্রে লিস্ট বা ধূসর তালিকায় পাঠিয়ে দিতে বাধ্য করে ভারত।