প্রথমটায় বুঝে উঠতে পারেননি পল্লবী। তিনি বলেন, "ভেবেছিলাম কোথাও ড্রিল মেশিন চলছে। অথবা পুলিশ ফায়ার টেস্ট করছে। এরপরেই চোখ যায় অদূরে থাকা আমার স্বামীর দিকে। রাস্তায় পড়ে আছে। চারিদিক রক্তে ভেসে যাচ্ছে।"
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ছুটি কাটাতে কাশ্মীর বেড়াতে গিয়েছিলেন কর্ণাটকের ব্যবসায়ী মঞ্জুনাথ রাও ও তাঁর পরিবার। সামাজিক মাধ্যম জুড়ে স্ত্রী পল্লবী শেয়ার করছিলেন ডাল লেক বেরানোর ছবিও। কিন্তু মঙ্গলবারের পর থেকেই বদলে গেল সবটা। পহেলগামে জঙ্গী হামলায় (Pahalgam Terror Attack) চোখের সামনেই স্বামী মঞ্জুনাথকে প্রাণ হারাতে দেখতে হল পল্লবীকে।
হাসপাতালের বিছানায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় পল্লবী সর্বভারতীয় এক দৈনিককে বলেন, "১৯ এপ্রিল আমরা কাশ্মীরে আসি। কী সুন্দর জায়গা। চুটিয়ে উপভোগ করছিলাম। ছেলের খুব খিদে পেয়েছিল। আমার স্বামী টুকটাক খাবার আনতে গিয়েছিল। আচমকাই গুলির আওয়াজ।" প্রথমটায় বুঝে উঠতে পারেননি পল্লবী। তিনি বলেন, "ভেবেছিলাম কোথাও ড্রিল মেশিন চলছে। অথবা পুলিশ ফায়ার টেস্ট করছে। এরপরেই চোখ যায় অদূরে থাকা আমার স্বামীর দিকে। রাস্তায় পড়ে আছে। চারিদিক রক্তে ভেসে যাচ্ছে।"
কেঁদে ফেলেন পল্লবী। নারকীয় কাণ্ডের বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি আরও বলেন, "চারিদিকে শুধু পালাও পালাও আওয়াজ। বুঝতেই পারছিলাম না কী হচ্ছে। বন্দুকধারী একজনকে বললাম, স্বামীকে মেরেছেন, আমাকেও মারুন। ওদের মধ্যে একজন বলে উঠল, 'তোকে মারব না, মোদীকে গিয়ে বল'। ছেলে ও তিনি প্রাণ বেঁচে গেলেও ঘটনার কথা বলতে গিয়ে বারেবারে কেঁদে ফেলছেন পল্লবী। এমনটা যে হতে পারে তা যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না তাঁর।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। তিনি বলেন, “এই মর্মান্তিক ঘটনার শিকার হয়েছেন কর্নাটকের মানুষও। খবর পেয়েই আমি জরুরি বৈঠকে বসি এবং মুখ্যসচিব ও পুলিশের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করি।” মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দিল্লির রেসিডেন্ট কমিশনারের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে। কর্নাটক সরকার ইতিমধ্যে জম্মু ও কাশ্মীরে পাঠিয়েছে দু'টি বিশেষ দল—একটি উচ্চপদস্থ আমলাদের, অন্যটি পুলিশ আধিকারিকদের। পাশাপাশি কর্নাটকের ক্রীড়া দপ্তরের কমিশনার চেতন-এর নেতৃত্বে আর এক টিমও রওনা দিয়েছে।
জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবার সহযোগী 'দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট' (The resistance Front - TRF) হামলার দায় স্বীকার করেছে। তাদের দাবি, অ-স্থানীয়দের হাতে উপত্যকার ডোমিসাইল যাওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতেই তারা এই হামলা চালিয়েছে।