শেষ আপডেট: 9th July 2024 16:36
দ্য ওয়াল ব্যুরো: লোকসভায় শূন্য তাঁর দল। রাজ্যসভায় সদস্য একমাত্র তিনি। যে রাজ্যকে ভিত্তি করে দলের উত্থান, সেই উত্তর প্রদেশে বিধানসভায় দলের বিধায়ক মাত্র একজন। অথচ ওই রাজ্যেই তিনি তিন-তিনবার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
ওয়াকিবহাল মহল বলছে অন্তত সাড়ে তিন দশক দেশে দলিত রাজনীতির মুখ মায়াবতীর রাজনৈতিক জীবনে এত বড় সংকট আসেনি। সেই সংকট আরও বাড়িয়ে তুলেছেন ভীম পার্টির চন্দ্রশেখর আজাদ। গো-বলয়ে দলিত রাজনীতির এই নয়া মুখ বেশ কয়েক বছর যাবত রাতের ঘুম কেড়েছেন বহুজন সমাজ পার্টির সুপ্রিমোর।
৬৮ বছর বয়সি মায়াবতী নানা অসুখে ভুগছেন। মাঠে-ময়দানের রাজনীতিকে বলতে গেলে বিদায় দিয়েছেন বছর পাঁচ হল। তার উপর দুর্নীতির নানা অভিযোগের চাপ তো আছেই। ফলে দলীয় প্রধান হলেও মায়াবতীর বাড়ির বাইরে বের হন কদাচিৎ।
এহেন মায়াবতী দলকে অস্তিত্ব সংকট থেকে রক্ষা করতে অভিনব পদক্ষেপ করেছেন। বহুজন সমাজ পার্টির সদস্য পদ পেতে এককালীন দুশো টাকা চাঁদা দিতে হত। সদস্য পদ বাড়াতে সেই অঙ্ক কমিয়ে পঞ্চাশ টাকা করে দিয়েছেন তিনি।
দলের তরফে যদিও বলা হচ্ছে চলমান অর্থনৈতিক সংকটের কথা বিবেচনায় রেখে এই সিদ্ধান্ত। মানুষের হাতে নগদের অভাব। নানা কারণে আয় কমে গিয়েছে। দলের সব ইউনিটকে নেত্রীর নির্দেশ, নতুন সদস্য বাড়াও। বিশেষ করে দলিত, মুসলিম এবং অন্যান্য অনুন্নত শ্রেণির মধ্যে প্রভাব বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন মায়াবতী।
বস্তুত, দলের জাত সমীকরণেও বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে চলছেন দলিত নেত্রী। উত্তর প্রদেশের মতো জাত সংঘাতে দীর্ণ রাজ্যে ব্রাহ্মণ, দলিত অর্থাৎ তফসিলি এবং ওবিসি বা অন্যান্য অনুন্নত শ্রেণির মেলবন্ধন ঘটিয়ে গোটা দেশকে চমকে দিয়েছিলেন মায়াবতী। সেটা অবশ্য ২০০৭ -এর কথা। তখন থেকে টানা পাঁচ বছর উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। দলের সাধারণ সম্পাদক করেছিলেন ব্রাহ্মণ সতীশ শর্মাকে।
২০১২-র পর গঙ্গা-যমুনা-গোমতী দিয়ে অনেক জল গড়িয়ে গিয়েছে। প্রথমে বিজেপি, পরে সমাজবাদী পার্টি ও কংগ্রেস তাঁর দলিত ভোটে বড় থাবা বসিয়েছে। অন্যদিকে, ২০১২-তে ক্ষমতা হারানোর পরই দলিত নেত্রীর সঙ্গ ত্যাগ করে ব্রাহ্মণেরা। ঘুরে দাঁড়াতে এবার দলিত, ওবিসি এবং মুসলিদের নিয়ে নয়া ভোট ব্যাঙ্ক গড়তে চাইছেন তিনি।
এবার লোকসভা ভোটে অখিলেশ যাদবের পিডিএম বাজিমাত করেছে। পিছড়া, দলিত ও অল্পসংখ্যক বা মুসলিম ভোট একত্রিত করার পরিকল্পনা নেন অখিলেশ।
পাল্টা মায়াবতী গড়ছেন পিডিএম-পিছড়া, দলিত ও মুসলিম। বিগত কয়েকটি নির্বাচনের ফলে স্পষ্ট, মুসলিমরা বহুজন সমাজ পার্টি থেকে পুরোপুরি মুখ ফিরিয়েছে। এবার লোকসভা ভোটে উত্তর প্রদেশে ৩৫ জন মুসলিমকে প্রার্থী করেছিল বিএসপি। সকলেই তৃতীয় স্থান পেয়েছে। তাই মুসলিম মনে নতুন করে জায়গা পেতে চাইছেন দলিত নেত্রী।